শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
করোনার প্রভাব

ট্যানারিগুলোতে জমছে চামড়ার স্তূপ

রেজা মাহমুদ
  ১৫ মার্চ ২০২০, ০০:০০

দেশের ট্যানারি মালিকদের জন্য সময়টা ভালো যাচ্ছে না। ধারাবাহিকভাবে কমছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি। এই পণ্যের ৬০ শতাংশই চীনের বাজার হওয়ায় ক্ষতির মাত্রা বহুগুণ। এছাড়া অন্যান্য দেশেও চামড়া পাঠানো হয় চীনের স্থানীয় এজেন্টর মাধ্যমে। গত দেড় মাস ধরে রপ্তানি বন্ধ থাকায় ট্যানারিগুলোতে জমেছে চামড়ার স্তূপ। বাংলাদেশ থেকে এই মুহূর্তে চামড়া কেনার আগ্রহী কোনো দেশ খুঁজে পাচ্ছেন না ব্যাবসায়ীরা।

জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক সংস্থা আঙ্কটাডের প্রতিবেদনেও বলছে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে করোনার সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে এ শিল্পেই। 'গেস্নাবাল ট্রেড ইম্প্যাক্ট অব দ্য করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এপিডেমিক' শিরোনামে সম্প্রতি প্রকাশিত আঙ্কটাডের ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যান্ড কমোডিটিস ডিভিশন থেকে পরিচালিত গবেষণা প্রতিবেদনে, করোনাভাইরাসের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ৩৫টি দেশের তালিকায় রাখা হয়েছে বাংলাদেশকে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে চীনের মধ্যবর্তী পণ্য রপ্তানি দুই শতাংশ কমলে যে ৩৫টি দেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে তার একটি বাংলাদেশ। যার প্রভাব দেখা যাবে বস্ত্র ও তৈরি পোশাকশিল্প খাত, কাঠ ও আসবাব শিল্প এবং চামড়াশিল্পে। সবমিলিয়ে ক্ষতি হতে পারে ১৭ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যার মূল্যমান ১৪৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। (১ ডলার সমান ৮৫ টাকা ধরে)

চীনের অর্থনীতি শ্লথ হওয়ায় বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে চামড়াশিল্পে। এই শিল্পে ১৫ মিলিয়ন ডলার বা ১২৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ক্ষতির আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। অন্যদিকে বস্ত্র ও আসবাবপত্র শিল্পে এক মিলিয়ন ডলার করে ক্ষতি হতে পারে।

যদিও চামড়া শিল্পের সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা আরও বড় ক্ষতির কথাই বলছেন। বাংলাদেশ ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উলস্নাহ বলেন, প্রায় দেড় মাস ধরে চীনে আমাদের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের অর্ডারগুলো আটকে ছিল। এ সময়ে প্রায় ১০০ কোটি টাকার চালান আমরা পাঠাতে পারিনি। তিনি বলেন, গত এক মাসে কোনো এলসি, টিটি আমরা এখনো পাইনি। বিভিন্ন ট্যানারির মধ্যে প্রায় ১২০ কনটেইনার চামড়া প্যাকিং অবস্থায় আছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ২০০ কোটি টাকা। আরও অনেক চামড়া প্রস্তুতকরণের মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে।

আঙ্কটাড এর প্রতিবেদনে সার্বিকভাবে দুই শতাংশ ক্ষতির হিসাব করা হলেও সালমা ট্যানারি লিমিটেডের এই মালিক আরও বড় ক্ষতি হবে বলেই ধারনা করছেন। তার ভাষ্য, তারা সার্বিকভাবে যে হিসাব দিয়েছে এটা ঠিকই আছে। তবে আমার মনে হয় আমাদের জন্য (চামড়া শিল্পে) এটা আরও বাড়বে। জানুয়ারির ১৫ তারিখ থেকে শিপমেন্ট আটকে থাকায় নতুন পণ্য উৎপাদন করা যায়নি। আর নতুন অর্ডারও আসেনি। এতে অনেক ছোট ছোট প্রতিষ্ঠান কিন্তু বন্ধ হবার উপক্রম। তাই বাংলাদেশের চামড়া শিল্পে করনা আরও বড় প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে।

এদিকে প্রতিবেদনে চীনের রপ্তানি কমায় সবচেয়ে বেশি ইউরোপীয় ইউনিয়নে ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইইউভুক্ত দেশগুলো যন্ত্রপাতি, গাড়ি ও রাসায়নিকের মধ্যবর্তী পণ্যের জন্য চীনের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় তাদের বড় ধরনের লোকসান হতে পারে।

এছাড়া অন্য যে দেশগুলো ক্ষতির মুখে পড়বে তার মধ্যে ওপরের দিকে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান ও ভিয়েতনাম।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<92637 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1