শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কিছুতেই আস্থা ফিরছে না পুঁজিবাজারে

সবার প্রত্যাশা ছিল পুঁজিবাজার নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের বৈঠকের পর বাজার ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু তা না হয়ে উল্টো দরপতন হচ্ছে
নতুনধারা
  ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট

সবার প্রত্যাশা ছিল পুঁজিবাজার নিয়ে বাজারের অংশীজনদের সঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের বৈঠকের পর বাজার ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু তা না হয়ে উল্টো দরপতন হচ্ছে বাজারে। কোনো কিছুতেই বাজারে আস্থা ফিরছে না।

বৈঠকের পর দুই দিনে ঢাকায় প্রধান সূচক ডিএসইএক্স পড়েছে ৭০ পয়েন্টের বেশি। চট্টগ্রামে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ২১৫ পয়েন্ট।

পুঁজিবাজার চাঙা করতে সোমবার বাজারের সকল অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী। বৈঠকে বাজারে কোনো ধরনের গড়বড় হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণে নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ বিএসইসির অধীনে একটি বিশেষ কমিটি কাজ করবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।

'ইন্টারনাল অডিট কমিটি' নামের এই কমিটি কোম্পানিগুলো যাতে শেয়ারের ন্যায্যমূল্য পায়, কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম যেন অতিমূল্যায়িত না হয় সেদিক নজর রাখবে এই কমিটি।

বৈঠক অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেছেন, 'এখানে আজ আশ্বস্ত করব সবাইকে যে, আমরা পুঁজিবাজারকে সুশাসন দেব এবং আমরা গভার্ন্যান্সে ভালো করব। যেসব ত্রম্নটি-বিচ্চুতি আছে, মিসম্যাচ আছে, সেগুলো আমরা টেককেয়ার করব। এভাবে আমাদের পুঁজিবাজারকে আমরা একটি শক্তিশালী বাজারে রূপান্তরিত করব।'

সবাই প্রত্যাশা করেছিল অর্থমন্ত্রীর এই বৈঠককে ঘিরে বাজার ঘুরে দাঁড়াবে, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসবে। কিন্তু তা না হয়ে উল্টো দরপতন হচ্ছে।

২০১০ সালে বড় ধসের পর ২০১৭ সাল থেকে পুঁজিবাজারে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে; ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬ হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু তার পরের বছর আবার কমতে শুরু করে সূচক।

২০১৯ সালে বাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে সবাই প্রত্যাশা করলেও তেমনটি হয়নি। দিন যত যাচ্ছে বাজারের অবস্থা ততই খারাপ হচ্ছে। ডিএসইএক্স ৫০০০ পয়েন্টের নিচে নেমে এসেছে। লেনদেন নেমে এসেছে ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার ঘরে।

বাজার পরিস্থিতি: সপ্তাহের চতুর্থ দিন বুধবার প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪১ পয়েন্ট। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ১০২ পয়েন্ট।

মঙ্গলবার ঢাকায় এই সূচক পড়েছিল ৩০ পয়েন্ট। চট্টগ্রামে কমেছিল ১১২ পয়েন্ট।

বুধবার ঢাকায় ৩৭১ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ৪৩৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।

চট্টগ্রামে বুধবার ৩৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে। মঙ্গলবার এই বাজারে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

বুধবার ডিএসইএক্স ৪০ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৮৮৮ দশমিক ০১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ১৬ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে এক হাজার ১৩০ দশমিক ৬৩ পয়েন্টে। আর ডিএস৩০ সূচক ১৫ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৭৩৫ দশমিক ৮৫ পয়েন্টে।

বুধবার ঢাকায় লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৫২টি কোম্পানি ও মিউচু্যয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৯৭টির, কমেছে ২১৪টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪১টির দর।

অন্যদিকে সিএসইতে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১০২ দশমিক ০৫ পয়েন্ট কমে ১৪ হাজার ৮৪৮ দশমিক ২২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

লেনদেনে অংশ নিয়েছে ২৬২টি কোম্পানি ও মিউচু্যয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৬৭টির, কমেছে ১৬২টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৫টির দর।

সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের মূল ক্ষেত্র হচ্ছে পুঁজিবাজার। এখান থেকে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ হয়ে সব খাতে যাবে। এটি বিশ্বের সব পুঁজিবাজারে দেখা যায়। কিন্তু আমাদের সব পুঁজি সংগ্রহের মূল উৎস হয়ে গেছে ব্যাংক খাত, যে কারণে ব্যাংক খাতে ঋণ খেলাপির পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। যখন প্রাইমারি শেয়ার বাজারে আসে তখন শেয়ারের দর অতিমূল্যায়িত করা হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি কারা মূল্যায়ন করছেন? তারা তো আর অশিক্ষিত নন। আসলে তারা কারও কাছে জবাবদিহি করতে দায়বদ্ধ নন। জবাবদিহির প্রক্রিয়া না থাকলে রাষ্ট্রব্যবস্থা, সমাজব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রক্রিয়া কোনোটাই কার্যকর থাকবে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<67337 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1