নভেল করোনাভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাব থেকে অর্থনীতিকে টেনে তুলতে সরকারি ব্যয় বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার সরকার। আর এ উদ্যোগকে সহায়তার লক্ষ্যে একটি সংশোধিত বাজেটের অনুমোদন দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো। খবর বুমবার্গ।
এ বাজেট প্রণোদনার ফলে এখন অর্থনীতিকে চাঙা করতে ২ হাজার ৭৩৯ লাখ ২০ হাজার কোটি রুপিয়াহ (১৯ হাজার ৩০০ কোটি ডলার) খরচ করতে পারবে সরকার। এর আগে গত মার্চে ২ হাজার ৬১৩ লাখ ৮০ হাজার কোটি রুপিয়াহ সরকারি ব্যয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছিল।
বুধবার নতুন সংশোধিত বাজেটের ফরমানে স্বাক্ষর করেন উইদোদো। এতে সরকারের রাজস্ব আয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছে ১ হাজার ৬৯৯ লাখ ৯০ হাজার কোটি রুপিয়াহ, যা আগের নির্ধারিত ১ হাজার ৭৬০ লাখ ৯০ হাজার কোটি রুপিয়ার চেয়ে কম। চলতি বছর বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩৯ লাখ ২০ হাজার কোটি রুপিয়াহ, যা ইন্দোনেশিয়ার জিডিপির ৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতি ইন্দোনেশিয়ার নীতিনির্ধারকরা করোনা মোকাবিলায় এখন পর্যন্ত ৬৯৫ লাখ ২০ হাজার কোটি রুপিয়াহর প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এছাড়া দেশটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বাঁচাতে ও কর্মসংস্থানের সংকোচন কমাতে সরকারি ব্যয় বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। এ লক্ষ্যে আর্থিক ঘাটতির সর্বোচ্চ সীমার বাধ্যবাধকতাও শিথিল করেছে উইদোদো প্রশাসন।
ইন্দোনেশিয়ার অর্থমন্ত্রী শ্রী মূল্যানি বলেছেন, দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্থনীতিতে প্রায় ৩ দশমিক ৮ শতাংশ সংকোচন হলেও আর্থিক প্রণোদনার কারণে তৃতীয় প্রান্তিক থেকে প্রবৃদ্ধি বাড়তে পারে।
এদিকে আরএইচবি ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের অর্থনীতিবিদ আহমেদ নাজমি ইদ্রিস বলেছেন, 'সামাজিক দূরত্বের বিধিনিষেধ শিথিল করার কারণে করোনার সংক্রমণ কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ফলে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতি কিছুটা কমে যেতে পারে এবং তা পূর্বাভাসের চেয়ে কম হতে পারে।' আগে ১ শতাংশ সম্প্রসারণের পূর্বাভাস দিলেও আরএইচবি এখন বলছে, চলতি বছর ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতি ১ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে।
ইদ্রিস বলেছেন, 'করোনা সংক্রমণ প্রতিদিনই বাড়ছে। ফলে সরকার কিছু ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ অব্যাহত রাখতে বাধ্য হতে পারে। এতে অর্থনীতিও চাপে পড়তে পারে।'
জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত বিশ্বের চতুর্থ জনবহুল দেশ ইন্দোনেশিয়ায় কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে ৫১ হাজার ৪২৭ জন। এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছে ২ হাজার ৬৮৩ জন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ইন্দোনেশিয়াতেই করোনার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি।