বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২

সবজির দাম চড়া, স্থিতিশীল মাছ-মাংস

চট্টগ্রাম ব্যুরো
  ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৭:০৭
সবজির দাম চড়া, স্থিতিশীল মাছ-মাংস
ছবি: যায়যায়দিন

সরবরাহ সংকটের অজুহাতে বাড়ছে সবজির বাজার। ঈদের পর থেকে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে ৬০ টাকা কেজির নিচে গ্রীষ্মকালীন সবজি মিলছে না। সবজির দাম বাড়লেও কমেছে মাংসের দাম। তবে স্থিতিশীল রয়েছে মাছের দাম। সবজি ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের পর থেকে উত্তরাঞ্চলীয় জেলাগুলো থেকে সবজির সরবরাহ কমে গেছে। তাই দাম চড়া। সরবরাহ স্বাভাবিক হলে দাম কমে যাবে।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজার, চকবাজার, কর্ণফুলী কমপ্লেক্স, কাজীর দেউড়ি, অক্সিজেন, আতুরার ডিপো, বহদ্দারহাটসহ বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

বাজারে প্রতিকেজি বেগুন, তিতা করলা, পটল, ঢেঁড়স, চিচিঙ্গা, কচুর লতি ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ধুন্দল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। ঝিঙ্গা ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শসা, পেঁপে, চালকুমড়া ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁকরোলের দাম একেক বাজারে একেকরকম দেখা গেছে। কাজীর দেউড়ি বাজারে প্রতিকেজি কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। রিয়াজউদ্দিন বাজারে খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা। আবার রিয়াজউদ্দিন বাজারে পাইকারি আড়তে সেই কাঁকরোল ৯০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। আলু প্রতিকেজি ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাউ ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ২৫ টাকা, টমেটো ২৫ টাকা ও কাঁচাকলা জোড়া ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গাজর ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শীতকালীন ফুলকপি-বাঁধাকপি কেজি ২০ টাকা, মূলা ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে শাকের মধ্যে পুঁইশাক প্রতি আঁটি ৪৫ টাকা, লাউশাক, কলমিসহ বিভিন্ন ধরনের শাক ২৫ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লেবু আকারভেদে ১২০ থেকে ২২০ টাকা ও ধনেপাতা ১২০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছের মধ্যে আকার ও ওজন অনুযায়ী ইলিশ মাছ ১ হাজার থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা, রুই মাছ ৩৬০ থেকে ৫৫০ টাকা, কাতল মাছ ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, বেলে ৫০০ থেকে ১ হাজার ৩০০, কালিবাউশ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, কাঁচকি ৬০০ টাকা, কৈ ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, শিং মাছ ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, টেংরা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা, শোল মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, চিতল ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা, সরপুঁটি ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, রূপচাঁদা ৫৫০ থেকে ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাংস ও ডিমের দাম স্থিতিশীল আছে। ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ থেকে ১৮৫ টাকায়। গত সপ্তাহে দাম ছিল ১৮০ থেকে ১৯৫ টাকা। কক মুরগি ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩১০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি ৫৬০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯৫০ টাকা, খাসির মাংস বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে। ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন লাল ডিম ১১৫ থেকে ১৩০ টাকা, সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

চালের বাজারে ২৫ কেজির বস্তা নাজিরশাইল সিদ্ধ (মজুমদার ব্র্যান্ড) ২২০০ টাকা, ভারতীয় নাজিরশাইল (হোয়াইট গোল্ড) ২০৫০ টাকা, জিরাশাইল সিদ্ধ ৫০ কেজির বস্তা ৪২০০ থেকে ৪২৫০ টাকা, ২৫ কেজির বস্তা কাটারিভোগ আতপ ২১৫০ থেকে ২৩০০ টাকা এবং সাধারণ মানের পাইজাম আতপ ১৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর কাটারিভোগ সিদ্ধ ২৫ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ টাকায়।

এ ছাড়া, ছোট মসুর ডাল ১৩৫ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেসারি ডাল ১১০ টাকা, বুটের ডাল ১২০ টাকা, মাষকলাইয়ের ডাল ১৯০ টাকা, ডাবলি ৬০ টাকা, ছোলা ১২০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১২৫ টাকা, খোলা চিনি ১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

লিটারে ১৪ টাকা বাড়িয়ে সরকার নির্ধারিত দরে এক লিটারের এক বোতল সয়াবিন তেল ১৮৯ টাকা, বোতলের পাঁচ লিটার ৯২২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া, লিটারে ১২ টাকা বেড়ে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ও খোলা পাম তেল ১৬৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরিষার তেল খোলা বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ১৯০ টাকায়। বোতলের সরিষার তেল তেলের কেজি ৩৬০ টাকা।

নগরের চকবাজারে বাজার করতে আসা এক ক্রেতা বলেন, ঈদের পর থেকে প্রতিদিনই সবজির দাম বাড়ছে। এখানে ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। এত দাম দিয়ে সবজি কেনা আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জন্য কঠিন।

কাজীর দেউড়ি কাঁচা বাজারে সবজি বিক্রেতা আজম বলেন, উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় সবজির উৎপাদন কমতে শুরু করেছে। এছাড়া গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ এখনও পুরোদমে শুরু হয়নি। আগামী সপ্তাহে সরবরাহ বাড়তে পারে। তখন আশা করি দাম কমে যাবে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে