আজকের যায়যায়দিন

বছরের এই সময় সাধারণত ক্ষেতের ধান ঘরে তোলার প্রস্তুতি নেয় বাও ওয়েনতাওয়ের পরিবার। কিন্তু এ বছর পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। পোয়াং লেকের কাছে বাওদের ৩৬ একরসহ দক্ষিণ চীনের বিস্তীর্ণ ফসলি জমি এখন বন্যার পানিতে নিমজ্জিত। বাও জানান, বন্যার আগে ধানগুলো প্রায় পরিপক্ব ও ঘরে তোলার উপযুক্ত হয়েছিল। কিন্তু এর আগেই নষ্ট যায় তাদের সব ফসল।

গত মাসে বন্যার বাড়ন্ত পানি জিংয়াশি প্রদেশের পোয়াং লেকের তীর উপচে 'মাছ ও ধানের ভূমি'খ্যাত এই অঞ্চলের হাজার হাজার একর কৃষিজমি পস্নাবিত করে। মূলত পোয়াং লেকসহ বৃহত্তর ইয়াংজি নদীর অববাহিকায় উৎপন্ন হয় চীনের মোট ধানের ৭০ শতাংশ। কিন্তু এ বছর অঞ্চলটিতে বাও ও তার বাবার মতো কৃষকদের অভাবনীয় ক্ষতির মুখে ফেলে দিয়েছে বন্যা। পানিতে যে শুধু তাদের উত্তোলনযোগ্য ফসলেরই ক্ষতি হয়েছে, তা নয়। বন্যার ব্যাপকতায় এ বছর তাদের পক্ষে জমিতে আর কোনো ফসল উৎপাদন করাও সম্ভব হবে না। বাও বলেন, জমিগুলো এখনো পানির নিচে। এর মানে হলো, পুরো বছর এবার আমাদের ফসলহীন থাকতে হবে। অথচ এরই মধ্যে তার পরিবারকে ২৮ হাজার ডলার সমপরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে।

মূলত বহু বছরের মধ্যে বন্যার কারণে এমন ফসলের ক্ষতি চীনে আর দেখা যায়নি। সব মিলিয়ে এবারের বন্যায় মোট নিমজ্জিত ফসলি জমির পরিমাণ এক কোটি ৩০ লাখ একর, যা আকারে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার সমান। চীনের জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই দুর্যোগে কৃষিজমি, সড়ক ও অন্য সম্পদের মোট দুই হাজার ১০০ কোটি ডলারের প্রত্যক্ষ ক্ষতি হয়েছে। বাওয়ের মতো কৃষকসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার কারণে এরই মধ্যে বেশ নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে চীনের অর্থনীতি। এর ওপর এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির জন্য বড় ধরনের দুঃসংবাদ হিসেবে হাজির হয়েছে। এ অবস্থায় অন্য দেশে থেকে বিপুল পরিমাণ আমদানির পাশাপাশি আগে থেকে মজুতকৃত খাদ্যশস্য বাজারে ছেড়ে দেয়ার মধ্য দিয়ে বেইজিং এখন পর্যন্ত খাদ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে পেরেছে। কিন্তু সমস্যা হলো, এ ব্যবস্থা দীর্ঘ সময় ধরে অব্যাহত রাখা সম্ভব না-ও হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমছেই