পাহাড়ে আগাম আনারস চাষ বাড়ছে। পাহাড়ি টিলা ভূমিতে চাষ করা আনারস রসালো ও সুমিষ্ট হওয়ায় এর চাহিদাও বেশি। দেশের বিভিন্ন স্থানে এই আনারস পৌঁছে যাচ্ছে। এতে বেশি লাভের আশা দেখছেন চাষিরা।
স্থানীয় কৃষি অফিস বলছে, আধুনিক পদ্ধতি ও পরিমিত হরমোন ব্যবহারে মৌসুমের আগেই ফলন মিলছে। তবে কাঙ্ক্ষিত দাম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে চাষি ও ব্যবসায়ীদের মাঝে।
মৌসুম শুরুর বেশ আগেই বাজারে আসতে শুরু করেছে পাহাড়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সর্বাধিক উৎপাদিত ফল আনারস। ‘হানিকুইন’ জাতের আনারস নানিয়ারচর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চাষ হচ্ছে। নানিয়ারচরে পাইকারদের হাত হয়ে এই আনারস ছড়িয়ে পড়ছে সারাদেশে।
প্রতিবছর আগাম ডিসেম্বর থেকেই আগাম আনারসের মৌসুম হিসেবে পরিচিত। তবে গত কয়েক বছর ধরে পাহাড়ে আগাম আনারস চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের।এই আনারস উৎপাদনের জন্য কৃষকরা ব্যবহার করছেন এক ধরনের হরমোন। মৌসুমে আনারস চাষে যেখানে চাষিদের লোকসান গুনতে হতো, সেখানে মৌসুমের বাইরে আগাম আনারস চাষে বাড়তি লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা। তবে, ঘাটে আনারস সরবরাহ কম থাকায় দাম বেশি বলছেন ব্যবসায়ীরা।
নানিয়ারচর কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এ বছর নানিয়ারচরে ১১০০ হেক্টর জমিতে আনারস আবাদ করা হয়েছে।
চাষিরা বলছেন, এখনও মৌসুম শুরু না হলেও আগাম ফলন আসা আনারস চাষ হচ্ছে। বিগত কয়েক বছর ধরে এভাবে আনারস চাষ করছেন। এতে মৌসুমে উৎপাদিত আনারসের চেয়ে লাভবান হচ্ছেন তারা। কারণ মৌসুমি আনারস চাষ করে অনেক কৃষককেই লোকসানে গুনতে হয়।
নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট এলাকার আনারস চাষী মো: কাদের জানান, প্রতিটি আনারস বিক্রি করেছেন বাগানেই ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে। ‘মৌসুমে আনারসের ভালো দাম পাই না। তাই এখন আগাম চাষ করি।এই বছরে বাজারে সার ও কিটনাশকের দাম বেড়ে যাওয়ায় অধিকাংশ কৃষক আনারস চাষ করতে ইচ্ছুক নন,সরকারের উচিৎ এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটাতে আনারস চাষীদের প্রনোদনায় আওতাভুক্ত করা এবং নানিয়ারচরে স্থাপিত চিপস কারখানাটি চালু করা।
পাইকারি মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী আকরাম খান জানান, ‘বাজারে ফলের সরবরাহ কম থাকায় আনারসের দামও বেশি। আগাম আনারস হওয়ায় মৌসুমের চেয়ে এখন দামে কিনতে হচ্ছে। মৌসুমে প্রতি পিস ৫-৭ টাকা কিনলেও এখন কিনতে হচ্ছে ১৫-২০ টাকা দরে। আমরা এগুলো ২৫-৩০ টাকা দরে বিক্রি করি।
নানিয়ারচর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো: আহসান হাবিব বলেন,এবছরে ১১০০ হেক্টর জমিতে আনারস চাষ হয়েছে, মৌসুমে আনারসের ব্যাপক ফলন হওয়ার অনেকে বাড়তি লাভের আশায় কয়েক বছর ধরে আগাম চাষে ঝুঁকছেন। এই আগাম চাষে এক প্রকার হরমোন ব্যবহার করা হয়। হরমোন সঠিক সময়ে পরিমিত ব্যবহার করলে মানবদেহের কোনও ক্ষতি হয়না।
যাযাদি/ এস