শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মুশফিকের চিরস্মরণীয় একটি রান

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ০৯ মে ২০২০, ০০:০০

প্রায় দেড় দশকের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে অসংখ্য ম্যাচ খেলেছেন মুশফিকুর রহিম। সব ফরম্যাট মিলিয়ে প্রায় ১২ হাজার রান করেছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলোতে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ১১৩৬টি চার ও ১৪৬টি ছক্কা মেরেছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। ম্যাচ উইনিং শটও খেলেছেন অনেকবার। তবে সব ছাপিয়ে মুশফিকের কাছ চিরস্মরণীয় হয়ে আছে একটি দৌড়ে নেওয়া 'এক' রান।

২০১৩ সালের শ্রীলংকা সফরে প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসাবে ইনিংসে দুইশত রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন মুশফিক। দৌড়ে একটি সিঙ্গেল নিয়ে এই কীর্তি গড়েন তিনি। এর আগে অনেকবারই এই ইনিংসকে নিজের বিশেষ ইনিংস বলে মন্তব্য করেছেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। এবার সেই ২০০ রান স্পর্শের জন্য নেওয়া এক রানকে নিজের চিরস্মরণীয় রান বলেছেন সাবেক টাইগার অধিনায়ক। অর্থাৎ করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে নিলামে তোলা সেই ঐতিহাসিক ব্যাটেই এসেছে চিরস্মরণীয় একটি রান।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ডেইলি ক্রিকেট আয়োজিত এক সরাসরি আড্ডায় মুশফিক বলন, 'প্রিয় শট মানে কিন্তু এক রানও হতে পারে। আমার জন্য এটা হলো প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করার সেই সময়। সেই এক রানটা আমার কাছে প্রিয় ও চিরস্মরণীয়, যেটা কুলাসেকারার বলে পয়েন্টে ঠেলে দিয়ে নিয়েছিলাম।'

এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান আরও বলেন, 'আমি ১৯৯ রানে থাকার পরও পয়েন্টের ফিল্ডারকে কে যেন পিছিয়ে দিয়েছিল। আমি জানি না তিনি কে, তবে তাকে ধন্যবাদ। যতই আমি চার-ছয় মারি না কেন, তখন যে এক রানটা নিয়েছিলাম ওটা সব সময়ই আমার কাছে বিশেষ একটা রান হয়ে থাকবে।'

করোনাভাইরাসের কারণে অসহায় হয়ে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষ। তাদের সহযোগিতায় ক্রীড়া স্মারক নিলামে তুলছে ক্রীড়াঙ্গনের তারকা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার নিলামে উঠতে যাচ্ছে মুশফিকুর রহিমের ইতিহাস গড়া ডাবল সেঞ্চুরি করা ব্যাট।

শনিবার রাত ১০টায় 'স্পোর্টস ফর লাইফ' নামে একটি অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এই নিলাম শুরু হবে। চলবে মঙ্গলবার রাত ১০টা পর্যন্ত। মুশফিকের ব্যাটের সঙ্গে নিলামে উঠছে মোসাদ্দেক হোসেনের ব্যাট। যা দিয়ে গত বছর আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে ২৭ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ জেতান এ ব্যাটসম্যান।

সামর্থ্যবানদের ব্যাটটি কেনার আহ্বান জানিয়ে মুশফিক বলেছেন, 'ব্যাটটি আমার কাছে স্পেশাল। এরকম একটা ইতিহাসের সঙ্গে নিজের নাম জড়িয়ে আছে ওই ব্যাট দিয়েই। অনেকে চাইলেও এমন কিছুর সৌভাগ্য হয় না। প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিয়ান তো আর কেউ হতে পারবে না। আমার খুবই ভালোলাগার একটি ব্যাট এটি। কিন্তু মানুষের জীবনের চেয়ে বড় কিছু নেই। তাই এটিই নিলামে তুলতে যাচ্ছি'।

