অস্ট্রেলিয়ার ঘরের মাঠে প্রতিপক্ষ হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হওয়া পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজগুলোর একটি। ব্যাট-বলের খেলার সঙ্গে শরীর আর মুখের ভাষাতেও প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে যে ওস্তাদ তারা! কিন্তু সেই চিরচেনা অস্ট্রেলিয়াকে ভারতের বিপক্ষে দেখতে পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন তাদের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক।
বিশেষ করে ঘরের মাঠে ২০১৮-১৯ মৌসুমে ভারতের কাছে টেস্ট সিরিজে নাস্তানাবুদ হয়েছিল স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। সিরিজ হেরেছিল ২-১ ব্যবধানে। সেই সিরিজে অস্ট্রেলিয়া নিজেদের স্বভাবসুলভ আগ্রাসী মনোভাব দেখায়নি বলে মনে করছেন মাইকেল ক্লার্ক। বিশ্বকাপজয়ী সাবেক অস্ট্রেলিয়ান দলনেতার মতে, বিরাট কোহলিদের না চটানোর পেছনের কারণ হিসেবে প্যাট কামিন্সদের মাথায় ছিল মিলিয়ন ডলারের আইপিএল চুক্তি!
স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নারকে ছাড়া ওই সিরিজে দিশেহারা ছিল অজিরা। চার টেস্টের সিরিজে এক ম্যাচ জিতলেও বাকি তিনটিতে তাদের অবস্থা ছিল যাচ্ছেতাই। বৃষ্টিতে এক টেস্ট বাঁচাতে পারলেও আরও দুই টেস্টে হেরে প্রথমবারের মতো দেশের মাটিতে ভারতের কাছে সিরিজ খোয়াতে হয় তাদের। ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়াকে পঞ্চম বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়ক সোজাসাপ্টাই তাই বলেছেন, ক্রিকেটে ভারতের আর্থিক শক্তির কথা মাথায় রেখেই ওদের সঙ্গে পালস্না দিতে বুকে বল থাকে না অনেকের, 'সবাই জানে আর্থিক দিক থেকে ভারত খেলাটায় কতটা শক্তিশালী। আন্তর্জাতিক দিক বিচার করলে বা আইপিএলের কথা মাথায় নিলেও। আমি অনুভব করেছি যে, অস্ট্রেলিয়া বা অন্য দেশের খেলোয়াড়রা ভারতের সঙ্গে খেললে কোহলি বা অন্য ভারতীয় ক্রিকেটারদের স্স্নেজিং করতে ভয় পায়। কারণ এপ্রিল মাসে আবার ওদের সঙ্গে আইপিএলে খেলতে হয়।'
২০১৯ সালের ডিসেম্বর আইপিএলের সর্বশেষ নিলামে রমরমা অবস্থা ছিল অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদের। রেকর্ড সাড়ে ১৫ কোটি রুপিতে কলকাতা নাইট রাইডার্সে (কেকেআর) নাম লেখান অজি পেসার প্যাট কামিন্স। ১০ কোটি ৭৫ লাখ রুপিতে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবে ভেড়েন গেস্নন ম্যাক্সওয়েল। ন্যাথান কোল্টার-নাইলকে ৮ কোটি রুপিতে দলে নেয় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।
এছাড়া মার্কাস স্টোয়নিকসকে ৪ কোটি ৮০ লাখ রুপিতে দলে নিয়েছে দিলিস্ন ক্যাপিটালস। অ্যারন ফিঞ্চ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি) থেকে পাচ্ছেন ৪ কোটি ৪০ লাখ রুপি। আরও দল পেয়েছেন আলেক্স কেয়ারি (২ কোটি ৪০ লাখ রুপি, দিলিস্ন ক্যাপিটালস), কেন রিচার্ডসন (৪ কোটি রুপি, আরসিবি), মিচেল মার্শ (২ কোটি রুপি, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ), ক্রিস গ্রিন (২০ লাখ, কেকেআর), জস ফিলিপ (২০ লাখ রুপি, আরসিবি)।
তবে এদের মধ্যে যারা ভারতের বিপক্ষে সিরিজে খেলেছেন, আর তাই তাদের মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মাইকেল ক্লার্ক, 'এই খেলোয়াড়দের মনোভাব এমন ছিল, 'আমি কোহলিকে স্স্নেজিং করতে যাব না। আমি চাই, সে আমাকে ব্যাঙ্গালুরুতে ডাকুক। তাহলে, আমি ছয় সপ্তাহে এক মিলিয়ন ডলার পেয়ে যাব।' আমার মনে হয়, অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রা ওই সময়টাতে নমনীয় ছিল, যেমনটা তাদের দেখে আমরা অভ্যস্ত নই।'