শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আবাসনে বিকল্প বিনিয়োগ তহবিল ভারতের

যাযাদি ডেস্ক
  ০৯ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

ভারতের আবাসন খাতকে চাঙা করতে ২৫ হাজার কোটি রুপির বিকল্প বিনিয়োগ তহবিল (এআইএফ) তৈরির অনুমোদন দেওয়ার কথা জানিয়েছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। অর্থাভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া মধ্যবিত্তদের জন্য প্রস্তাবিত আবাসন প্রকল্পগুলো চালুর উদ্দেশ্যে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদি সরকার। সীতারমণের দাবি, এর ফলে ওই আবাসনগুলোর কাজ দ্রম্নত শেষ করা যাবে, যাতে উপকৃত হবেন ক্রেতারা। খবর লাইভমিন্ট।

গত বুধবার কেন্দ্রের মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্মলা সীতারমণ জানান, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে ২৫ হাজার কোটি রুপির এ তহবিল তৈরি করা হবে। এ তহবিলে কেন্দ্র সরকার দেবে ১০ হাজার কোটি রুপি। বাকি অর্থ দেবে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, লাইফ ইন্সু্যরেন্স করপোরেশন অব ইন্ডিয়া এবং এ ধরনের অন্যান্য সংস্থা। এ তহবিল থেকে অর্থের অভাবে কাজ শেষ না হওয়া আবাসন প্রকল্পে ঋণ হিসেবে অর্থের জোগান দেওয়া হবে।

ভারতের অর্থমন্ত্রীর হিসাবে, দেশটিতে এক হাজার ৬০০ আবাসন প্রকল্প অসম্পূর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে, যেগুলোতে ফ্ল্যাটের সংখ্যা ৪ লাখ ৫৮ হাজার। কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিল তৈরির সিদ্ধান্তে এই ৪ লাখ ৫৮ হাজার ফ্ল্যাটের ক্রেতাদের সিংহভাগই উপকৃত হবে। মধ্যবিত্তের জন্য তৈরি আবাসন প্রকল্পগুলো দারুণ লাভবান হবে।

মুম্বাইয়ের ক্ষেত্রে ২ কোটি রুপির কম দামের ফ্ল্যাট এবং দিলিস্ন, কলকাতা, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, পুনে, হায়দরাবাদের মতো মেট্রো শহরের ক্ষেত্রে এক কোটি ৫ লাখ রুপির কম দামের ফ্ল্যাট এবং অন্যান্য শহরের ক্ষেত্রে এক কোটি রুপির কম দামের ফ্ল্যাটের আবাসন প্রকল্পে এ সুবিধা দেওয়া হবে। আটকে থাকা প্রকল্পগুলো সম্পূর্ণ করতে এ তহবিলের অর্থ ব্যবহার করা হবে।

বিক্রিতে মন্দা, অবিক্রীত ফ্ল্যাট ও দাম কমে যাওয়ায় বিপাকে রয়েছে ভারতের প্রোপার্টি ডেভেলপাররা।

এর সঙ্গে আবাসন প্রকল্প দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে, এমন আশঙ্কায় ব্যাংকগুলোও ঋণ দেয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। ফলে বহু প্রকল্প অর্থের অভাবে মাঝপথে আটকে পড়েছে। ২০১৬ সালের নভেম্বরে নোট বাতিল এবং এর পরের বছর জিএসটি আরোপের ধাক্কায় মহাদুর্দশার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভারতের আবাসন খাত।

নোট বাতিল ও জিএসটির জোড়া ধাক্কায় ধুঁকতে থাকা আবাসন শিল্প চাঙা করতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর এ বিশেষ তহবিল তৈরির পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছিলেন ভারতের অর্থমন্ত্রী। কিন্তু সে সময় বলা হয়েছিল, যেসব প্রকল্প ঠিক সময়ে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে এনপিএর (নন-পারফরমিং অ্যাসেট) আওতায় চলে গেছে এবং যেসব প্রকল্প নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করতে জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইবু্যনালে (এনসিএলটি) গেছে, তারা এ সুবিধা পাবে না। তবে এবারের ঘোষণায় এসব শর্ত তুলে নেওয়া হয়েছে।

নির্মলা সীতারমণের মতে, যারা ফ্ল্যাট বুকিং দিয়েছেন, কিন্তু বুঝে পাননি তারা এ সিদ্ধান্তে লাভবান হবেন। এতদিন এরা অর্থ দিয়েও ফ্ল্যাট বুঝে পাচ্ছিলেন না। অন্যদিকে ভাড়াবাড়িতে থেকে ভাড়া গুনতে হচ্ছে। উপকৃত হবেন অর্থের অভাবে কাজ শেষ করতে না পেরে দেউলিয়া হতে বসা প্রোমোটার ও আবাসন নির্মাণকারী সংস্থাও।

অ্যানারক প্রোপার্টি কনসালট্যান্টস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আনুজ পুরি বলেন, সরকার বুঝতে পেরেছে, দেশের আবাসন খাত রক্ষায় কিছু করা জরুরি হয়ে পড়েছে। সরকারের এ পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে আবাসন বাজারের মনোভাবকে চাঙ্গা করবে। কেননা থমকে থাকা প্রকল্পগুলো আবার চালু করতে এবারই প্রথম এমন পদক্ষেপ নেওয়া হলো।

এ প্রতিষ্ঠানটির হিসাব অনুসারে, ভারতজুড়ে ১ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন রুপির আবাসন প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে।

দেশের প্রবৃদ্ধিতে গতি ফেরাতে চায় মোদি সরকার। এজন্য নেয়া বিস্তৃত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আবাসন খাতের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। ৩০ জুন শেষ হওয়া প্রান্তিকে ভারতের প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৫ শতাংশে, যা ছয় বছরের সর্বনিম্ন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<74767 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1