নদী তীরবর্তী জেলা চাঁদপুরে আলুসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে অন্যতম। এর মধ্যে প্রতিবছর কৃষকদের একটি বড় অংশ আলুর আবাদ করে আসছেন। তবে এ বছর আবাদের সময়ে বৃষ্টি হওয়ার কারণে নির্দিষ্ট সময় অতিক্রম হয়ে যায়। একই সাথে গত কয়েক সপ্তাহ ঘনকুয়াশার কারণে আলুর জমিতে চত্রাক জাতীয় রোগ দেখা দিয়েছে। যে কারণে আলুর ফলন কম এবং আলু সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা থাকলেও সবশেষে বাজার মূল্য কম পাওয়ার শঙ্কা কৃষকদের।
চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, দেশে আলু উৎপাদনে চাঁদপুর শীর্ষ পাঁচটির জেলার মধ্যে একটি। জেলায় এ বছর আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭হাজার ৫০০ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ১১০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চাইতে ৩৯০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ কম হয়েছে। এর মধ্যে আলুর আবাদ বেশী হয় সদর, হাজীগঞ্জ ও মতলব দক্ষিণ উপজেলায়।
সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের নিজ গাছতলা গ্রামের কৃষক জসিম উদ্দিন মাল জানান, বৃষ্টির কারণে এ বছর জমিতে আলু আবাদ হয়েছে দেরিতে। এরপর এখন কুয়াশার কারণে আলু গাছের পাতায় রোগ দেখা দিয়েছে। গাছের পাতা সাদা হয়ে ধীরে ধীরে গাছ নুয়ে পড়ে। কীটনাশক ব্যবহার করে অনেকের লাভ হয়নি।
তিনি আরো জানান, এ বছর আলুর দাম বেশী হওয়ার কারণে নিজগাছতলা মাঠে আলু আবাদি কৃষকের সংখ্যা বেড়েছে। তবে সার, বীজ ও কীটনাশক খরচ দিয়ে ভাল দাম না পাওয়াগেলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে।
আলু গাছে একই ধরণের রোগের কথা জানালেন সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নের চাঁদখার দোকান এলাকার কৃষক রোস্তম আলী।
তিনি বলেন-এ বছর তাদের ৪০ শতাংশ জমিতে আলু রোপন করা হয়। কিন্তু কুয়াশার কারণে আলুর গাছগুলো বড় হচ্ছে কম। আলুর ভাল ফলন নিয়ে এই কৃষক শঙ্কায় রয়েছেন। এরপর দেরিতে আলু উত্তোলন করলে দামও কম পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।
চাঁদপুর জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান রুপম জানান, প্রতিবারের মতো এবারও জেলায় ১৩টি হিমাগারে ৮২ হাজার মেট্রিকটন আলু সংরক্ষণের ধারণক্ষমতা রয়েছে। এছাড়াও আমাদের কয়টি মডেল ঘর আছে সেগুলো মধ্যে কৃষকরা আলু সংরক্ষণ করতে পারবে।
চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সাফায়েত আহম্মদ সিদ্দিকী বলেন, দুটি ঘূর্ণিঝড় ও অতি বৃষ্টির কারণে সঠিক সময়ে কৃষকরা জমিতে আলু রোপন করতে পারেনি তাই আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। এছাড়াও কুয়াশার কারণে আলুর বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত তাই কৃষকদেরকে মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক সহায়তা দিচ্ছি। এরপরও আমরা আকাঙ্খিত ফলন আশা করছি। এছাড়া বিগত বছরের মত আমরা জেলার চাহিদা পূরণ করে অন্য জেলায় সরবরাহের প্রত্যাশা করছি।
যাযাদি/ এস