হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকার স্বর্ণসহ একজনকে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার (১৭ মে) সকালে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়।
কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শারজাহ থেকে ঢাকায় আগত এক যাত্রী স্বর্ণ চোরাচালানের কাজে সম্পৃক্ত থাকতে পারেন মর্মে গোপন সংবাদ আসে। বিমানটি অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে বোর্ডিং গেইট, ট্রানজিট পয়েন্ট, গ্রীন চ্যানেলসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
এ বিষয়ে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেলের সহকারী পরিচালক (চ. দা.) প্রদীপ কুমার সরকার জানান, স্বর্ণসহ এক যাত্রী আসার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে বোর্ডিং গেইট, ট্রানজিট পয়েন্ট, গ্রিন চ্যানেলসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সতর্কতামূলক অবস্থান নেওয়া হয়।
তিনি বলেন, যাত্রী মোহাম্মদ শহীদ মিয়া ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে সকাল সাড়ে ৯টায় গ্রিন চ্যানেলের স্ক্যানিং মেশিন অতিক্রম করার পর তাকে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর টিমের সদস্যরা চিহ্নিত করেন এবং তার কাছে স্বর্ণালংকার বা স্বর্ণজাতীয় কোনো কিছু আছে কি না জানতে চান। তখন তিনি তার কাছে ১০০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালঙ্কার থাকার কথা স্বীকার করেন।
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তার কাছে ৩০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়। আর কোনো স্বর্ণ থাকার কথা অস্বীকার করায় তাকে আর্চওয়ে করানো হয় এবং যাত্রীর পরনে অত্যাধিক পরিমাণ জামাকাপড়ের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
জামাকাপড়ের ওজন অস্বাভাবিক হওয়ায় সেগুলো খুলে মেশিনে স্ক্যান করা হয় এবং জামাকাপড়ের মধ্যে বিশেষভাবে লুকায়িত স্বর্ণের ইমেজের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। পরবর্তীতে তাকে কাস্টমস হলে নিয়ে আসা হয়।
স্বর্ণের পরিমাণ নির্ণয় করতে যাত্রীর শরীরের ১৬ পিস কাপড় (যার মধ্যে শর্ট প্যান্ট ৯টি, স্যান্ডো গেঞ্জি ৬টি ও ফুল প্যান্ট ১টি) স্থানীয় স্বর্ণকার কর্তৃক যাত্রী ও বিমানবন্দরে দায়িত্বরত বিভিন্ন সংস্থার উপস্থিতিতে বিমানবন্দরের ক্যানোপি-১ এ নিয়ে পরানো হয়। পরানোর পরে অপরিশোধিত ৪ হাজার ৪৬২ গ্রাম পরিমাণ স্বর্ণ নির্ণয় করা হয়।
প্রাপ্ত মোট স্বর্ণের পরিমাণ ৪ হাজার ৪৯২ গ্রাম (৪৪৬২ গ্রাম অপরিশোধিত স্বর্ণ ও ৩০ গ্রাম অলংকারসহ)। জব্দকৃত স্বর্ণের আনুমানিক বাজার মূল্য ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। স্বর্ণগুলো কাস্টম হাউস, ঢাকার মূল্যবান শুল্ক গুদামে জমা প্রদানের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। দি কাস্টমস অ্যাক্ট ১৯৬৯ এর ধারা ২ (এস) অনুযায়ী এ চোরাচালান অপরাধ সংঘটিত হওয়ায় উক্ত আইনের ১৬৮ ধারা মোতাবেক কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এর সহকারী রাজ্যস্স কর্মকর্তা বনলতা রায় বাদী হয়ে শুক্রবার বিমানবন্দর থানায় ওই যাত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করে আসামিকে হস্তান্তর করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার এসআই মোশাররফ হোসেন যায়যায়দিনকে জানিয়েছেন , আজ শনিবার ঢাকার বিচারিক আদালতে তাকে হস্তান্তর করে রিমান্ডের আবেদন করবেন । আসামির বিরুদ্ধে আনীত মামলার নাম্বার হলো ২২-১৭/০৫/২০২৪ ইং ।
যাযাদি/ এসএম