পিকেএসএফ আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তাদের অভিমত
অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হতে পারে ক্ষুদ্র উদ্যোগের বিকাশ
প্রকাশ | ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৮:৩৮

বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হতে পারে ক্ষুদ্র উদ্যোগের বিকাশ। ক্ষুদ্রঋণ উদ্যোগ উন্নয়নের অন্যতম অনুষঙ্গ হলেও ক্ষুদ্র উদ্যোগ ও ক্ষুদ্রঋণ এক কথা নয়। ক্ষুদ্র উদ্যোগ উন্নয়নের জন্য লক্ষিত মানুষের ভাবনা ও চেতনার বিকাশ ঘটাতে হবে, সুযোগের বৈষম্য দূর করতে হবে এবং উদ্যোগ উন্নয়নে সমাজের প্রান্তিক জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
আজ রাজধানীর পিকেএসএফ ভবনে আয়োজিত ‘Small Ventures, Big Future: Microenterprise as Engine of Inclusive Growth in Bangladesh’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এ অভিমত ব্যক্ত করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির সাবেক পরিচালক ড. সেলিম জাহান।
তিনি বলেন, “মানুষকে স্বপ্ন দেখাতে হবে; স্বপ্নকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সাহস জোগাতে হবে; স্বপ্নপূরণে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করতে হবে। তবেই, দেশে উদ্যোগ উন্নয়ন কার্যক্রম বেগবান হবে, অর্থনীতি আরো শক্তিশালী হবে”।
অবকাঠামোগত অগ্রগতিকে উন্নয়নের সমার্থক হিসেবে বিবেচনা করার প্রবণতা সঠিক নয় মন্তব্য করে ড. সেলিম জাহান বলেন, “স্কুলে ভর্তির হার বৃদ্ধি বা নতুন অবকাঠামো নির্মাণ হলো অগ্রগতি। কিন্তু উন্নয়ন হলো শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি এবং পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর শিশুদের মানসম্পন্ন শিক্ষার সুযোগ লাভ। কাজেই, অগ্রগতিকে উন্নয়নের সাথে গুলিয়ে ফেলা ঠিক নয়”।
তিনি আরো বলেন, সহিংসতা, সন্ত্রাসকে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করে এবং প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও সম্পদ বরাদ্দের মাধ্যমে দেশে উদ্যোগ উন্নয়নের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। “এ বিষয়ে সরকারকে ইতিবাচকভাবে তৎপর রাখতে আমাদের সবাইকে উচ্চকণ্ঠ হতে হবে”।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে পিকেএসএফ চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান বলেন, পিকেএসএফ বর্তমানে দক্ষতা উন্নয়নের জন্য বিবিধ প্রকল্প ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক কর্তৃক সৌদি আরবে আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে পিকেএসএফ-এর একটি প্রকল্পের সাফল্য বিশেষভাবে প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া, জাতিসংঘের কৃষি উন্নয়ন তহবিল ইফাদ-অর্থায়িত পৃথিবীর প্রায় ৭০০ প্রকল্পের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে পিকেএসএফ-এর আরেকটি প্রকল্প। এগুলো বিশ্বমঞ্চে দেশের সম্মান বৃদ্ধি করেছে।
স্বাগত বক্তব্যে পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ফজলুল কাদের বলেন, দেশের প্রায় ৪০ লক্ষ ক্ষুদ্র উদ্যোগে অর্থায়ন করছে পিকেএসএফ। বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় অতিরিক্ত অর্থায়ন, কারিগরি সহায়তা ও প্রযুক্তি স্থানান্তরের মাধ্যমে ভ্যালু চেইন উন্নয়ন, মূল্য সংযোজিত সনদায়িত পণ্য উৎপাদন ও বিপণনে বিস্তৃত সেবা প্রদান করা হচ্ছে। “দেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম করে তোলার জন্য ক্ষুদ্র উদ্যোগসমূহের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পিকেএসএফ এর উদ্যোগ উন্নয়ন কার্যক্রম সম্প্রসারণের প্রস্তুতি নিচ্ছে”।
এ অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন আইএনএম-এর নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তফা কে. মুজেরী, বিআইডিএস-এর গবেষণা পরিচালক ড. কাজী ইকবাল, এবং এমআরএ’র নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ ইয়াকুব হোসেন। এতে পিকেএসএফ-এর সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।