বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দেশের গুরুত্বপূর্ণ ৮ খাতে বাড়ছে চীনা বিনিয়োগ

যাযাদি রিপোর্ট
  ২০ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্ক নতুন নয়, বহু পুরনো। সত্তর দশকের প্রথমার্ধ থেকে। নানা খাতের উন্নয়নে চীন বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। এ দেশের উন্নয়নে চীন সরকার ঋণ ও অনুদান দিয়েই আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে এবার নতুন করে যোগাযোগ, রেল, বিদু্যৎ, জ্বালানি, পানি, স্যানিটেশন, আইসিটি ও শিপিং- এই আট খাতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে চায় দেশটি।

চীন বাংলাদেশকে এ পর্যন্ত ৫৮ দশমিক আট কোটি ডলার অনুদান দিয়েছে। একই সঙ্গে ১৯৯৭-২০১৯ সাল পর্যন্ত ১৯৪ দশমিক দুই কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে দেশটি। বিগত ২২ বছরে ১৮ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা চীনা ঋণ এসেছে বাংলাদেশে।

বাংলাদেশে বাণিজ্য আর বিনিয়োগ বাড়াতে চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের আহ্বানে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার রাজধানীর লা মেরিডিয়ানে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দুই দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, পরিকল্পনা বিভাগের সচিব নূরুল আমিনসহ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

চীন সরকারের পক্ষে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং, চীনা ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ইউনান প্রদেশ শাখার সভাপতি ড. হং ঝিংহুয়া, চীনের ইউনান প্রদেশের গভর্নর চেন হাও, ইউনান প্রদেশের মহাপরিচালক (ডেভেলপমেন্ট) ইয়াং হংবো, মহাপরিচালক (পররাষ্ট্র) পু হং এবং উপ-মহাপরিচালক (বাণিজ্য) ইউ সুকুম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে ইউনান প্রদেশের পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটেছে। বর্তমানে প্রদেশটির রাজধানী কুনমিং পরিবহণের কেন্দ্রবিন্দু। এই শহরটির সঙ্গে প্রদেশটির বিভিন্ন শহর ও দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহর বেইজিং, সাংহাই, গুয়ানঝাউয়ের সড়কপথ, রেলপথ ও আকাশপথ যুক্ত রয়েছে। বর্তমানে কুনমিং থেকে সাংহাই পর্যন্ত উচ্চগতির রেলও রয়েছে।

আর এই ইউনান প্রদেশের অবস্থান বাংলাদেশের দিক থেকে কাছে। এই প্রদেশের সঙ্গে বাংলাদেশ নানামুখী উন্নয়ন কাজে অংশ নিতে পারে। মিয়ানমারের পাশে অবস্থিত ইউনান। মিয়ানমারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে উঠলে সড়কপথেও ইউনান প্রদেশের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে বাংলাদেশের।

বৈঠকে নিজ দেশে রোহিঙ্গাদের ফিরে যেতে চীনকে বাংলাদেশের পাশে থাকার আহ্বান জানানো হয়। এর পাশাপাশি বাংলাদেশে বাণিজ্য-বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানানো হয়। এরপর ইতিবাচক সাড়া দিয়ে রেল, বিদু্যৎ ও আইসিটি খাতে চীনা বিনিয়োগ বৃদ্ধির আশ্বাস দেয় দেশটি।

\হবৈঠক প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, চীন বাংলাদেশের ভালো বন্ধু। চীনা বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে চান। তারা নানা খাতে বিনিয়োগ করতে চান। এর মধ্যে অন্যতম যোগাযোগ, রেল, বিদু্যৎ, জ্বালানি, পানি, স্যানিটেশন, আইসিটি ও শিপিং খাত।

মন্ত্রী বলেন, বৈঠকে রোহিঙ্গা ইসু্য নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে চীন। আমরাও বলেছি, দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি বজায় রাখতে সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখছে বাংলাদেশ। মিয়ানমার সীমান্ত খুলে দিলে সড়কপথেও ইউনান প্রদেশের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে বাংলাদেশের আপত্তি নেই। ইউনান প্রদেশে অনেক বাংলাদেশিও ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, বর্তমানে ৬১৫ কোটি ডলার চীনা ঋণে আটটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজ চলমান বাংলাদেশে। এরমধ্যে অন্যতম পদ্মা সেতুতে রেল লিংক, কর্ণফুলী টানেল ও জাতীয় আইসিটি ইনফ্রো-নেটওয়ার্ক প্রকল্প চলমান রয়েছে।

এ ছাড়া ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং উইথ ডাবল পাইপলাইন মর্ডানাইজেশন অব টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ফর ডিজিটাল কানেক্টিভিটি, ন্যাশনাল ফোর টায়ার ডেটা সেন্টার, দাশেরকান্দ্রি সু্যয়ারেজ ট্রিটমেন্ট পস্ন্যান্ট এবং এক্সপানসন অ্যান্ড স্ট্রেনদেনিং অব পাওয়ার প্রকল্পও চীনা ঋণে চলমান।

এ ছাড়াও ২০১৬ সালের অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ঢাকা সফরের সময় দেশটির সঙ্গে ২৭ প্রকল্পে ২২ বিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তার সমঝোতা হয় বাংলাদেশের। এরমধ্যে গত তিন বছরে পদ্মা সেতু রেল সংযোগসহ পাঁচ প্রকল্পে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তি হয়েছে দেশটির সঙ্গে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<76239 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1