ফুলবাড়ীতে আমন ক্ষেতে মাজরা ও পাতাপোড়া রোগের আক্রমণ মাথায় হাত কৃষকের

প্রকাশ | ৩১ অক্টোবর ২০২০, ২০:১৮

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

 

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীসহ আশপাশ এলাকায় মাজরাপোকা ও কারেন্ট পোকার আক্রমণ এবং পাতাপোড়া রোগে বসে যাচ্ছে আমন ক্ষেত। এতে করে মাথায় হাত পড়েছে আমনচাষিদের।

 

চাষিরা জানায়, কৃষি অফিসের দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক ও ওষুধ ব্যবহার করেও কোনো ফল তারা পায়নি। আমন ক্ষেতে একই সাথে মাজরাপোকা, কারেন্ট পোকার আক্রমণের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পাতাপোড়া রোগ। এই কারণে ৪০ ভাগ ফসল ঘরে ওঠা কঠিন হয়ে পড়েছে কৃষকের।

 

এদিকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা বলছেন, কৃষকরা কীটনাশক ও ওষুধ ব্যবহার করতে পদ্ধতিগত ভুলে পোকা ধ্বংস হয়নি। যারা সঠিক পদ্ধতিগতভাবে কীটনাশক ও ওষুধ ব্যবহার করেছে তাদের ফসল ভালো আছে।

 

বারকোনা গ্রামের ধানচাষি আক্তার হোসেন যায়যায়দিনকে বলেন, চকচকা মৌজায় তার ৮২ শতক জমিতে জিরা কাঠারী ধানে কারেন্ট ও মাজরাপোকার আক্রমণ শুরু হয়েছে। তিনি কৃষি কর্মকর্তাদের দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক ব্যবহার করেও কোনো ফল পায়নি। এতে করে তার ৩০ ভাগ ধানের গাছ কেটে দিয়েছে মাজরাপোকা। এছাড়া পাতা পোড়ারোগে তার ভাই আলতাব হোসেনের ধান পুড়ে গেছে, সেই ধান আর ঘরে ওঠানো যবে না। একই কথা বলেন বারকোনা গ্রামের কৃষক এনামুল হকসহ অনেকে।

 

মধ্য গৌরীপাড়া গ্রামের হাজি ভোলা মিয়া যায়যায়দিনকে জানান, কানাহার মাঠে তার ৮০ শতাংশ জমির ধানে পাতা পোড়া রোগ দেখা দেয়, বিভিন্ন প্রকার ওষুধ ব্যবহার করেও সেই পাতাপোড়া রোগ মুক্ত করতে না পেরে, তিনি সেই ধানের গাছ কেটে গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করেছেন।

 

এদিকে কৃষকের অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলার সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুস যায়যায়দিনকে বলেন, সঠিক পদ্ধতিতে কীটনাশক ও ওষুধ ব্যবহার না করায় কৃষকরা ক্ষতির শিকার হয়েছেন।  যে কৃষক কৃষি কর্মকর্তাদের দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক পদ্ধতিতে কীটনাশক ও ওষুধ ব্যবহার করেছেন তাদের ফসলের কোনো ক্ষতি হয়নি।

 

কৃষকরা জানান, আমন মৌসুমে উৎপাদিত জিরা কাঠারী ধান বিদেশের বাজারে রপ্তানি করা হয়, অথচ সেই জিরা কাঠারী ধানে এইবার বেশি মাজরা ও কারেন্ট পোকার আক্রমণ ঘটেছে। এতে করে বড় রকমের লোকসানের মুখে পড়েছে তারা।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার যায়যায়দিনকে বলেন, এই বছর ১৭৩৩০ হেক্টর জমিতে আমন রোপণের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও চাষ হয়েছে ১৮৩৫০ হেক্টর জমিতে। এর ৪০ ভাগ জমিতে ব্রি-৩৪ জাতের জিরা কাঠারী ধান চাষ হয়েছে।

 

তিনি বলেন, কৃষককে পরামর্শ দেওয়ার জন্য তিনিসহ সহকারী, উপ-সহকারী সব কৃষি কর্মকর্তা মাঠে কাজ করছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে এই পোকা ও পাতাপোড়া রোগ থেকে আমন ক্ষেত রক্ষা পাবে।