মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
করোনাভাইরাসের প্রভাব

জানুয়ারিতে চীনে মূল্যস্ফীতি আট বছরের সর্বোচ্চে

যাযাদি ডেস্ক
  ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারিতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতি চীনের ভোক্তামূল্য আট বছরের বেশি সময়ের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। চান্দ্র নববর্ষে চাহিদা বৃদ্ধি ও ভাইরাসের মারাত্মক সংক্রমণের কারণে চীনে মূল্যস্ফীতি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি বেড়ে গিয়েছে। গতকাল প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে এসেছে। করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতির শিকার হচ্ছে দেশটির ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলো। খবর এএফপি।

ভাইরাসের সংক্রমণের আগে থেকেই মন্থর অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির মোকাবেলা করে আসছিল বেইজিং। ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সংকটে থাকা দেশটির ব্যবসা, ভ্রমণ ও সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। গতকাল প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে, জানুয়ারিতে চীনের খুচরা মূল্য পরিমাপক ভোক্তামূল্য সূচক (সিপিআই) বছরওয়ারি ৫ দশমিক ৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে ছিল ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। মূলত শূকরের মাংস ও তাজা সবজির উচ্চমূল্য উপরের দিকে ঠেলে দিয়েছে মূল্যস্ফীতিকে। জানুয়ারিতে খাদ্যমূল্য বেড়েছে ২০ দশমিক ৬ শতাংশ।

জানুয়ারিতে সামগ্রিক মাসিক মূল্যস্ফীতি ২০১১ সালের অক্টোবরের পর সর্বোচ্চে দাঁড়িয়েছে, একই সঙ্গে বস্নুমবার্গ পরিচালিত জরিপে অংশগ্রহণকারী অর্থনীতিবিদদের ৪ দশমিক ৯ শতাংশ মূল্যস্ফীতি পূর্বাভাস ছাড়িয়েছে। ২০১১ সালের অক্টোবরে চীনে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।

ন্যাশনাল বু্যরো অব স্ট্যাটিস্টিকস জানায়, বছরওয়ারি মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির ওপর বসন্তকালীন উৎসবসংক্রান্ত ফ্যাক্টরগুলোর পাশাপাশি নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণেরও প্রভাব পড়েছে।

গত মাসের শেষে শুরু হওয়া চান্দ্র নববর্ষের ছুটির মধ্যে ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে চীনকে কষ্ট করতে হবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। ফলে এ সময়ে মূল্য স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার এক গবেষণা নোটে নমুরা হোল্ডিংসের লু তিং জানান, পরিবহন ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ায় ও অন্যান্য অবরোধ পদক্ষেপের কারণে বেশকিছু খাদ্য সরবরাহ বড় বড় শহরগুলোয় পাঠানোর আগেই নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেমন ফল, সবজি ও গবাদি পশু। এছাড়া এ ধরনের পরিস্থিতিতে জনগণের মধ্যে খাদ্য ও অন্যান্য রসদ মজুদ করে রাখার প্রবণতা তৈরি হয়। মজুদের কারণে পণ্যমূল্য বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।

উলেস্নখ্য, এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের কারণে চীনে ৯০০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছে।

সাধারণত চান্দ্র নববর্ষের ছুটির শেষে মূল্য কমে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায় বলে ইউওবির গবেষণা প্রধান সুয়ান তেক কিন জানিয়েছেন। তবে সরবরাহ শৃঙ্খলে বিঘ্নতার জন্য চলতি বছর উচ্চমূল্য অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।

গত মাসে চীনের উৎপাদক পর্যায়ের মূল্যসূচক দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর আগে ডিসেম্বরে সূচকটিতে দশমিক ৫ শতাংশ পতন দেখা গিয়েছিল। তবে চলতি মাসে উৎপাদক পর্যায়ের মূল্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।

এদিকে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে চীনের ক্ষদ্র ব্যবসাগুলো ক্ষতির সম্মুখীন। সরকারি নির্দেশ বা ভাইরাস আতঙ্কে চীনা নাগরিকরা বাড়িতেই থাকছে। যে কারণে চীনের ক্রমবর্ধমান মধ্যম শ্রেণির ওপর নির্ভরশীল ছোট ব্যবসাগুলো ক্ষতির মুখে পড়েছে।

চীনের প্রাচীরের কাছাকাছি অবস্থিত ছোট একটি রেস্তোরাঁর মালিক ৩৫ বছর বয়সি ওয়াং লি জানান, বছরের এ সময়ে তারা প্রতিদিন ১০ টেবিল অতিথি আপ্যায়নে অভ্যস্ত। চান্দ্র নববর্ষের ছুটিতে যেখানে প্রায় ১ হাজার ৪০০ ডলার (১০ হাজার ইউয়ান) আয় হয়, সেখানে এবার ব্যবসাই বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থা দুই মাসের বেশি স্থায়ী হলে দেউলিয়া হতে হবে ওয়াং লিকে। এ মুহূর্তে মহামারি শেষ হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<88194 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1