পাহাড়ে 'অটো শিম' চাষে সফল মানিকছড়ির বেলাল

প্রকাশ | ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৫৯

মো. রবিউল হোসেন, মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি
ছবি : যায়যায়দিন

পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার গচ্ছাবিল পিচলাতলা এলাকায় পাহাড়ের ঢালে লিজ নেয়া ৮০ শতাংশ জমিতে 'অটো শিম' বা মৌসম ছাড়া শিম চাষ করছেন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা মো. বেলাল হোসেন। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। ৮০ শতাংশ জমিতে ৮০-৮৫ হাজার টাকা খরচের বিপরীতে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার শিম বিক্রির আশা করছেন এই তরুন শিমচাষি।

বেলাল হোসেন উপজেলা সদর ইউনিয়নের গচ্ছাবিল জামতলা এলাকার বাসিন্দা মো. ইসমাইল হোসেনের ছেলে। তিনি সারাবছরই শিম চাষের পাশাপাশি মৌসুমভেদে বিভিন্ন কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। চলতি মৌসুমে ভালো ফলন এসেছে তার শিমের মাঁচায়। শীতের আগে বেশ চাহিদা থাকায় চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে এই সবজি।

শিমচাষি বেলাল হোসেন বলেন, ‘আমি প্রতি বছরই গ্রীষ্ম এবং শীত মৌসুমে আগাম শিম চাষ করি। নিজের উপযুক্ত জমি না থাকায় লিজ নিতে হচ্ছে। এবছর বর্ষার মাঝামাঝিতে ৮০ শতাংশ টিলা ভূমিতে বারোমাসি 'অটো শিম' চাষ করেছি। সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৮০-৮৫ হাজার টাকা। গেলো বছরের চেয়েও এবছর ফলন খুবই ভালো হয়েছে। বাজারে শিমের চাহিদাও বেশি। প্রতি কেজি শিম পাইকারি মূল্যে ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ইতিমধ্যে কয়েক দফায় প্রায় দেড় লাখ টাকার শিম বিক্রি করেছি, আরও এক লাখ টাকার শিম বিক্রির আশা করছি। এবছর সব ধরনের খরচ বাদ দিয়ে দেড় লাখ টাকার উপরে লাভ থাকবে।'

তিনি আরও বলেন, ‘এ বছর বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় অনেক ফুল ঝরে গেছে। তা-না হলে ফলন আরও ভালো হতো। প্রতি সপ্তাহে শিম সংগ্রহ করা হয়। শিম তুলে বস্তা ভরে রাখলে পাইকাররা এসে কিনে নেন। কৃষিকাজ, ফসল সংগ্রহ ও বস্তায় ভরে রাখতে পুরুষের পাশাপাশি সহায়তার হাত বাড়াচ্ছেন নারীরাও।’

স্থানীয় প্রবীণ কৃষক রুহুল আমিন বলেন, 'বেলাল বেশ কয়েক বছর ধরে পাহাড়ের ঢালে বিভিন্ন জাতের শিম চাষ করে আসছে। ফলও বেশ ভালো হয়। তার থেকে পরামর্শ নিয়ে আমিও ২০ শতাংশ জমিতে শিম চাষ করেছি।'

এছাড়াও বেলাল হোসেনের দেখাদেখি স্থানীয় কৃষক আব্দুর রহিম মন্ডল, মনির হোসেন ও কামরুল ইসলামসহ আরো অনেকেই শিম চাষে মনোনিবেশ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।

উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার নাথ বলেন, 'পাহাড়ে শিম চাষে বেশ সম্ভাবনা রয়েছে। অনাবাদি টিলা-ভুমিতেও পরিকল্পিতভাবে শিম চাষ করলে বেশ লাভবান হওয়া যাবে। বেলাল হোসেনের মতো অন্যরাও শিম চাষে এগিয়ে আসলে এই অঞ্চলের কৃষি ও অর্থনীতিতে ব্যাপক ভুমিকা রাখতে পারে শিম চাষ।'

উপজেলা কৃৃষি কর্মকর্তা জহির রায়হান বলেন, ‘প্রান্তিক পর্যায়ে অনেক চাষি আছেন। যারা শ্রম দিয়ে মূল্যবান ফসল ফলান। আমরাও কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রযুক্তিগত সহায়তা ও প্রণোদনা দিয়ে তাদের কৃষিকাজে উদ্বুদ্ধ করতে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। এ কারণেই কৃষকরা সফল হচ্ছেন।'

যাযাদি/ এস