বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

খেলাপি ঋণের নতুন রেকর্ড

নতুনধারা
  ২৪ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট

রেকর্ডের পর রেকর্ড করে চলেছে দেশের খেলাপি ঋণ। আগের সকল রেকর্ড ভেঙে বছরের প্রথম প্রান্তিকে (মার্চ ২০১৯) প্রথমবারের মতো এক লাখ কোটি টাকা ছাড়ায় খেলাপি ঋণ। কিন্তু জুন প্রান্তিক শেষে এই কুঋণ (২০১৯) পৌঁছেছে নতুন উচ্চতায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ১২ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। তথ্য মতে, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১০ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা। তবে গত ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। সে সময় এক লাফে তা বৃদ্ধি পেয়েছিল ১৬ হাজার ৯৬২ কোটি টাকা। সেই তালিকায় নতুন করে যুক্ত হলে আরও দেড় হাজার কোটি টাকা।

জুন শেষে অবলোপনসহ খেলাপি ঋণের পরিমাণ দেড় লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। আগের বছরের জুন পর্যন্ত অবলোপন বাদে খেলাপি ঋণ ছিল ৯০ হাজার ৩৭২ কোটি টাকা। ফলে গত এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা।

এ সময়ে বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বাড়লেও সরকারি ও বিদেশি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ কমেছে। এতে শতকরা হিসাবে সার্বিক ব্যাংকিং খাতে এ হার কমেছে। গত মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের হার ছিল ১১ দশমিক ৮৭ শতাংশ, যা জুনে হয়েছে ১১ দশমিক ৬৯ শতাংশ। প্রতি বছর জুন ও ডিসেম্বর প্রান্তিকে তা কমে আসে। শতকরা হারের পাশাপাশি পরিমাণগত হিসাবেও কমে খেলাপি ঋণ। কিন্তু এবার জুন প্রান্তিকে শতকরা হিসাবে খেলাপি ঋণ কমলেও পরিমাণগত হিসাবে বেড়েছে।

মার্চ শেষে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪৯ হাজার ৯৪৯ কোটি টাকা বা ৭ দশমিক ০৮ শতাংশ। জুন শেষে এ খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ৫১ হাজার ৯২৪ কোটি টাকা বা ৭ দশমিক ১৩ শতাংশ। এ সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা বা ৩১ দশমিক ৫৮ শতাংশ, গত মার্চ শেষে যা ছিল ৫৩ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা বা ৩২ দশমিক ২০ শতাংশ। গত মার্চ পর্যন্ত বিদেশি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা বা ৬ দশমিক ২০ শতাংশ। জুন শেষে বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ কমে হয়েছে ২ হাজার ৫৭ কোটি টাকা বা ৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এ সময়ে বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা। আগের প্রান্তিকে তাদের খেলাপি ঋণ ছিল ৪ হাজার ৭৮৭ কোটি টাকা।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এর মানে খেলাপি ঋণের কোনো উন্নতি হয়নি। কারণ খেলাপি ঋণ আদায় করার ব্যাপারে যে সর্বাত্মক চেষ্টা করা উচিত, সেটা আসলে হ"েছ না। উল্টো ঋণখেলাপিদের ছাড় দিতে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। ঋণ অবলোপনের সময়সীমা পাঁচ বছর থেকে কমিয়ে তিন বছর করা হয়েছে। ঋণ শ্রেণিকরণের সময়সীমায়ও ছাড় দেয়া হয়েছে। এছড়া বিশেষ পুনঃতফসিল নীতিমালা করা হয়েছে। এসব সুবিধা দেয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ বলেন, এত কারচুপি করার পরও খেলাপি কমেনি। অর্থাৎ খেলাপি ঋণের সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনান হয়েছে। পুনঃতফসিলের নীতিমালা শিথিল করা হয়েছে। এর মাধ্যমে খেলাপিদের অনেক সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়েছে। তবুও খেলাপি ঋণ যখন কমেনি, এতে বুঝা যায় সুযোগ-সুবিধা দিয়ে খেলাপি ঋণ কমানো যাবে না।

বরং এই ধরনের সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে খেলাপিরা আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<63636 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1