কাশ্মীরের পহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার পরে ভারত-পাকিস্তন সম্পর্কে যেসব অস্থিরতা তৈরি হয়েছে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বাণিজ্য।
এ হামলায় ইসলামাবাদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনে নয়া দিল্লি সিন্ধু পানিবন্টন চুক্তি স্থগিতসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়ার পর গত বৃহস্পতিবার পাল্টা ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ও দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্থগিত করা হয়।
এছাড়াও ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ। খবর দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন
রোববার (২৭ এপ্রিল) দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনে এক প্রতিবেদনে পাকিস্তান বিজনেস ফোরাম (পিবিএফ) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার কারণে ভারত বছরে প্রায় ১.১৪ বিলিয়ন ডলার বাণিজ্য ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
পিবিএফের প্রতিবেদনের অনুযায়ী, ভারত ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য পাকিস্তানে রপ্তানি করেছিল, এসময় পাকিস্তান থেকে ভারতের আমদানি ছিল মাত্র ৪.২ মিলিয়ন ডলার।
এছাড়াও, ফোরাম উল্লেখ করেছে, পাকিস্তানের মাধ্যমে আফগানিস্তানে যাওয়া ভারতীয় পণ্যের পরিমাণ প্রায় ৬৪০ মিলিয়ন ডলার, যা এই নিষেধাজ্ঞার ফলে বিঘ্নিত হবে এবং ভারতের বাণিজ্য ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দেবে।
পিবিএফ সভাপতি খাওয়া মেহবুব উর রহমান বলেন, ‘পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে ভারতীয় অগ্রহণযোগ্য প্ররোচনার বিরুদ্ধে দেশের একক ফ্রন্ট গঠন করা উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারত প্রতি কয়েক বছর পর পাকিস্তানকে দোষারোপের পুরনো অভ্যাস ছেড়ে দিতে পারবে না, আর এ ধরনের আচরণ আমাদের ধৈর্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে।’
ফোরামের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আমনা মুনাওয়ার আয়ান ভারতের পাহালগাম হামলার পর অভিযোগগুলোকে ‘অবিচারী মিথ্যা’ বলে অভিহিত করেছেন এবং ভারতের কাশ্মীর নীতির প্রতি তীব্র বিরোধিতা করেছেন।
পিবিএফের চিফ অর্গানাইজার আহমদ জাওয়াদ ভারত কর্তৃক সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ ও দক্ষিণ এশিয়ার শান্তির জন্য ক্ষতিকর’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সমতার ভিত্তিতে সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ভারত-পাকিস্তান বাণিজ্য বন্ধ রাখা উচিত।’
ফোরাম পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দেশের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে এবং ভারতকে তার আগ্রাসী আচরণ বন্ধ করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করেছে।