প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) তারকাসমৃদ্ধ আক্রমণভাগকে বেঁধে রেখে দাপুটে ফুটবল খেলল বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। আর্লিং ব্রাট হরল্যান্ডের জোড়া গোলের মাঝে নেইমার-এমবাপে জুটিতে ক্ষণিকের জন্য স্বস্তি ফেরে পিএসজি শিবিরে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। দারুণ জয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে ওঠার পথে এক ধাপ এগিয়ে গেছে জার্মান ক্লাবটি। মঙ্গলবার রাতে ঘরের মাঠে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগে ২-১ গোলে জিতেছে ডর্টমুন্ড। তিনটি গোলই হয় দ্বিতীয়ার্ধে। পিএসজির একমাত্র গোলটি করেন চোট কাটিয়ে ফেরা নেইমার।
আক্রমণ-পালটা আক্রমণে শুরু থেকে জমে ওঠা লড়াইয়ের ২৭তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো ডর্টমুন্ড। তবে ডি-বক্সে ঢুকে ইংলিশ মিডফিল্ডার জেডন স্যানচোর নেওয়া কোণাকুণি শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক কেইলর নাভাস। আট মিনিট পর আরেকটি ভালো সুযোগ পেয়ে জোরালো শটে পাশের জাল কাঁপান জানুয়ারির দলবদলে ডর্টমুন্ডে আসা হরল্যান্ড। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম পাঁচ মিনিটে দুবার প্রতিপক্ষের রক্ষণে ভীতি ছড়ায় ডর্টমুন্ড; কিন্তু শেষে তালগোল পাকিয়ে সুযোগ হাতছাড়া করে তারা। পালটা আক্রমণে ৬৪তম মিনিটে প্রথম উলেস্নখযোগ্য সুযোগ পায় পিএসজি।
তবে গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে হতাশ করেন এমবাপে। ৬৯তম মিনিটে সাফল্যের দেখা পায় ম্যাচজুড়ে দাপুটে ফুটবল খেলা ডর্টমুন্ড। গেররেইরোর শট প্রতিপক্ষের পায়ে লেগে গোলমুখে বল পেয়ে যান হরল্যান্ড। ঠান্ডা মাথায় আলতো টোকায় গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন নরওয়ের এই স্ট্রাইকার। ৭৫তম মিনিটে খেলার ধারার বিপরীতে সমতায় ফেরে পিএসজি। গোলটির কারিগর এমবাপে; দুই ডিফেন্ডারের বাধা এড়িয়ে ফরাসি ফরোয়ার্ডের বাড়ানো বল গোলমুখে পেয়ে অনায়াসে জালে ঠেলে দেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড নেইমার।
ডর্টমুন্ডের জার্সিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অভিষিক্ত হরল্যান্ডের একক নৈপুণ্যে পিএসজির স্বস্তি দুই মিনিটও স্থায়ী হয়নি। সতীর্থের পাস প্রথম ছোঁয়ায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ২২ গজ দূর থেকে বুলেট গতির শটে দলকে আবারও এগিয়ে নেন ১৯ বছর বয়সী স্ট্রাইকার। ডর্টমুন্ডের হয়ে সাত ম্যাচে তার গোল হলো ১১টি। ইউরোপ সেরার মঞ্চে তরুণ হরল্যান্ডের গোল হলো সাত ম্যাচে ১০টি। বায়ার্ন মিউনিখের রবের্ত লেভানদোভস্কির সঙ্গে যুগ্মভাবে উঠে বসলেন আসরের গোলদাতার তালিকার শীর্ষে। হরল্যান্ড আগের আট গোল করেছিলেন সাবেক দল সালসবুর্কের হয়ে। পিছিয়ে পড়ার খানিক পরেই আরেকটি ভালো সুযোগ পান নেইমার। কিন্তু তার জোরালো শট পোস্টে বাধা পেলে তেতো স্বাদ নিয়ে ফিরতে হয় ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের। আগামী ১২ মার্চ ঘরের মাঠে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে ফিরতি লেগের লড়াইয়ে নামবে পিএসজি।
এই লেগে কৌশলগত বেশ কিছু ভুল করেছেন পিএসজির কোচ টমাস টুখেল। স্ট্রাইকারদের বল পাঠানোর জন্য মিডফিল্ডে তেমন কেউ ছিল না, ৩-৪-২-১ ছকে দুই অকার্যকর উইংব্যাক টমাস মুনিয়ের ও লেভিন কুরজাওয়ার জন্য একজন মিডফিল্ডার কম খেলিয়েছেন টুখেল। ফলে স্ট্রাইকার হিসেবে খেলা কিলিয়ান এমবাপে গোটা ম্যাচ মিডফিল্ড থেকে তেমন সহায়তা পাননি। নেইমার ও ডি মারিয়ার সঙ্গে এমবাপের যোগাযোগ ছিন্ন করার জন্য তেমন খাটনি করতে হয়নি ডর্টমুন্ডকে। এই কারণেই ম্যাচ হেরে বসেছে পিএসজি।