যশোরের মণিরামপুরে দিগন্তের মাঠ জুড়ে সোনালী বর্ণের বোরো ধানের এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এমনকি বোরো ধানের মৌ মৌ গন্ধে কৃষাণ-কৃষাণীর মন মাতিয়ে তুলছে। ধাণ পেকে যখন বিস্তীর্ণ মাঠ সোনালী রুপ ধারণ করেছে ঠিক তখনই প্রাকৃতিক দূর্যোগ কালবৈশাখী ঝড় নিয়ে চাষির মাঝে আতংক বিরাজ করছে । সবার আশা সুষ্ঠু ভাবে ঘরে ধাণ তুলবেন এমনটি।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্র জানায়, চলতি বছর উপজেলাতে ২৬ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে এ বছর বোরো আবাদা করা হয়েছে। যদিও গতবারের থেকে এ বছর প্রায় দুইশ হেক্টর জমিতে চাষ করতে পারেননি কৃষকরা। উপজেলাতে সব থেকে বেশি চাষ করা হয়েছে রড মিনিকেট।
সুত্র জানায়, ১২ হাজার ৩৫১ হেক্টর জমিতে শুধুই রড মিনিকেট ধাণের চাষ করা হয়েছে। যার ফলনও হয়েছে আশানুরুপ। এরপর মিনিকেট ২ হাজার ৫২৯, আটাশ ১ হাজার ৮৮২, টিএসএম-৮ জাতের ধাণ করা হয়েছে ১ হাজার ৮২৮ হেক্টর জমিতে। তবে উপজেলা ব্যাপী বোরো চাষের ব্যাপকতা থাকলেও শীর্ষে রয়েছে খেদাপাড়া ইউনিয়ন।
সূত্র জানায়, উপজেলার রোহিতা- ১হাজার ৯০৪, কাশিমনগর- ৯৯৮, ভোজগাতি- ৭২৯, ঢাকুরিয়া- ১ হাজার ৮১০, হরিদাসকাটি- ১ হাজার ৭৬০, মণিরামপুর- ৬৯৬, পৌরসভা- ১০৩৯, খেদাপাড়া- ২ হাজার ৪৫০, হরিহরনগর- ১ হাজার ৬৯৫, ঝাপা- ২ হাজার ৩২৪, মশ্বিমনগর- ১ হাজার ৬৫৫, চালুয়াহাটী- ১ হাজার ৭৬৮, শ্যামকুড়- ১ হাজার ৮৭৯, খানপুর- ১ হাজার ৮৯০, দূর্বাডাঙ্গা- ১ হাজার ৪১০, কুলটিয়া- ১ হাজার ২৪৬, নেহালপুর- ৬৩০ এবং মনোহরপুর ইউনিয়নে ১ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে এ বছর বোরো আবাদ করা হয়েছে।
খেদাপাড়া গ্রামের বোরো চাষী মোজাহার সরদার, খড়িঞ্চি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক, হেলাঞ্চী গ্রামের আব্দুল আলিম জিন্নাহ, আম্রঝুটা গ্রামের মিজানুর রহমান জানিয়েছেন অতীতের চাইতে চলতি বছর বোরো চাষ ফলনে ভাল হয়েছে। কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন, দীর্ঘদিন জলাবদ্ধতা থাকার কারণে মাটির পলি জমার কারণেই এ বছর বোরো ফসল অতীতে যেকোন সময়ের চাইতে ফলনে ভালো হয়েছে।
উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মোজাফফর হোসেন ও বিল্লাল হোসেন একই কথা জানিয়ে বলেন, উপজেলার অধিকাংশ মাঠ গুলোতে ধান কাটা শুরু হয়েছে। আকাশের অবস্থা মাঝে মধ্যে মেঘাচ্ছন্ন থাকায় চিন্তিত কৃষকরা। ফলন এবং দাম উভয় ভাল এ কারণে কৃষকরা এবারের বোরো ফসলে খুশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার জানান, এ বছর উপজেলার সব ইউনিয়নে বোরো ধাণের ভালো ফলন হয়েছে। তবে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকার কারণে চাষীরা আতংকিত হয়ে পড়েছেন। প্রাকৃতিক কোন দূর্যোগ না হলে কৃষকের মুখেও হাসি দেখা যাবে।