শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভারত ও পশ্চিমা বিনিয়োগে নজর শ্রীলংকার

নতুনধারা
  ১৫ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক

দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের আওতায় শ্রীলংকায় বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করছে চীন। এদিকে শ্রীলংকায় বেইজিংয়ের সরব উপস্থিতি কাম্য নয় দেশটির দীর্ঘদিনের উন্নয়ন ও কৌশলগত অংশীদার প্রতিবেশী ভারতের। এ পরিস্থিতিতে ভারতসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ও পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো দেশটিতে বড় বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে না এলে কলম্বো বাধ্য হয়ে চীনমুখী হবে বলে জানিয়েছেন শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। খবর এএফপি।

রোববার দ্য হিন্দুকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজাপাকসে বলেন, শুধু আমরা নই, অন্যদের বিনিয়োগ না পেলে এশিয়ার বাকি দেশগুলোও চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পে যুক্ত হবে।

ঐতিহ্যগতভাবে ভারতের সঙ্গে শ্রীলংকার সুসম্পর্ক রয়েছে। তবে চীনের সঙ্গেও দেশটির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। বর্তমান প্রেসিডেন্টের ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে ২০০৫-১৫ সালে প্রেসিডেন্ট থাকাকালে দেশটিতে চীনের ঋণ ও বিনিয়োগ এসেছে ৭০০ কোটি ডলার।

ভারতীয় পত্রিকাটির সঙ্গে আলাপকালে গোতাবায়া রাজাপাকসে বলেন, আমি ভারত, জাপান, সিঙ্গাপুর ও অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশকে শ্রীলংকায় বিনিয়োগের জন্য আহ্‌বান জানাই। আমি চাই, তারা নিজ নিজ দেশের কোম্পানিগুলোকে শ্রীলংকায় বিনিয়োগ করতে বলুক, আমাদের অর্থনীতি শক্তিশালী করতে সহায়তা করুক। এসব দেশ বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে না এলে শুধু শ্রীলংকা কেন এশিয়ার সব দেশই চীনের ঋণ ও বিনিয়োগ পেতে চেষ্টা করবে। বেল্ট অ্যান্ড রোডের মোকাবিলায় অন্য দেশেগুলো বিকল্প প্রকল্প হাজির করতে না পারলে চীন ক্রমে সব দেশেই প্রবেশ করবে।

চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্প নিয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগে রয়েছে ভারত। প্রকল্পটির মাধ্যমে বেইজিং ভারত মহাসাগরে সামরিক ও কৌশলগত অবস্থান জোরদার করবে এমন আশঙ্কা দিলিস্নর। প্রসঙ্গত, দিলিস্ন ভারত মহাসাগরকে নিজেদের অধিকারভুক্ত মনে করে। এদিকে ভারতের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা শনিবার জাপানের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সঙ্গে পারস্পরিক সামরিক সহায়তা জোরদারে আলোচনা করেছেন।

বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের আওতায় এশিয়া, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে কয়েকশ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে চীন। এসব অঞ্চলে বন্দর, রেলওয়ে, সড়ক ও শিল্প পার্ক নির্মাণে ব্যয় করা হচ্ছে এ অর্থ।

এদিকে কলম্বোর দক্ষিণে অবস্থিত দেশটির হাম্বানটোটা বন্দর নিয়ে চীনের সঙ্গে পুনরায় দর কষাকষি করবেন বলে জানিয়েছেন শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট। এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে বন্দরটির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। রাজাপাকসে বলেন, হাম্বানটোটার মতো কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ সব প্রকল্পে শ্রীলংকা সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত বলে মনে করি আমি। অন্যথায় দেশের মূল্যবান সম্পদ বেহাত হওয়ার জন্য পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের দোষারোপ করবে।

উলেস্নখ্য, শ্রীলংকা সরকার ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় ২০১৭ সালে বন্দরটি চীনকে ৯৯ বছরের জন্য ইজারা দিতে বাধ্য হয়।

এদিকে বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের অধীনে চীন থেকে ঋণ গ্রহণকারী দেশগুলো ঋণের ফাঁদে আটকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে মর্মে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত ও কয়েকটি পশ্চিমা দেশ।

অন্যদিকে শ্রীলংকা ও চীনের সুসম্পর্ক নিয়ে ভারতের বিচলিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানান রাজাপাকসে। তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণে ভারত সরকার আমাদের নিয়ে কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছে। এটা ভুল বোঝাবুঝি ছাড়া কিছু নয়। চীনের সঙ্গে আমাদের চুক্তি সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক। সুতরাং দিলিস্নর উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<84414 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1