বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

৩০ বছরের মধ্যে প্রথম মন্দায় ফিলিপাইন

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৯ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

গত প্রান্তিকে রেকর্ড সংকোচনের জেরে ৩০ বছরের সর্বোচ্চ মন্দায় পড়েছে ফিলিপাইনের অর্থনীতি। শুক্রবার প্রকাশিত উপাত্তে এ তথ্যগুলো উঠে এসেছে। নভেল করোনাভাইরাস মহামারিতে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় লাখো কর্মী বেকারত্ববরণ করায় হুমকিতে পড়েছে উদীয়মান দেশটির অর্থনীতি। খবর এএফপি। ফিলিপাইনের পরিসংখ্যান কর্তৃপক্ষ জানায়, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে তাদের মোট দেশীয় উৎপাদন (জিডিপি) বছরওয়ারি ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। কভিড-১৯ সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন ঘোষণায় বিশ্বজুড়ে বেশির ভাগ মানুষ ঘরে অবস্থান করায় অর্থনীতিতে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ফিলিপাইনের অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছিল শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ। ১৯৮১ সালে স্বৈরশাসক ফার্দিনান্দ মার্কোসের শাসনকাল থেকে অর্থনৈতিক উপাত্ত রাখার পর সর্বোচ্চ মন্দায় পড়েছে ফিলিপাইনের অর্থনীতি। গত তিন দশকের মধ্যে এই প্রথম মন্দায় পড়ল দেশটি। চলতি সপ্তাহে দেশটিতে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ১৫ হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ায় সামনে কঠিন সময় অপেক্ষা করছে দ্বীপরাষ্ট্রটির। সংক্রমণ ঠেকাতে নেয়া বিভিন্ন বিধি-নিষেধের কারণে এমনিতেই দেশটির অর্থনীতি পঙ্গু হয়ে পড়েছে। ফিলিপাইনের আর্থ-সামাজিক পরিকল্পনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব কার্ল চুয়া বলেন, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে অর্থনীতিতে অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব রেখেছে কভিড-১৯ মহামারি। তবে তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, অতীতের অত্যন্ত বিপর্যয়ের চেয়ে ভিন্ন হচ্ছে বর্তমানে বেশ শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে ফিলিপাইন। নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। ম্যানিলা ও আশপাশের চারটি প্রদেশের ২ কোটি ৭০ লাখেরও বেশি মানুষ লকডাউনে রয়েছে। গত মঙ্গলবার দুই সপ্তাহের জন্য নতুন করে এ লকডাউন আরোপ করা হয়েছে। প্রথম লকডাউনের ফলে লাখো কর্মী ছাঁটাইয়ের ফলে নতুন করে ফের বিধিনিষেধ আরোপে অনিচ্ছুক ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে। তিনি মনে করছেন যে দেশটি আবার লকডাউনের সামর্থ্য রাখছে না। গত রোববার দুতার্তে বলেন, সমস্যা হচ্ছে আমাদের হাতে আর টাকাকড়ি নেই। আমি আর নাগরিকদের হাতে খাবার ও অর্থ তুলে দিতে পারছি না। বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ কমে যাওয়ায়ও দেশটির অর্থনীতি মারাত্মকভাবে সংকুচিত হয়েছে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের মাধ্যমে দেশটির ভোক্তাব্যয় চাঙ্গা হতো, যা দেশটির প্রবৃদ্ধির প্রধান চালিকাশক্তি ছিল। ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বরাতে জানা গেছে, চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে রেমিট্যান্সের পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। হাজারো নাবিক, ক্লিনার ও নির্মাণ শ্রমিক তাদের চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরে এসেছেন। \হদেশটির পরিসংখ্যান বিভাগ বলছে, দ্বিতীয় প্রান্তিকে ভোক্তাব্যয় ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। ফিলিপাইনের একটি বেসরকারি ব্যাংকের শীর্ষ অর্থনীতিবিদ এমিলিও নেরি বলেন, অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন ও স্বাস্থ্য খাতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া জটিল আকার ধারণ করেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে