শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কিছু না বলেই চলে গেলেন রোডস

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ১২ জুলাই ২০১৯, ০০:০০
যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে স্টিভ রোডস -ওয়েবসাইট

স্টিভ রোডসের মুখে হাসি না দেখাটা কেমন যেন অস্বাভাবিক। যিনি দারুণ ছনমনে, বন্ধুসুলভ একজন মানুষ। গত এক বছরে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে কম দেননি বরং বেশিই দিয়েছেন। আগলে রাখার চেষ্টা করেছেন তরুণদের। শুধু বিশ্বকাপে প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলাফল না আসায় বিদায় নিতে হলো টাইগারদের ইংলিশ কোচ স্টিভ রোডসকে।

২০১৮ সালের জুনে দায়িত্ব নেয়া রোডস বৃহস্পতিবার ইতি টেনে দিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পর্কটার। যাওয়ার বেলায় তার মুখে ছিল না কোনো কথা। অথচ গত এক বছর তিনিই কি না বেশি কথা বলতেন গণমাধ্যমের সঙ্গে। গতকাল বিদায় বেলায় মুখে তালা মেরে রাখলেন স্টিভ রোডস। বিসিবির সঙ্গে তার সম্পর্কটা আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হলো।

বিশ্বকাপ শেষের আগে রোডসের বিদায় নিয়ে কিছুটা ইঙ্গিত পাওয়া গেলেও সেটা নিশ্চিত ছিল না। রোডসও জানতেন না তাকে বিসিবি রাখবে কি না। বিশ্বকাপ মিশন শেষে ফেরার সময় ক্রিকপোস্ট প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপকালে স্টিভ জানান, চট্টগ্রামে 'এ' দলের খেলা দেখতে যাব। সেখানে কথা হবে। এর মানে তিনি তখনো জানতেন না, বিসিবির এমন সিদ্ধান্তের খবর। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী বলেন, দুই পক্ষের সমঝোতায় স্টিভ রোডসকে অব্যাহত দেয়া হয়েছে প্রধান কোচের পদ থেকে। এ নিয়ে বিসিবির পক্ষ থেকে বলা হলেও কিছুই বলতে চাননি রোডস। তাতে ধোঁয়াশা থেকেই যায়। আসলেই কি সমঝোতা!

স্টিভ রোডস গত বছর জুনে ঠিক এমনই এক মেঘলা দুপুরে এসেছিলেন বিসিবি কার্যালয়ে। সংবাদমাধ্যম এড়িয়ে চলে গিয়েছিলেন বিসিবির প্রধান নির্বাহীর কক্ষে। বাংলাদেশে তার প্রথম দিনটার সঙ্গে শেষ দিনটাও মিলে গেল অদ্ভুতভাবে।

এদিনও সেই মেঘলা দুপুর। বিসিবির প্রধান নির্বাহীর কক্ষ। সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে যাওয়া। পার্থক্যটা হচ্ছে, যেদিন কোচ হয়ে বাংলাদেশে প্রথম এলেন, সেদিন মুখে একটা হাসি ছিল। এবার সেটি উধাও! বিদায়বেলায় তার বিষণ্ন মুখটা দেখে মনে হচ্ছিল, এভাবে বিদায় তিনি নিতে চাননি। এক বছরের বাংলাদেশ-অধ্যায় যিনি কখনোই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেননি সেই রোডস বৃহস্পতিবার বিদায়ক্ষণে একটা কথাও বললেন না। আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ-পর্বটা তার শেষ হলো নীরবেই। বিসিবি বলছে, 'এটা পারস্পরিক সমঝোতার বিচ্ছেদ।'

রোডস কেন কথা বললেন না, এ নিয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে বললেন, 'এটি আসলে যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার। খুবই স্বাভাবিক যে একটি সম্পর্কের যখন ইতি ঘটে, তখন স্বাভাবিকভাবেই বিভিন্ন ধরনের ব্যাখ্যা হয়, তিনি হয়তো এসব ব্যক্তিগতভাবে এড়াতে চাইছেন।' রোডস কিছু না জানালেও গতকাল বাংলাদেশ দলের ইংলিশ কোচের বিসিবি কার্যালয়ে আসা প্রসঙ্গে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরীর ব্যাখ্যা, 'এটা আসলে একটা আনুষ্ঠানিকতা ছিল। কিছু আনুষঙ্গিক বিষয় ছিল, অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া। সেগুলো আমরা শেষ করলাম। তিনি সম্ভবত গতকাল বাংলাদেশ থেকে চলে যাচ্ছেন।'

গত পড়শুও লন্ডনে ইন্টার পার্লামেন্টারি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, শ্রীলংকা সিরিজে দায়িত্ব পালন করতে পারেন রোডস। ঠিক তার পরের দিনই আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানালেন বাংলাদেশ কোচ। বিসিবি সভাপতির কথার সঙ্গে বাস্তবের এ অমিল নিয়ে নিজামউদ্দিন বললেন, 'আমরা আগেও বলেছি যে সমঝোতার মাধ্যমে বিষয়টি হয়েছে। কিছু শর্ত থাকে। বোর্ড সভাপতি সেটাই বলেছেন যে তিনি চূড়ান্ত ভাবে কবে যাবেন বা কী করবেন সেটি তারই (কোচের) সিদ্ধান্ত। সেটি আমাদের কাল জানিয়েছেন (কোচ)। আমরা সভাপতিকে রাতে জানিয়েছি বিষয়টি যে তিনি আজ (বৃহস্পতিবার) চলে যেতে চাইছেন।'

স্টিভ রোডস চলে যাওয়ার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, নতুন কোচ সন্ধানের ব্যাপারে বিসিবি কী উদ্যোগ নিচ্ছে? বিসিবির প্রধান নির্বাহী জানালেন, তারা কোচ খোঁজার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন। যত দ্রম্নত সম্ভব শূন্য স্থান পূরণ করা হবে। শুধু প্রধান কোচই নন, কোচিং স্টাফে আরও কিছু জায়গাও দ্রম্নতই পূরণ করতে হবে বিসিবিকে। রোডসকে প্রধান কোচ হিসেবে নির্বাচিত করার পেছনে বিসিবি ইংল্যান্ড বিশ্বকাপকে প্রাধান্য দিয়েছিল। এবার কোচ নির্বাচনে কোনো কিছু প্রাধান্য নয়, বিসিবি 'উন্মুক্ত' থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<57766 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1