শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতীয় রুপির মান বৃদ্ধিতে আমদানি বাণিজ্যে বিরূপ প্রভাব

জি এম আশরাফ, বেনাপোল প্রতিনিধি
  ২১ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

ভারতীয় রুপির বিপরীতে বাংলাদেশি টাকার মান কমে যাওয়ায় আমদানি বাণিজ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ভারতীয় রুপির মান বাড়ায় মার্কিন ডলারে বাজার মূল্য কমে গেছে। আর এ অবস্থার জন্য আমদানি বাণিজ্যে লোকসান গুনতে হতে পারে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশের আমদানিকারকদের ধারণা ভারতে জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ জন্য ভারতে আন্তর্জাতিক বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্টযাত্রীও অনেকাংশে কমে গেছে।

বেনাপোলের পেট্টাপোল বন্দরের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবসায়ী ফজের আলী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশি ১০০ টাকায় ভারতীয় ৮২.৫০ রুপি পাওয়া যায়। মার্কিন ১০০ ডলারে মিলছে ভারতীয় ৬৮৫০ রুপি। কিন্তু এক মাস আগে বাংলাদেশি ১০০ টাকায় ভারতীয় ৮৫ থেকে ৮৬ রুপি ছিল। আর মার্কিন ১০০ ডলারে ছিল ভারতীয় ৭২০০ রুপি।

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক জানান, ভারতীয় রুপির বিপরীতে বাংলাদেশি টাকা ও ডলারের মান কমে যাওয়ায় আমদানি বাণিজ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এতে লোকসানের আশঙ্কায় তারা আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন।

বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আজিজুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানি হয়েছে ৭৪ ট্রাক বিভিন্ন প্রকারের বাংলাদেশি পণ্য। আর ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ১৮৪ ট্রাক পণ্য।

বেনাপোল ইমিগ্রেশনের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) লিয়াজ হোসেন জানান, এর আগে প্রতিদিন এ পথে প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করেছে। এখন যাতায়াতের পরিমাণ কম।

ইমিগ্রেশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১৮ এপ্রিল বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে গেছেন ৩২৫৩ জন বাংলাদেশি, ৪৫৪ জন ভারতীয় ও অন্যান্য দেশের ৪ জন। ভারত থেকে এসেছেন ২৫৬৬ জন বাংলাদেশি, ৩৪৭ জন ভারতীয় ও অন্যান্য দেশের ৩ যাত্রী।

বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানিকারক খুলনার আছলাম হোসেন বলেন, তিনি ব্যবসায়িক কাজে ভারতে প্রতি মাসে দুই থেকে তিনবার যাতায়াত করেন। টাকার মান পড়ে যাওয়ায় তিনি চলতি মাসে একবারও যাননি।

আমদানিকারক পদ্মা এন্টারপ্রাইজের মালিক আতাউর রহমান জানান, এখন এলসি খুললে লাভ তো দূরের কথা পুঁজি বাঁচানো কষ্ট হয়ে যাবে। এ ছাড়া ভারতীয় রপ্তানিকারকরাও রুপির বাজার স্বাভাবিক হওয়ার পর এলসি খুলতে বলেছেন। তাই আপাতত আমদানি কার্যক্রম কমিয়ে দিয়েছেন।

জানা যায়, বাংলাদেশি কোনো আমদানিকারককে ভারত থেকে পণ্য আমদানির জন্য প্রথমে ভারতীয় রপ্তানিকারকের নামে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে পণ্যের বাজার মূল্যের সমপরিমাণ ডলারে এলসি ( ঋণপত্র) খুলতে হয়। ভারতীয় রপ্তানিকারকরা নিজ অর্থে ওই পণ্য কিনে বাংলাদেশে পাঠান। বন্দর থেকে পণ্য খালাস করার পর রপ্তানিকারকরা ব্যাংক থেকে আমদানিকারকের পাঠানো এলসির টাকা উত্তোলন করে থাকেন।

ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স মধুমিতা স্টোরের রেজাউল ইসলাম জানান, নির্বাচনের ফলাফল না আসা পর্যন্ত এ অবস্থার পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কম।

তিনি আরও জানান, ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপি পূর্বের তুলনায় কম থাকায় অনেকে ব্যাংক থেকে এলসির টাকা ওঠাচ্ছেন না।

এতে তারাও লোকসানের শিকার হচ্ছেন।

উলেখ্য, চলতি মাসের ১১ এপ্রিল থেকে ভারতে শুরু হয়েছে জাতীয় নির্বাচন। ১৯ মে শেষ হচ্ছে নির্বাচন। ফলাফল আসতে সময় লাগবে কমপক্ষে আরও ৫ দিন। সঙ্গে অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে চলাফেরার উপর নজরদারি থাকছে প্রশাসনের। তাই অনেকে লেনদেন কমিয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<46187 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1