বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাণিজ্যযুদ্ধের ইতিবাচক প্রভাব দেশের পোশাক খাতে

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্যযুদ্ধ ইউএন-এসকেপের রিপোটর্
ওবায়দুর রহমান
  ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধের ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে। এরই মধ্যে পোশাক শিল্পে কাযাের্দশ এবং সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) বেড়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত জাতিসংঘের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের অথর্নীতি ও সামাজিক কমিশনের (ইউএন-এসকেপ) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য ওঠে এসেছে। তবে চলমান বাণিজ্য উত্তেজনা অব্যাহত থাকলে বিশ্ব অথর্নীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলেও সতকর্ করেছে সংস্থাটি।

মূলত সস্তা শ্রমের কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। যদিও চীন যে উচ্চ মূল্যের তৈরি পোশাক রপ্তানি করত বাংলাদেশ সে ধরনের পোশাক প্রস্তুত করে না। তবে বাণিজ্যযুদ্ধের সুফল পেতে হলে শ্রমিকের দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে হবে বলে জানিয়েছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান যায়যায়দিনকে বলেন, বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে তৈরি পোশাক খাত বিদেশি বিনিয়োগ পাচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে আরও বেশি বিনিয়োগ ও কাযাের্দশ পেতে হলে তাদের পণ্যের বৈচিত্র্য বাড়াতে হবে। বিশেষ করে উচ্চ মূল্যের পণ্য উৎপাদনে মনোযোগ দিতে হবে। কারণ চীন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ মূল্যের তৈরি পোশাক রপ্তানি করত। বাংলাদেশ সেটা না করতে পারলে উদ্যোক্তারা ভিয়েতনামের দিকে চলে যাবে।

জাতিসংঘের সংস্থাাটির বাষির্ক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশিয়া-প্যাসেফিক অঞ্চলের বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মতো বড় তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে বেশি পোশাক রপ্তানি এবং এ খাতে বিদেশি বিনিয়োগের আশা করছে। সম্প্রতি ইউএন-এসকেপের ব্যাঙ্কক অফিসে এশিয়া-প্যাসেফিক ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট রিপোটর্ (এপিটিআর) শীষর্ক এ প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। এই অঞ্চলের উন্নয়নশীল দেশগুলো বিনিয়োগ আকষর্ণ করছে মূলত সস্তা শ্রমের সহজলভ্যতার জন্য। বিশেষত পোশাক শিল্প।

রিপোটের্ বলা হয়েছে, বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক খাত ২০১৭ সালে ৪২২ মিলিয়ন সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে। যা এর আগের বছরের তুলনায় এক শতাংশ বেশি। এই সময়জুড়ে দীঘের্ময়াদে অস্থিতিশীলতার শঙ্কা থাকলেও দেশের পোশাক খাত ধারবাহিকভাবে ঊধ্বর্মুখী ছিল।

রিপোটের্ আরও বলা হয়েছে, বাণিজ্যযুদ্ধ দীঘর্স্থায়ী হলে এশিয়া-প্যাসিফক অঞ্চলে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্য উত্তেজনা সরবরহ ব্যবস্থায় ইতোমধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। একই সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমতে শুরু করেছে। যা ২০১৮ সালের প্রথমাধের্র বাণিজ্য প্রবৃদ্ধির প্রতিবেদন দেখলেই বোঝা যাবে। বাণিজ্য উত্তেজনা অব্যহত থাকলে ২০১৯ সালে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ২.৩ শতাংশ পযর্ন্ত কমতে পারে। ২০১৮ সালের ৪ শতাংশ পযর্ন্ত প্রবৃদ্ধি কমছে। এর ধারবাহিকতা আগামী বছরেও অব্যহত থাকতে পারে।

বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব অব্যহত থাকলে বৈশ্বিক জিডিপি ১৫০ বিলিয়ন ডলার এবং আঞ্চলিক জিডিপি ৪০ বিলিয়ন ডলার কমে যাবে। এই অঞ্চলের রপ্তানি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান শ্রমঘন। নেতিবাচক প্রভাবের কারণে এদের অনেকেই বেকার হয়ে পড়বে।

বিশেষ করে এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলে কমপক্ষে ২.৭ মিলিয়ন কমীর্ চাকরি হারাবে। যাদের বেশিরভাগ অদক্ষ ও নারী শ্রমিক। শুল্কারোপের এই ধারা ২০১৯ সাল পযর্ন্ত অব্যহত থাকলে বৈশ্বিক জিডিপির ৪০০ বিলিয়ন ডলার এবং আঞ্চলিক জিডিপির ১১৭ বিলিয়ন ডলার কমতে পারে। কমপক্ষে ৯ মিলিয়ন কমীর্ চাকরি হারাবে। অনেকইে অন্যক্ষেত্রে চাকরি খঁুজবে।

এ প্রসঙ্গে ইএসসিএপির বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও উদ্ভাবন বিভাগের পরিচালক মিয়া মিকি বলেন, বাণিজ্যযুদ্ধের ফলে পণ্য উৎপাদনে ভিন্নতা আসবে। সীমান্তজুড়ে পণ্য বিন্যাসে পাথর্ক্য দেখা দেবে। যার কারণে মিলিয়নের বেশি মানুষ তাদের কমর্স্থল পরিবতের্ন বাধ্য হবে। নতুন অথৈর্নতিক সুযোগ সৃষ্টির জন্য আঞ্চলিক ঐক্য গুরুত্বপূণর্ হবে। তিনি আরও বলেন, এই অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অজের্নর জন্য শ্রম, শিক্ষা এবং সামাজিক নীতি পুনবির্ন্যাস ও বাস্তবায়নে নীতিনিধার্রক ও সাধারণ জনগণের সম্পৃক্ততা জরুরি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<27431 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1