শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শোকাবহ আগস্ট ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পাশাপাশি দেশকে স্থিতিশীল রাখার কৃতিত্ব তিনি দেখিয়েছেন। তার যোগ্য নেতৃত্বে কৃষি খাতের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। দারিদ্র্যবিমোচনে শেখ হাসিনার সরকার চ্যালেঞ্জিং ভূমিকা পালন করেছে। বর্তমান সরকার দেশের ইপ্সিত প্রবৃদ্ধির ভিত্তি রচনা করতে সক্ষম হয়েছে। রেমিট্যান্স প্রাপ্তির হারও কয়েক গুণ এগিয়ে নিয়েছে। শিশুমৃতু্যর হার উলেস্নখযোগ্যভাবে কমানোর স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১০ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘ পুরস্কার পেয়েছে। শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও বিচক্ষণ পরিকল্পনায় বর্তমান সরকারের আমলে খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থায় অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
আর কে চৌধুরী
  ০৮ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

চলছে শোকাবহ আগস্ট মাস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে সর্বকালের সেরা বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সপরিবারে নিহত হন। এবার স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী পালন করবে জাতি। একাত্তরের পরাজিত শক্তির সুগভীর ষড়যন্ত্রে প্রাণ হারাতে হয় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতিকে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে প্রকারান্তরে খুনিচক্র বাঙালি জাতির উন্নয়ন অগ্রগতিকে হত্যা করেছে। হত্যা করেছে দেশের উদার মানবতাবাদী চেতনাকে। বাধাগ্রন্ত করেছে দেশের গণতন্ত্রকে। মীরজাফরের ষড়যন্ত্রে নবাব সিরাজউদ্দৌলার হত্যাকান্ডের পর ১৫ আগস্ট ইতিহাসের একটি মর্মান্তিক ঘটনা হিসেবে বিবেচিত। এ ঘটনার মাধ্যমে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি জাতির ঘাড়ে চেপে বসে।

বঙ্গবন্ধু বিশ্ব ইতিহাসের অন্যতম মহানায়ক। সেরা মুক্তি সংগ্রামী, সেরা রাষ্ট্রনায়ক। জননন্দিত নেতা হিসেবে তার তুলনা ছিলেন তিনি নিজেই। দেশের মাটি ও মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা ও দায়বোধ তাকে মহিরুহে পরিণত করেছিল। ব্যক্তি শেখ মুজিব হয়ে উঠেছিলেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু। বাঙালি জাতি, বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং অস্তিত্বের শত্রম্নরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে প্রকারান্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকেই হত্যা করতে চেয়েছিল। ১৫ আগস্টের ঘটনা জাতীয় রাজনীতিতে অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা পরিবর্তনের যে কালো অধ্যায়ের সূচনা করে তার পরিণতিতে বারবার বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে যে সাম্প্র্রদায়িকতা ও দ্বিজাতিতত্ত্বের বিভেদ নীতিকে বাংলাদেশের মানুষ কবর দিয়েছিল, তা পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রয়াস চলে ১৫ আগস্টের পর থেকে। ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকীতে জাতির পিতার অমর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা ও অভিবাদন।

দুই.

দশ বছর আগে আগস্ট মাসের ২১তম দিনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের হত্যার সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র হিসেবে যে এ হামলা চালানো হয় তা দিবালোকের মতো স্পষ্ট। কিন্তু গ্রেনেড হামলায় অলৌকিকভাবে প্রাণে রক্ষা পান শেখ হাসিনা। দলের নেতাকর্মীরা মানবঢাল রচনা করে গ্রেনেড হামলা থেকে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে যেভাবে নিশ্চিত মৃতু্যর হাত থেকে রক্ষা করেছেন তা দৃষ্টান্ত হয়েই থাকবে। গ্রেনেড হামলায় দলের সিনিয়র নেত্রী সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিলস্নুর রহমানের সহধর্মিণী আইভী রহমানসহ ২৪ জন প্রাণ হারান এবং আহত হন শতাধিক।

হত্যা ও ষড়যন্ত্রের যে রাজনীতি ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় মদদ জুগিয়েছে, তার শিকড় উপড়ে ফেলাও দেশের সব গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। আরেকটি ২১ আগস্টের উদ্ভব যাতে কোনো দিন না হয়, তা নিশ্চিত করতেই হত্যা ও ষড়যন্ত্রের হোতাদের চিহ্নিত করা এবং তাদের শিকড় সমাজ ও দেশ থেকে উচ্ছেদ করা আজ সময়েরই দাবি।

তিন.

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় প্রাণে বাঁচাসহ নানা ঘাত-প্রতিঘাত ও বিপদসঙ্কুল পথ পেরিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। নানা সংকটময় পরিস্থিতি ও বিরোধী দলের উত্তাল আন্দোলনের মাঝেও দক্ষ হাতে সরকার পরিচালনা করছেন। শেখ হাসিনা নিজেকে শুধু দক্ষ রাজনৈতিক হিসেবেই গড়ে তোলেননি, আওয়ামী লীগের সরকার পরিচালনাতেও তিনি যথেষ্ট বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন। তার দূরদর্শী পরিকল্পনায় দেশের বিদু্যৎ সংকট সিংহভাগই কেটে গেছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পাশাপাশি দেশকে স্থিতিশীল রাখার কৃতিত্ব তিনি দেখিয়েছেন। তার যোগ্য নেতৃত্বে কৃষি খাতের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। দারিদ্র্যবিমোচনে শেখ হাসিনার সরকার চ্যালেঞ্জিং ভূমিকা পালন করেছে। বর্তমান সরকার দেশের ইপ্সিত প্রবৃদ্ধির ভিত্তি রচনা করতে সক্ষম হয়েছে। রেমিট্যান্স প্রাপ্তির হারও কয়েক গুণ এগিয়ে নিয়েছে। শিশুমৃতু্যর হার উলেস্নখযোগ্যভাবে কমানোর স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১০ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘ পুরস্কার পেয়েছে। শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও বিচক্ষণ পরিকল্পনায় বর্তমান সরকারের আমলে খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থায় অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে।

\হশোকের মাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সৈনিক ও একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি শেখ হাসিনার সফলতা কামনা করি।

আর কে চৌধুরী: মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষাবিদ, সাবেক চেয়ারম্যান রাজউক, উপদেষ্টা, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি আর কে চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<61695 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1