বড় ইনিংস খেলতে হলে বড় জুটির বিকল্প নেই। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সঙ্গে ওয়ালটনের সম্পর্কটা এখন তেমনই; বড় জুটির এবং আস্থার এক নাম। জাতীয় ক্রিকেট লিগকে (এনসিএল) দেশের প্রথম শ্রেণির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই টুর্নামেন্টে এবারও জুটি হিসেবে বিসিবি পাশে পাচ্ছে ওয়ালটনকে। শুধু এবারই নয়, সামনের দুই আসরের জন্যও বিসিবি-ওয়ালটনের এই জুটি দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে।
ক্রিকেটার গড়ার জায়গা জাতীয় লিগ। আর এ জাতীয় লিগ ভুগতে থাকে স্পনসরের অভাবে। আর তাই বারবার হাত বাড়িয়ে দেয় ক্রীড়াবান্ধব প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। এবারও জাতীয় ক্রিকেট লিগের ২১তম আসরের স্পনসর ওয়ালটন। অনিশ্চয়তায় থাকা এই জাতীয় লিগে শেষ পর্যন্ত পৃষ্ঠপোষকের অভাব ঘুচল।
সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার সেই অনুষ্ঠানে ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক উদয় হাকিম বলছিলেন- 'মাইলেজের জন্য নয়, দেশের ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা এবং একধরনের দায়বদ্ধতা থেকেই ওয়ালটন দীর্ঘসময় ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গী হয়ে থাকছে। এই বছরসহ পরের দুই বছরও এনসিএলের স্পন্সর হিসেবে থাকছে ওয়ালটন। ঘরোয়া ক্রিকেটে যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা যায়, মানসম্পন্ন ক্রিকেট হয় তাহলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও বাংলাদেশ ভালো করবে।'
উদয় হাকিম আরও বলেন, 'বাংলাদেশ ক্রিকেটের ঘরোয়া টুর্নামেন্টগুলোর সাথে আমরা আছি। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে স্পনসরের অভাব হয় না। কিন্তু ঘরোয়া টুর্নামেন্টে স্পনসরের অভাব দেখা যায়। আর তাই আমরা চেষ্টা করছি খেলোয়াড় তৈরির এই জায়গায় অবদান রাখতে। এবারের আসরে জাতীয় দলের বেশ কিছু খেলোয়াড় নিয়মিত অংশগ্রহণ করবে। তাই এবারের জাতীয় লিগটা একটু বিশেষ। গত ৮ বছর ধরেই এই জাতীয় লিগে স্পনসরশিপ করে আসছে ওয়ালটন।'
আগামী ১০ অক্টোবর থেকে দেশের চারটি শহরে শুরু হচ্ছে দেশের প্রথম শ্রেণির গুরুত্বপূর্ণ এই আসর। ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও চট্টগ্রামে হবে প্রথম শ্রেণির এই ক্রিকেট। এবারের এনসিএল শুরুর বেশ আগে থেকেই বিভিন্ন কারণে আলোচনায়। ক্রিকেটারদের ফিটনেস বা বিপ টেস্ট নিয়ে বিসিবি এবার বেশ শক্ত অবস্থানে। সেই সঙ্গে বিসিবি সাফ জানিয়ে দিয়েছে- জাতীয় দলের খেলা না থাকলে জাতীয় দলের সব খেলোয়াড়ের এবারের লিগে খেলাটা বাধ্যতামূলক। নভেম্বরেই ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজ খেলতে যাবে বাংলাদেশ। দুই টেস্টের সেই সিরিজের জন্য এনসিএলে জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা যাতে ভালো প্রস্তুতি নিতে পারেন সেই চিন্তা করেই এই আসরের সূচি সাজানো হয়েছে।
জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া ক্রিকেটাররা এবারের এনসিএলের শুরুর পর্বকে টার্গেট করছেন। এই দুই পর্বে চমকপ্রদ পারফরম্যান্স দেখাতে পারলে জাতীয় দলের প্রবেশদ্বার খুলে যেতে পারে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের। নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণের জন্য মুখিয়ে আছেন জুনিয়র ক্রিকেটাররাও। সবকিছু মিলে একটা চ্যালেঞ্জের আবহ তৈরি হয়েছে এবারের এনসিএল ঘিরে।
আর তাই বিসিবিও আশায় আছে- এবার লিগ জমাট হবে। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন এনসিএলের স্পন্সর ঘোষণার অনুষ্ঠানে ওয়ালটনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, 'দীর্ঘসময় ধরে ওয়ালটন আমাদের ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও সহায়ক সঙ্গী হয়ে আছে।'
সুজন বলছিলেন, 'বিভিন্ন কারণে এবারের এনসিএল বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে। ভালো উইকেটে যাতে খেলা হয়, সেই নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বিসিবির পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে। আশা করছি এবারের লিগে প্রতিযোগিতা এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।'
বিসিবির কার্যালয়ে এই স্পন্সর ঘোষণা অনুষ্ঠানে ওয়ালটনের অতিরিক্ত পরিচালক মিলটন আহমেদ এবং এনসিএলের সদস্য সচিব পাভেলও উপস্থিত ছিলেন।