বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বকাপে কেমন খেলেছে বাংলাদেশ?

মো. ফখরুল ইসলাম
  ১৭ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

দশ দলের মধ্যে অষ্টম স্থানে থেকে শেষ করেছে বললে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ অভিযানকে যথাযথভাবে ধরা যাবে না। এবারের আসর বহু কারণেই লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে। গ্রম্নপ পর্বের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত বাংলাদেশ সেমিফাইনালের আশা জিইয়ে রেখেছিল। ভারত আর পাকিস্তানের কাছে হারার ফলে সে আশা বিলীন হয়ে যায়, পয়েন্ট তালিকায় এক ধাক্কায় অনেকটা নেমেও যেতে হয় তাদের। তবে তার আগে দক্ষিণ আফ্রিকা আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দলকে হারিয়ে বাংলাদেশ প্রমাণ করে দিয়েছে, বিশ্বক্রিকেটের মহাসাগরে তারা আর চুনোপুঁটি নয়।

শ্রীলংকার বিপক্ষে বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত না হলে বা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় ছিনিয়ে নিতে পারলে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ভাগ্য অন্যরকমও হতে পারত। ভারত, অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তারা লড়ে হেরেছে ঠিকই, কিন্তু প্রথম সারির দলগুলোর সঙ্গে তাদের ব্যবধান বেশ বোঝা গেছে। তবে বিশ্বকাপ ভবিষ্যতের তারকাদের চিনে নেয়ার মঞ্চও বটে। সেদিক থেকে দেখলে এবারের টুর্নামেন্ট থেকে অনেক কিছু পেয়েছে বাংলাদেশ।

গত এক দশক ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেট মানেই সাকিব আল হাসান। এই বিশ্বকাপ প্রকৃত অর্থেই সাকিবের বিশ্বকাপ। ঈর্ষণীয় ধারাবাহিকতার পরিচয় দিয়ে আটটা ম্যাচের সাতটায় তিনি পঞ্চাশের ওপর রান করেছেন। তার সর্বনিম্ন স্কোর ৪১। বল হাতেও কম সফল নন, আটটা ম্যাচে পেয়েছেন ১১টা উইকেট। গুরুত্বপূর্ণ সব উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের দিকে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছেন একাধিকবার। তবে বাংলাদেশ এবার পুরোপুরি সাকিব-নির্ভর ছিল বললে অন্যায় হবে। উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমও ৫০ এর ওপর গড়ে ধারাবাহিকভাবে রান পেয়েছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে লিটন দাসের অপরাজিত ৯৪ ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে দীর্ঘদিন উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।

তবে এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের আসল চমক বোধহয় পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। দু-দু'বার পাঁচ উইকেট শিকার করেছেন টুর্নামেন্টে। মোট উইকেটের সংখ্যা কুঁড়ি। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন তাকে যথার্থ সঙ্গ দিয়ে গেছেন এবং পুরস্কারস্বরূপ পেয়েছেন ১৩টা উইকেট। মেহেদি হাসান মিরাজ প্রায় প্রতি ম্যাচেই বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদের রান নেয়ার চেষ্টায় জল ঢেলেছেন। সবচেয়ে বড় কথা মুস্তাফিজুরের বয়স মাত্র তেইশ, আর বাকিদের আরও কম। এই বিশ্বকাপে আগামীদিনের বোলারদের পেয়ে গেছে বাংলাদেশ।

২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রবেশ করা মুস্তাফিজুর রহমানকে এখন আর উঠতি তারকা বলা যায় না ঠিকই, তবে এই ক'বছরে অনেক পরিণত হয়েছেন তিনি। সীমের ব্যবহারে বৈচিত্র্যের জন্য কেউ কেউ তো ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার সিডনি বার্নাসের সঙ্গেও তুলনা করেছেন তার। চোট-আঘাতের কারণে মাঝে মাঝেই বাঁধা পড়েছে মুস্তাফিজুরের খেলায়। তবে ২০১৯ বিশ্বকাপে ২০টা উইকেট নিয়ে নতুন রেকর্ড গড়া ছাড়াও তিনি প্রমাণ করেছেন যে ক্ষমতায় তিনি বড় দলের পেসারদের থেকে কোনো অংশে কম যান না। এখন তিনি দলের একজন সিনিয়র, তাই বাড়তি কিছু প্রত্যাশাও থাকবে তার কাছ থেকে।

একদিকে যেমন বোলিংয়ে বেশ কিছু নতুন তারকার উদয় হয়েছে, অন্যদিকে ব্যাটিংয়ে কিন্তু ঘুরেফিরে সেই তিন-চারজনের ওপর নির্ভরশীলতা থেকেই গেছে। বাংলাদেশের চার প্রধান ব্যাটসম্যান, মুশফিকুর, সাকিব, মাহমুদউলস্নাহ আর তামিম ইকবাল প্রত্যেকেরই বয়স ত্রিশ পেরিয়ে গেছে। পরের বিশ্বকাপে এদের মধ্যে বেশিরভাগই হয়তো সেরা ফর্মে থাকবেন না। তাই ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে নতুন ব্যাটসম্যান তুলে আনার দিকে নজর দিতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<58541 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1