শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

করোনার সংকট কাটাতে সরকারের কাছে একগুচ্ছ দাবি বিজিএমইএর

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৬ মার্চ ২০২০, ০০:০০

করোনাভাইরাসের কারণে ক্রয়াদেশ স্থগিত ও বাতিল হওয়ায় ভয়াবহ সংকটে পড়েছে দেশের তৈরি পোশাকশিল্প। সংকট থেকে উত্তরণে সরকারের কাছে একগুচ্ছ দাবি জানিয়েছে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। দাবির মধ্যে আছে সুদমুক্ত ঋণ, রপ্তানি আয় প্রত্যাবাসনের বিধিবিধান ছয় মাসের জন্য স্থগিত, রপ্তানি আয়ের যেটুকু অংশ দেশে আসবে তার ওপর ডলারপ্রতি ৫ টাকা প্রদান করা।

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস বরাবর সম্প্রতি লিখিত আকারে দাবিগুলো তুলে ধরেন বিজিএমইএর সভাপতি ড. রুবানা হক। সেখানে তিনি বলেন, করোনার কারণে পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। বিদেশি ব্র্যান্ড ক্রেতা প্রতিষ্ঠান তাদের বর্তমান ক্রয়াদেশ স্থগিত করছে। ভবিষ্যতের ক্রয়াদেশ কমিয়ে ফেলছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতকে টিকিয়ে রাখার জন্য দূরদর্শী আর্থিক ও নীতি সহায়তা দরকার।

বিজিএমইএ জানিয়েছে, বুধবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ৮৮০ কারখানার ৭৭ কোটি ১৫ লাখ পিস পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হয়েছে। এতে ২৪৬ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যা কিনা প্রায় ১৭ লাখ ৯০ হাজার শ্রমিকের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির পরিচালক আসিফ ইব্রাহিম।

মুখ্যসচিবকে দেওয়া চিঠিতে বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক বলেছেন, করোনাভাইরাসের কারণে ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্র পরিশোধে বিলম্ব হবে। পরবর্তী ছয় মাস প্রতিটি পোশাক কারখানায় নগদ অর্থের সংকট থাকবে। সে কারণে শ্রমিকের মজুরি, গ্যাস ও বিদু্যৎ বিল এবং দুই ঈদের বোনাস দেওয়া দুরূহ হয়ে পড়বে। মেয়াদি ঋণের কিস্তি পরিশোধে সমস্যা হবে। রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণে বিলম্ব হবে এবং বিভিন্ন আইনি বাধ্যবাধকতা প্রতিপালনে সমস্যা দেখা দেবে।

যেসব সুবিধা চায় বিজিএমইএ : পোশাক কারখানার ছয় মাসের মজুরি ও বোনাস, গ্যাস-বিদু্যতের বিল ও অন্যান্য সুদমুক্ত ঋণ মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ স্থানীয় মুদ্রায় প্রদান করার সুপারিশ করেছে বিজিএমইএ। এই ঋণের অর্থ প্রথম ছয় মাসে প্রদান না করে পরবর্তী ৩০ মাসে সমান কিস্তিতে পরিশোধ করার ব্যবস্থা করতে হবে। পোশাক কারখানাকে এই সুবিধা দেওয়ার জন্য একটি পুনঃ অর্থায়ন স্কিমের আওতায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে প্রদান করবে।

প্রণোদনা দাবির ৯০ শতাংশ পর্যন্ত পিআরসির বিপরীতে সরাসরি ব্যাংক থেকে প্রদান করার দাবি জানিয়েছে বিজিএমইএ। একই সঙ্গে তারা বলেছে, বকেয়া প্রণোদনার অর্থ আগামী মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা দরকার। এছাড়া মেয়াদি ঋণের সুদ আগামী ছয় মাসের জন্য মওকুফ ও ঋণ শ্রেণিবিন্যাসের সময় ১৮০ দিন পর্যন্ত বৃদ্ধি করার দাবি করেছে রপ্তানি আয়ের শীর্ষ খাতের ব্যবসায়ীদের এই সংগঠন।

ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্র সময়মতো পরিশোধ না করা হলে ফোর্স ঋণ সৃষ্টি না করার দাবি করেছে বিজিএমইএ। তাদের আরও দাবি, রপ্তানি আয় প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত সব বিধিবিধান ছয় মাসের জন্য স্থগিত করতে হবে। প্যাকিং ক্রেডিট (পিসি) ও রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) ঋণ পরিশোধের মেয়াদ তিন মাস বাড়ানো যেতে পারে। বিল অব এন্ট্রি দাখিল ও ইএক্সপি প্রতিবেদনের জন্য অতিরিক্ত ৯০ দিনের সময় দেওয়া প্রয়োজন।

করোনাসহ নানা কারণে পোশাকশিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমে গেছে এমন দাবি করে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পোশাক রপ্তানি আয়ের যেটুকু অংশ দেশে আসবে, তার ওপর ডলারপ্রতি ৫ টাকা প্রদান করার অনুরোধ করেছে বিজিএমইএ। তারা বলেছ, ডলারপ্রতি ৫ টাকা দিতে হলে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি প্রয়োজন হবে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<94123 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1