বাকি ৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যাংকে : হাসনাত আব্দুল্লাহ

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪৭

যাযাদি ডেস্ক
ফাইল ছবি

বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ সহায়তার অর্থ খরচের বিষয়ে নতুন পোস্ট করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ সংক্রান্ত নতুন পোস্ট করেন তিনি।

ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, গত ৪ সেপ্টেম্বরের প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে আমাদের টিএসসির ত্রাণ কর্মসূচির আয় ও ব্যয়ের হিসাব জানানো হয়েছিল। ব্যয় বাদে বাকি টাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনতা ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক শাখা, ইসলামী ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সংরক্ষিত রয়েছে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক, একজন নারী শিক্ষার্থী ও একজন ছাত্রের নামে বিশেষভাবে একাউন্ট খোলা হয়েছে, যেখানে শুধু এই তিনজনের সম্মিলিত সিগনেচারের মাধ্যমে টাকা হস্তান্তর করা সম্ভব। এখন পর্যন্ত ওই একাউন্ট থেকে কোনো টাকা হস্তান্তর করা হয়নি।

তিনি বলেন, স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে আমরা ত্রাণ কার্যক্রমের আয় ও ব্যয়ের ওপর একটি অডিট করছি এবং আগামী কয়েকদিনের মধ্যে অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে, ইনশাআল্লাহ। আমরা সবসময় গঠনমূলক সমালোচনা গ্রহণে আগ্রহী।

তিনি আরও বলেন, কোনো বিশেষ ভুলবুঝাবুঝি থাকলে অনুগ্রহ করে তা নির্দিষ্টভাবে তুলে ধরুন, যাতে আমাদের কাজ আরও কার্যকরী হতে পারে। আগামীর বাংলাদেশ হোক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মডেল।

এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গত ৪ সেপ্টেম্বর জানানো হয়, বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ, রান্না করা খাবার, ওষুধ ও মেডিকেল সেবাসহ বিভিন্ন সহযোগিতার জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগ্রহকৃত অর্থের পরিমাণ ১১ কোটি ১০ লাখ ১৩ হাজার ৫৬৯ টাকা। 

এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৭৫ লাখ ১২ হাজার ৭৯৪ টাকা। অবশিষ্ট রয়েছে ৯ কোটি ৩৫ লাখ ৭৭৫ টাকা। 

এ ছাড়া প্ল্যাটফর্মটি বন্যাদুর্গত এলাকায় গত ২২ আগস্ট থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১৯১ ট্রাক ত্রাণ পাঠিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২২ আগস্ট থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, ডাকসু এবং সেন্ট্রাল ফিল্ডে গণত্রাণ কার্যক্রম শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে সংগৃহীত অর্থ দিয়ে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় শুকনো খাবারের বদলে ভারী খাবারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৮ আগস্ট থেকে গণরান্না কর্মসূচি শুরু হয়, যার মাধ্যমে আশ্রয়কেন্দ্র ও দুর্গম অঞ্চলে চাল-ডালের প্যাকেজ পাঠানো হয়। বৃহৎ কর্মযজ্ঞে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০-এর অধিক স্বেচ্ছাসেবী দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। গত ২২ আগস্ট থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১৯১ ট্রাক ত্রাণ বন্যাকবলিত অঞ্চলগুলোতে পাঠানো হয়। বেসরকারি এবং বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারের মাধ্যমেও দুর্গম অঞ্চলগুলোতে ত্রাণ সহায়তা পাঠানো হয়।

ব্যয়ের ব্যাপারে বলা হয়, গত ২২ আগস্ট থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গণত্রাণ এবং গণরান্না কর্মসূচি বাবদ খরচ ১ কোটি ৭৫ লাখ ১২ হাজার ৭৯৪ টাকা। অবশিষ্ট অর্থের বিষয়ে জানানো হয়, ফান্ডে বর্তমানে রয়েছে ৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। এই টাকা সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষক দ্বারা পরিচালিত জনতা এবং সোনালী ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে জমা রয়েছে। এই অর্থ আগামীতে বন্যা-পরবর্তী পুনর্বাসনে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই অর্থ কীভাবে এবং কাদের মাধ্যমে ব্যবহৃত হলে সর্বোচ্চ মানুষের উপকার হবে, সেই বিষয়ে স্থানীয় এবং বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার পরামর্শ আহ্বান করা হয়েছে। তাদের মতামতের ভিত্তিতেই এই অর্থগুলো ব্যবহার করা হবে।

যাযাদি/ এস