শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
করোনাভাইরাস

বিনিয়োগকারীরা হারালেন সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা

যাযাদি রিপোর্ট
  ২১ মার্চ ২০২০, ০০:০০

করোনাভাইরাসের আতঙ্কে টানা বড় পতনের মধ্যে পড়ে গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা হারিয়েছেন। তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচু্যয়াল ফান্ডের দাম কমায় তারা এ অর্থ হারিয়েছেন।

গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। পতনের হাত থেকে বাঁচতে বিনিয়োগকারীদের একপক্ষ শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ রাখার দাবি তুলেন। পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিলে শেয়ারবাজার টেনে তুলতে সার্কিট ব্রেকারের নিয়মে পরিবর্তন আনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এতে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স এক লাফে বাড়ে ১০ শতাংশের ওপরে। এরপরও পতনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়নি।

সপ্তাহের প্রথম তিন কার্যদিবস টানা বড় পতনের মধ্যে পড়ায় সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে। ফলে এক সপ্তাহেই শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করা অর্থের পরিমাণ কমে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার ওপরে।

গত সপ্তাহের আগের তিন সপ্তাহেও শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়। এতে আগের তিন সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করা অর্থের পরিমাণ কমে ৩৮ হাজার কোটি টাকার ওপরে। এ নিয়ে টানা চার সপ্তাহের পতনে বিনিয়োগকারীরা প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা হারিয়েছেন।

বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করা অর্থের পরিমাণ কমার পাশাপাশি গত সপ্তাহজুড়ে কমে সবকটি মূল্যসূচক ও লেনদেনের পরিমাণ। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক কমেছে প্রায় ৪ শতাংশ। আর লেনদেন কমেছে প্রায় ২৫ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া মাত্র ৪৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩০৪টির। ৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ১০ হাজার ৭৩৩ কোটি টাকা, যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৩ লাখ ২১ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১০ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা।

এদিকে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৫৫ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ২৫৪ দশমিক ৫২ পয়েন্ট বা ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ।

বাকি দুটি সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্‌ সূচক কমেছে ৩৮ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট বা ৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ৫৮ দশমিক ১৫ পয়েন্ট বা ৫ দশমিক ৭২ শতাংশ।

আর ডিএসই-৩০ আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে ৫৫ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট বা ৪ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ৮০ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বা ৫ দশমিক ৫২ শতাংশ।

সবকটি সূচকের এমন পতনের মধ্যে ডিএসইতে লেনদেনের গতিও কমেছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয় ৩১৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪১৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১০৩ কোটি ৮ লাখ টাকা বা ২৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ।

আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয় ১ হাজার ২৫৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ২ হাজার ৮৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ৮৩০ কোটি ৬ লাখ টাকা বা ৩৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

গত সপ্তাহের মোট লেনদেনের মধ্যে 'এ' গ্রম্নপের প্রতিষ্ঠানের অবদান দাঁড়িয়েছে ৮৪ দশমিক ৪০ শতাংশ। এ ছাড়া ডিএসইর মোট লেনদেনে 'বি' গ্রম্নপের অবদান ১৪ শতাংশ। 'জেড' গ্রম্নপের প্রতিষ্ঠানের অবদান ১ দশমিক ১১ শতাংশ এবং 'এন' গ্রম্নপের অবদান দশমিক ৪৯ শতাংশ।

গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয় স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালের শেয়ার। কোম্পানিটির ৫৩ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা সপ্তাহজুড়ে হওয়া মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ২২শতাংশ।

দ্বিতীয় স্থানে থাকা মুন্নু সিরামিকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৯ কোটি ৩১ লাখ টাকার, যা সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ। ৩৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে গ্রামীণফোন।

লেনদেনে এরপর রয়েছে- ওরিয়ন ফার্মা, লাফার্জাহোলসিম বাংলাদেশ, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, ব্র্যাক ব্যাংক, ওরিয়ন ইনফিউশন, বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি এবং সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<93411 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1