শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

টাকার সংস্থান আগেই করে রেখেছে জিপি

যাযাদি রিপোর্ট
  ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

সোমবারের মধ্যে বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের অডিট আপত্তির বিপরীতে এক হাজার কোটি টাকা দিতে গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টে আপিল বিভাগ। কিন্তু প্রশ্ন হলো দুই কার্যদিবসের মধ্যে এত্ত টাকা কোথা থেকে আসবে?

এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে যেটা পাওয়া গেছে তা হলো- শুধু এক হাজার কোটি কেন, গ্রামীণফোনের তো প্রস্তুতি আছে ২৪ নভেম্বর আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ের দুই হাজার কোটি টাকার পুরোটা দিয়ে দেওয়ার। সংশ্লিষ্ট হিসাবপত্র থেকে গ্রামীণফোনের এই প্রস্তুতির তথ্য পাওয়া যায়।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে দেওয়া গ্রামীণফোনের তথ্য বলছে, গত বছরে বার্ষিক সাধারণ সভায় পাস হওয়া হিসাব অনুসারে তাদের অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন সময়ে লাভ থেকে ডিভিডেন্ট দেওয়ার পরও ২ হাজার ১২৩ কোটি ২৬ লাখ ৩১ হাজার টাকা উদ্বৃত্ত রয়েছে।

তাছাড়া ২০১৯ সালে তারা ৩ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা নিট লাভ করলেও তাদের ১৩৫ কোটি ৩ লাখ শেয়ার ১৩০ শতাংশ ডিভিডেন্ট দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। ফলে এক্ষেত্রে তাদের আরও অন্তত ১ হাজার ৭৯৯ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত থাকবে।

ফলে টাকা দেওয়া তাদের জন্য মোটেই সমস্যা হবে না। তবে তারপরেও সহজে যাতে টাকা দিয়ে দিতে না হয় তার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন কোম্পানিটি। তবে আইনি বিষয়টি এমন পরিস্থিতিতে এসে গেছে তাতে তাদের পক্ষে এখন আর টাকা না দিয়ে থাকা সম্ভব নয় বলে মনে করেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক।

তিনি বলেন, 'তাদের জন্য আর তো যাওয়ার কোনো জায়গা দেখছি না। আর কোনো জায়গা আছে বলে আমি মনে করি না। সে কারণে আমার যতখানি মনে হয় এবার তারা টাকাটা দিয়ে দেবে'। আর টাকা না দিলে আইনুসারে সোমবারের পর তারা গ্রামীণফোনে প্রশাসক নিয়োগের আয়োজন শুরু করবেন বলেও জানান।

সংশ্লিষ্টরা জানান, গ্রামীণফোন যেহেতু অনেক শক্ত আর্থিক ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে সে কারণে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট তাদের এক হাজার কোটি টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিলেও পুঁজিবাজারে তাদের শেয়ারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব তো পড়েইনি বরং তাদের শেয়ারের মূল্য দুই দশমিক ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বুধবার যেখানে গ্রামীণফোনের শেয়ার ২৮৪ টাকায় বিক্রি হয়েছিল সেখানে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের খবর বেরোনোর পরে সেটি ৩০৮ টাকায় উঠে আসে। পরে অবশ্য দিনের শেষে এসে সেটি আবার ২৯২ দশমিক ২০ টাকায় নেমে আসে।

এর আগে বিটিআরসির করা অডিটে গ্রামীণফোনের কাছে তারা মোট ১২ হাজার ৫৮৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা পাওনা হিসেবে দাবি করে। এর মধ্যে বিটিআরসির অংশ ৮ হাজার ৪৯৪ কোটি আর এনবিআরের অংশ ৪ হাজার ৮৬ কোটি টাকা।

বিটিআরসির পাওনা দাবিকৃত ৮ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকার মধ্যে মূল টাকা হলো ২ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা। বাকি ৬ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা বিলম্ব ফি, যেটি মূল টাকার ওপর চক্রবৃদ্ধি হারে হিসাব করা হয়েছে।

বিষয়টি আদালতে গড়ালে গত ২৪ নভেম্বর আপিল বিভাগ তিন মাসের মধ্যে (২৪ ফেব্রম্নয়ারি) গ্রামীণফোনকে দুই হাজার কোটি টাকা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিল।

তবে সেই নির্দেশনার বিরুদ্ধে ২৬ জানুয়ারি রিভিউ পিটিশন দাখিল করে গ্রামীণফোন। সেখানে বিটিআরসির দাবিকৃত মূল টাকার ২৫ শতাংশ হিসেবে ৫৭৫ কোটি টাকা জমা দেওয়ার আবেদন করে।

এদিকে বৃহস্পতিবার রিভিউ পিটিশনের ১৮২ নম্বরে থাকার পরেও প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদুল হোসনসহ আপিল বিভাগের সাতজন বিজ্ঞ বিচারপতি গ্রামীণফোনের আবেদন শোনেন এবং মধ্যে এক হাজার কোটি টাকা দিয়ে তারপর আবার সোমবার আদালতে যাওয়ার জন্য বলেছেন তারা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<89528 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1