শেরপুরে ‘কেঁচো সার উৎপাদনে, স্বাবলম্বী মন্জুরুল হক
প্রকাশ | ০৮ মার্চ ২০২৪, ১৪:৪৭
অনেকটা শখের বশে ২০২৩ সালের শুরুতে ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করেছিলেন শেরপুর জেলার শ্রীবর্দী উপজেলার কুড়ি-কাহনিয়া ইউনিয়নের ইন্দিলপুর গ্রামের কুষক মন্জুরুল হক ।
প্রথমেই ৩০টি চাড়ি ও এক লক্ষ সতের হাজার টাকা পুজিঁ নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করেন তিনি। ১ বছরের ব্যবধানে প্রায় ১০০ মেট্রিক টন কেচোঁ ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন আর তাতে কুষক মন্জুরুল হক এর আয় হচ্ছে প্রায় ৪ লাখ টাকা।
তবে কেঁচো সার উৎপাদনে মন্জুরুল হক এর পথচলা শুরুতে এতটা মসৃণ ছিল না। এ নিয়ে তাঁকে শুনতে হয়েছে অনেক কটুকথা। আর কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় চ্যালেঞ্জও ছিল অনেক বেশি। পরে শ্রীবর্দী উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির দিলদার এর সহযোগিতায়
সবকিছু ছাপিয়ে নিজেকে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন মন্জুরুল হক ।
কৃষক মন্জুরুল হক ( দৈনিক-যায়যায়দিন কে বলেন কেঁচো সারের বিষয়ে প্রথম জানতে পারেন স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে। তিনি নিজস্ব পাটখেতের জমি প্রস্তুত করার সময় ব্যবহার করেন কেচোঁ ভার্মি কম্পোস্ট সার । এতে খরচ যেমন কম লাগে, তেমনি ফলনও ভালো হয়।
তখন ভাবলেন, কেঁচো সার না কিনে, নিজে তৈরি করলেই খরচ অনেক কমে যাবে। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। ছুটে গেলেন শ্রীবর্দী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তার অফিসে ।
শ্রীবর্দী উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির দিলদার এর পরামর্শ ক্রমে ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার উৎপাদনের প্রক্রিয়াই বর্তমানে প্রতিমাসে কেঁচো ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ৭/৮ মেট্রিক টন
কেঁচো সারের মূল উপকরণ গরুর গোবর ও কেঁচো। এ জন্য যথারীতি কৃষি অফিস থেকে কেঁচো এবং স্থানীয়ভাবে গোবর সংগ্রহ শুরু করে দিলেন কুষক মন্জুরুল হক ।
তিনি আরো বলেন কেঁচো সার তৈরিতে তেমন কোনো ঝামেলা নেই। একটি নির্দিষ্ট চাড়ি বা চৌবাচ্চায় গোবরের মধ্যে কেঁচো রেখে দিলেই হয়। প্রায় ৪০ দিন পরে কেঁচো সব গোবর খেয়ে উপজাত হিসেবে সার তৈরি করে। এক বস্তা গোবর থেকে প্রায় ১৫ কেজি কেঁচো সার তৈরি হয়।
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন আসছেন তাঁর উদ্যোগ দেখতে। আর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিজের অভিজ্ঞতা ছড়িয়ে দিচ্ছেন নতুন উদ্যোক্তাদের মধ্যে।
জৈব সার উৎপাদনের উদ্যোগকে আরও বড় করতে চান মন্জুরুল। তবে এ ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা দুটি। এক. এত দিন তিনি –আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে স্বল্প ঋণ নিয়ে কাজ করেছেন। মন্জুরুল কথায়, ‘আমার আরও বড় ঋণ প্রয়োজন কেঁচো সারের খামারের জন্য ।
এ অঞ্চলের কৃষকেরা এ সার উৎপাদনের মাধ্যমে ক্ষুদ্র কৃষক ও দরিদ্র পরিবারে ফিরেছে সচ্ছলতা। কেঁচো সার ব্যবহারে কৃষকদের ইতিবাচক সাড়াও মিলছে বলে জানায় উপজেলা কৃষি বিভাগ।
মোঃ উসমানগনি উপ-সহকারী বলেন,কর্মকর্তা ‘কেঁচো সার উৎপাদন শিখে এখন ভালোই লাভ হচ্ছে মন্জুরুল হক এর। আশেপাশের গ্রামের লোকজনও এসে কেজি হিসেবে কিনে নিচ্ছে। পরিবেশবান্ধব ও বিষমুক্ত ফসল উৎপাদন হওয়ায় স্থানীয় লোকজনের এ সারের প্রতি আগ্রহ বেশি।’
যাযাদি/ এস