বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজার

বাড়তি সরবরাহে কমতির দিকে মসলার দাম

যাযাদি ডেস্ক
  ২১ জুন ২০২০, ০০:০০

একদিকে দেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকে আমদানি ও সরবরাহে বিঘ্ন, অন্যদিকে রোজার ঈদের আগে বাড়তি চাহিদা-এ দুইয়ের জের ধরে পাইকারি বাজারে মসলার দাম বেড়ে যায়। তবে রোজার ঈদের পর থেকে দেশের স্থলবন্দরগুলো দিয়ে আমদানি শুরু হয়েছে। বাজারে বেড়েছে ভারতীয় মসলার সরবরাহ। এর ফলে পাইকারি পর্যায়ে মসলার দাম কমতে শুরু করেছে। আসন্ন কোরবানি ঈদের আগে চাহিদা ও বেচাকেনা বাড়লেও দাম কমতির দিকে রয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে কয়েক মাস ধরে ভারত থেকে আমদানি করা শুকনো মরিচ কেজিপ্রতি ২৫০ টাকায় বিক্রি হয়ে আসছিল। বর্তমানে পণ্যটির দাম কমতে কমতে ১৮৫ টাকায় নেমে এসেছে। এছাড়া দেশে উৎপাদিত শুকনো মরিচের দাম কমে দাঁড়িয়েছে কেজিপ্রতি ১১৫ টাকায়।

গতকাল খাতুনগঞ্জের আড়তগুলো ঘুরে প্রতি কেজি দেশে উৎপাদিত হলুদ ১০৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। পণ্যটির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। ভারত থেকে আমদানি করা প্রতি কেজি হলুদ বিক্রি হয় ৯৫ টাকায়। দাম কমেছে কেজিতে ২৫ টাকা।

একইভাবে ভারত থেকে আমদানি করা জিরার দাম কেজিপ্রতি ৫৫ টাকা কমে ২৮৫ টাকায় নেমে এসেছে। আফগানিস্তান থেকে আমদানি করা জিরা ২০ টাকা কমে কেজিপ্রতি ৩৪৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। দাম কমেছে দারুচিনির। আমদানি করা মসলাপণ্যটির দাম ২০-৩০ টাকা কমে কেজিপ্রতি ২৯০ টাকায় নেমে এসেছে। খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারে বেশির ভাগ মসলাপণ্যের দাম নিম্নমুখী রয়েছে। মিষ্টি জিরার দাম ১০ টাকা কমে কেজিপ্রতি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুবোখারা ২০ টাকা কমে ৩০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।

এছাড়া কাঠবাদাম ৪০ টাকা কমে কেজিপ্রতি ৬৮০ টাকায়, কাজুবাদাম ২০-৩০ টাকা কমে কেজিপ্রতি ৮০০ টাকায়, ধনিয়া ১০ টাকা কমে কেজিপ্রতি ৭৫ টাকায়, দেশে উৎপাদিত প্রতি কেজি বাদাম ১০ টাকা কমে ১০২ টাকায়, ভারত থেকে আমদানি করা বাদাম ৮-১০ টাকা কমে কেজিপ্রতি ১০৭ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।

তবে বেশির ভাগ মসলাপণ্যের দাম কমলেও কোরবানির ঈদের আগে লবঙ্গ, গোলমরিচ, কালিজিরা, মেথি ও তেজপাতার দাম কিছুটা বাড়তির দিকে আছে। গতকাল পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি গোলমরিচ বিক্রি হয় ৩৯০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও একই মানের গোলমরিচ বিক্রি হয়েছিল ৩৬০ টাকা কেজিতে। লবঙ্গের দাম কেজিপ্রতি ৫০-৬০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৮০ টাকায়। তেজপাতা ১০ টাকা বেড়ে ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা যায়।

এদিকে মেথির কেজি ৫০-৬০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকায় উঠেছে। অন্যদিকে কালিজিরার দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২৪০ টাকায়। এছাড়া ভারত ও মিসর থেকে আমদানি করা কালিজিরার দাম কেজিপ্রতি ৯০-১০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকায়।

খাতুনগঞ্জের পাইকারি মসলা ব্যবসায়ী আবদুর রাজ্জাক বণিক বার্তাকে বলেন, রোজার ঈদের আগে দেশে মসলাপণ্যের বাড়তি চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ঘাটতি ছিল। ফলে দাম বেড়েছিল। তবে ঈদের পর ভারত থেকে মসলাসহ সব ধরনের পণ্য আমদানি শুরু হয়েছে। এ কারণে পাইকারি বাজারে মসলাপণ্যের দাম প্রতিদিনই কমছে। কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে মসলাপণ্যের চাহিদা বাড়লেও বাড়তি সরবরাহের জের ধরে দাম কমতে শুরু করেছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের মসলার বাজার অনেকটাই চীন ও ভারতনির্ভর। নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে আমদানি কমে যায়। চীন থেকে পণ্য আমদানি অব্যাহত থাকলেও খালাসে দীর্ঘসূত্রতায় সরবরাহ সংকট ছিল। ভারত থেকে আমদানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে বাজারে বাড়তি চাপ তৈরি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে কয়েক মাস ধরে মসলাপণ্য ও শুকনো খাবারের দাম ক্রমান্বয়ে বাড়ছিল। তবে ভারতীয় পণ্য সরবরাহ শুরু হলে বাজারে ফের স্থিতিশীলতা ফিরে আসছে। এ কারণে দাম কমতে কমতে আগের অবস্থানে ফিরে যাচ্ছে। কোরবানির ঈদের পর এসব পণ্যের দাম আরও সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<103233 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1