আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনে অগ্নি ঝুঁকি দেশের জন্য অন্যতম মাথা ব্যাথার কারন হয়ে দাঁড়াতে পারে। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবনে অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিতের কোন বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মহিবুর রহমান।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবের স্যামসন হলে ইলেকট্রনিক্স সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইসাব) কর্তৃক আয়োজিত অগ্নিঝুঁকি ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফায়ার সেফটি নিশ্চিতে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। ভবন নির্মাণের সময় অবশ্যই বিল্ডিং কোড মানতে হবে। সরকারের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের এই বিষয়ে সচেতন হওয়ার জরুরী। খুব শীঘ্রই দূর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টদের নিয়ে আলোচনায় বসবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেক এগিয়েছে। ৮০ ডলার থেকে বর্তমানে আমরা ৪৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছি। এখন সময় এসেছে ফায়ার সেফটি খাতে আমাদের সক্ষমতা অর্জন করা জরুরি। আমাদের এখন নিয়মের মধ্যে আসতে হবে। টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বাণিজ্যিক ভবনে অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অতি প্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ফায়ার সার্ভিসের অপারেশনস ও মেইনটেইনেন্স বিভাগের পরিচালক লে: কর্ণেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, এস জি পি, পি এস সি। তিনি বলেন, উন্নত দেশে পরিণত হতে গেলে সকল নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবনে অগ্নি-নিরাপত্তা নিশ্চিতে নির্মাণ ব্যয়ের ২ শতাংশ এ খাতে খরচ করতেও অনেকে কার্পণ্য করেন। এই অবস্থা থেকে আমাদের বের হতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসাবের সভাপতি ও এফবিসিসিআই’র পরিচালক মো. নিয়াজ আলী চিশতি। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন গুলোতে অত্যাধুনিক অগ্নি সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহারে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার কোন বিকল্প নেই। ৯৫ শতাংশ অগ্নিকাণ্ডের জন্য মানুষ দায়ী। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় এলপিজি গ্যাসের দায় ৮০ শতাংশ বলে মন্তব্য করেন তিনি। ইতোমধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জনসচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে ব্যানার পোস্টার টানানো হয়েছে বলেও মন্তব্য করেম তিনি। এফবিসিসিআই'র নেতৃত্বে জাতীয় টাস্কফর্স গঠনের দাবি জানান তিনি।
ইসাবের মহাসচিব জাকির উদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ফায়ার সার্ভিসের সাবেক ডিজি আলী আহমেদ কায়সার, এফবিসিসিআই এর সহ-সভাপতি রাশেদুল হোসেন চৌধুরী (রনি), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীন ড. জিল্লুর রহমান, বুয়েটের অধ্যাপক ড. ইশতিয়াক আহমেদ, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইসাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম শাহজাহান সাজু, সহ-সভাপতি মোঃ মতিন খান, মোহাম্মদ ফয়সাল মাহমুদ, ইঞ্জি. মোঃ মনজুর আলম, এম মাহমুদুর রশিদ, যুগ্ম মহাসচিব মো. মাহমুদ-ই-খোদা, এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ইঞ্জি মোঃ মাহাবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ মোঃ নূর-নবী, প্রচার সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম, ইসাবের পরিচালক মো. ওয়াহিদ উদ্দিন, ইঞ্জি. মো. আল-ইমরান হোসেন, মেজর মোহাম্মদ আশিক কামাল, মো. রফিকুল ইসলাম, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ প্রমুখ। আলোচনা সভা শেষে ঢাকা ক্লাবের স্যামসন হলে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
যাযাদি/ এসএম