নিলামের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ মুশফিকের ব্যাট। ২০১৩ সালে শ্রীলংকার বিপক্ষে গলে এই ব্যাট দিয়েই তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেটকে উপহার দিয়েছিলেন প্রথম টেস্ট ডাবল সেঞ্চুরি।

মুশফিক আরও বলেন, 'আমি সবাইকে অনুরোধ করব, আমার ব্যাট ভেবে না হোক, অনেক বড় কোনো ক্রিকেটারের ব্যাট ভেবে বা মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথা ভেবে সবাই এগিয়ে আসবেন। কারণ, যত বেশি মূল্য পাওয়া যাবে নিলামে, ততই বেশি মানুষকে সহায়তা করা যাবে।'

ক্রিকেট মাঠের খুব স্বাভাবিক একটি ঘটনা স্স্নেজিং বা প্রতিপক্ষকে উত্ত্যক্ত করা। বৈশ্বিক ক্রিকেটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে এর পরিমাণ। অজি ক্রিকেটাররা তো স্স্নেজিংকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের খুব বেশি স্স্নেজিং করতে দেখা না গেলেও প্রতিপক্ষের সঙ্গে খুনসুটি কম করেন না তারাও। এবার ভারতের বিপক্ষে একটি ম্যাচে স্স্নেজিংয়ের গল্প শুনিয়েছেন টাইগার ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম।

২০০৭ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় রাউন্ডে উত্তীর্ণ হয়েছিল বাংলাদেশ। সেবার গ্রম্নপপর্বে ভারতকে ৫ উইকেটে হারায় টাইগাররা। মূলত এই জয়ই হট ফেবারিট ভারতকে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দেয়। অন্যদিকে সহজে পরের রাউন্ডে যায় হাবিবুল বাশারের দল।

ভারতকে হারানো সেই ম্যাচে বাংলাদেশকে একাই ভুগিয়েছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলি। বর্তমান বিসিসিআই সভাপতি সেদিন ১২৯ বল খেলে করেছিলেন ৬৬ রান। মূলত তার এই ইনিংসের কল্যাণেই ১৯১ রান পর্যন্ত যেতে পারে আগের আসরের রানার্সআপ দলটি। সৌরভের ব্যাটিং দেখে তার সঙ্গে রসিকতা করে উত্ত্যক্ত করেছিলেন উইকেটকিপার মুশফিক।

ভক্তদের সঙ্গে সেই ঘটনা শেয়ার করে মুশফিক বলেন, 'আসলে কাউকে কখনো খোঁচা দিয়ে স্স্নেজ করা হয়নি। আমি ওরকম করি না। তবে টেকটিক্যাল স্স্নেজিং করা হয়, এটা ক্রিকেটের অংশ। আমার ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে স্স্নেজিংয়ের কথা মনে আছে। বিশ্বকাপে সেটা ছিল আমার প্রথম ম্যাচ। সৌরভ গাঙ্গুলি অনেকক্ষণ ধরে ব্যাটিং করছিলেন। ওই ম্যাচে উনি ৬৬ রান করেন।'

মুশফিক যোগ করেন, 'তখন রফিক ভাই বা রাজ্জাক ভাই বল করছিল। উনি তো কলকাতার, বাংলা অবশ্যই ভালোভাবে বোঝেন। তাই আমি বললাম- দাদা, এত মারছেন কেন! আমরা আপনার ছোটভাই না? এত মারলে কীভাবে হবে! আমাদের একটু ছাড়-টাড় দেন। তখন তিনি কিছু বলেননি। কিন্তু স্ট্রাইক ঘুরিয়ে আবার যখন আমার প্রান্তে আসলেন তখন বললেন, না না, তোরা এখন আর ছোট নেই। তোরা এখন অনেক বড় হয়ে গেছিস। তোদের আর ছাড় দেওয়া যাবে না।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<98804 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1