পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার শিক্ষার্থীদের রঙ তুলির শৈল্পিক ছোঁয়ায় উপজেলা চত্তরের বিভিন্ন অফিসের নিথর দেয়াল হয়ে গেলো সময়ের প্রতিচ্ছবি। পেশাদার শিল্পী না হলেও শিক্ষার্থীদের নরম কোমল হাতের ছোঁয়ায় সৌন্দর্যের মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে দেয়ালে।এ যেন এক ভিন্ন রূপের রং তুলি দিয়ে আঁকা এক একটি বাউন্ডারী দেয়াল। দেয়াল জুড়ে শিক্ষার্থীদের রংতুলিতে প্রকাশিত হচ্ছে পনের বছরের না বলতে পারা অনেককথাগুলো।

শিক্ষার্থীদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের টাকায় রং কিনে ২০২৪ এর নতুন স্বাধীনতার দিনে দেয়ালে দেয়ালে ফুটিয়ে তুলেছেন রাষ্ট্র ও সমাজ সংস্কারের নানা চিত্র। উপজেলার কয়েকটি কলেজ ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রঙ তুলির শৈল্পিক ছোঁয়ায় যেন বদলে গেছে গোটা উপজেলার বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী স্থাপনার দেয়ালে। পরিস্কার-পরিছন্নতার অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা রঙ-তুলির আচঁড়ে দেয়াল সাজাতে শুরু করেন।

সেখানে কালো,সাদা,লাল,নীল,হলুদ-এ যেন রঙের এক মেলা।সেখানে দেখা যায়, কেউ রঙ লাগাচ্ছে,কেউ পানি ছিটাচ্ছে। সকলের মুখেই যেন এক অনাবিল আনন্দ শোভা পাচ্ছে।

এ সব দেওয়ালে লেখা ঘুষ চাইলে ঘুষি, আমার সোনার বাংলায় বৈষ্যম্যের ঠাই নাই, মোরা আকাশের মত বাধাহীন, আমাদের মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে লাভ কি?, ২০২৪’র গন-অভ্যুথান, স্বাধীন হয়েছি আমরা সময় এখন সভ্য হওয়ার, স্বাধীনতা লাগবে স্বাধীনতা, পানি লাগবে পানি, ৩৬ শে জুলাই - এ ধরনের বিভিন্ন স্লোগানে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মহিলা মহাবিদ্যালয়,শহিদজিয়া মহাবিদ্যালয়, এছাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা রং তুলিতে গেয়েছেন সাম্যের গান, তুলে ধরেছেন বৈষম্যের বিরুদ্ধে মানুষের অধিকারের কথা।

দরজায় টোকা পড়লেই মনে হয়, প্রতীক্ষায় দিন কাটে...

এভাবেই সমাজ সংস্কার ও অনিয়ম দূর্নীতি এবং বৈষম্য বিরোধী নানা চিত্র দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে উপজেলার বেশীর ভাগ সরকারী অফিসের দেয়াল। ব্যাপক উৎসাহ আর উদ্দীপনা নিয়ে শিক্ষার্থীরা দলে দলে বিভক্ত হয়ে দৃষ্টিনন্দন এই কাজগুলো করছেন। তাদের রঙ তুলির ছোঁয়ায় লেখা সমাজ সংস্কারের ভিন্ন ভিন্ন স্লোগান এবং দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্যের নানা চিত্র মুগ্ধ করছে উপজেলার নানা শ্রেণি পেশার মানুষকে।

দেয়াল অঙ্কনের প্রধান ভুমিকায় ছিলেন মহাফুজুর রহমান,রেদোয়ান রেজা,তোহা তালুকদার,মদিনা সুলতানা স্বর্ণা, আসাদ শেখ, অহিদুল ইসলাম,রাফিউল ইসলাম নাফিস, সজীব সিকদার, মমতা জাহান মিমি, রায়দা খান, নাঈম হাসান, আব্দুল্লাহ, হোসাইন আহমেদ, আরমান মল্লিক মোনান, নাঈম মোল্লার সাথে কথা হয়। এ সময়ে শিক্ষার্থীরা বলেন আমরা অনিয়ম, দূর্নীতি ও বৈষম্যহীন একটি রাষ্ট্র ও সমাজ চাই। আমরা নতুন ভাবে নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই।

যে বাংলাদেশে কথা বলার অধিকার থাকবে। কোন বৈষম্য থাকবে না। অধিকারের কথা বলতে গিয়ে আর কোন আবু সাঈদ, মুগ্ধ এর মতো ভাইকে প্রাণ দিতে হবে না। আমাদের এই কথা গুলো আমরা দেয়াল লিখনের মাধ্যমে রাষ্ট্র এবং সমাজের সকলের কাছে পৌঁছে দিতে এমন উদ্যোগ নিয়েছি। এ বিষয়ে শহিদ জিয়া মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম বলেন, পেশাদার শিল্পী না হলেও শিক্ষার্থীদের নরম কোমল হাতের ছোঁয়ায় সৌন্দর্যের মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে দেয়ালে দেয়ালে।

তিনি আরো বলেন, নাজিরপুর উপজেলার বেশীর ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আলপনায়, দেয়ালে দেয়ালে নানা রঙের আলপনা আর দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিতে দেখা দিয়েছে নতুনত্বের ছোযা। ওরাই দেশের বীর,।

যাযাদি/ এস