বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইভান্সের সেঞ্চুরিতে রাজশাহীর জয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ২২ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০
সেঞ্চুরির পর ব্যাট উঁচিয়ে দশর্কদের অভিনন্দনের জবাব দিচ্ছেন লরি ইভান্স। এই ইংলিশম্যানের ব্যাটেই এবারের বিপিএল দেখল প্রথম সেঞ্চুরি Ñবিসিবি

একটা একটা করে ‘বড় মাছ’ শিকার করছে রাজশাহী কিংস। চলতি আসরে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডাসর্ এবং সাবেক চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটসকে হারানো মেহেদী হাসান মিরাজের দল এবার হারিয়ে দিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সোমবার রাজশাহীর ৩৮ রানের সেই জয়ে বড় অবদান লরি ইভান্সের। তার ব্যাটেই প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেল এবারের বিপিএল।

সিলেটে নিজেদের শেষ ম্যাচে উড়তে থাকা ঢাকাকে হারিয়েছিল রাজশাহী। ফলে উত্তুঙ্গ আত্মবিশ্বাস পুঁজি করে ঢাকায় ফিরেছিল তারা। জয়ের ধারাবাহিকতা অব্যহত রাখার সঙ্গে প্রথম দেখায় কুমিল্লার কাছে হারের প্রতিশোধটাও নিতে চেয়েছিল মিরাজের দল। ইভান্স-রায়ান টেন ডেসকাটেদের দুদার্ন্ত ব্যাটিংয়ের পর কামরুল ইসলাম রাব্বির দুধর্ষর্ বোলিংয়ে তাদের সেই চাওয়াটা পূণর্ হয়েছে। আসরে চতুথর্ জয় তুলে নেয়ার পথে আগে ব্যাট করে ১৭৬ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি গড়ে রাজশাহী। জবাবে ১৩৮ রানেই অলআউট হয়ে যায় ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বাধীন কুমিল্লা।

শুরু থেকেই রাজশাহীর উদ্বেগের জায়গা ছিল ব্যাটিং। দলের দুই সেরা ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার আর মুমিনুল হক প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি। কুমিল্লার বিপক্ষে তাই এই দুজনকে ছাড়াই মাঠে নামে রাজশাহী। কিন্তু শুরুতে অবস্থার পরিবতর্ন তেমনটা ঘটেনি। টসে জিতে আগে বল করার সিদ্ধান্ত নেয় আগের ম্যাচের অপরিবতির্ত দল নিয়ে মাঠে নামা কুমিল্লা। সিদ্ধান্তটা সঠিক, সেটা প্রমাণ হতে সময় লাগেনি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই মেহেদী হাসানের বলে বোল্ড শাহরিয়ার নাফিস (৫)।

এদিন আর ওপেনিংয়ে নামেননি মিরাজ। তবে ব্যাটিংঅডার্র পরিবতর্ন করলেও ভাগ্যের পরিবতর্ন হয়নি রাজশাহী অধিনায়কের। দলীয় ১৩ রানের মাথায় লিয়াম ডসনের বলে ইমরুলের হাতে ধরা পড়েন রানের খাতা খোলার আগেই। দলীয় ২৮ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় রাজশাহী। ঢাকার বিপক্ষে চমক জাগানিয়া ব্যাটিং করা মাশার্ল আইয়ুব এদিন দঁাড়াতে পারেননি। ব্যক্তিগত ২ রানে তাকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান ডসন। ২৮ রানে ৩ উইকেট হারানো রাজশাহী ১০ ওভার শেষে তোলতে পারে ৫০ রান। ইভান্স আর ডেসকাটের ব্যাটে শেষ ১০ ওভারেই তারাই তুলেছে ১২৬ রান।

দ্রæত উইকেট পড়ায় শুরুতে হিসেবি ছিলেন ইভান্স আর ডেসকাটে। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের জাত চিনিয়েছেন তারা। চতুথর্ উইকেট জুটিতে অবিচ্ছিন্ন থেকে ১৪৮ রান তুলে অপরাজিত থাকেন দুই বিদেশি। শুরুটা খুব ধীর গতিতে করেন ইভান্স। আস্তে আস্তে নিজের খোলস থেকে বের হন এই ইংলিশ ক্রিকেটার। থিসারা পেরেরা, শহীদ আফ্রিদিদের একের পর এক বলকে বাউন্ডারি পার করে এই বিপিএলের প্রথম সেঞ্চুরি আদায় করে নেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এই সেঞ্চুরিটা তার ক্যারিয়ারেরও প্রথম।

৬১ বলে সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে শেষ পযর্ন্ত ৬২ বলে ইভান্স অপরাজিত থাকেন ১০৪ রানে। ৯টি চারের সঙ্গে ছয়টি ছক্কায় সাজান ইনিংসটি। ইংলিশ তারকাকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন আরেক ইউরোপিয়ান ব্যাটসম্যান ডেসকাটে। ৪১ বলে ৫৯ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকনে ডাচ তারকা। দুই চারের সঙ্গে তিনটি ছক্কা মারেন তিনি। ২০ রানে দুই উইকেট নিয়ে কুমিল্লার সেরা বোলার ডসন। একটি উইকেট পেয়েছেন মেহেদী। ইভান্স-ডেসকাটের সামনে অসহায় ছিলেন আফ্রিদি-রিয়াজ-সাইফউদ্দিনরা।

রাজশাহীর ছুড়ে দেয়া ১৭৭ রানের জয়ের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল আর এনামুল হক বিজয় শুরুটা করেছিলেন ধীর লয়ে। ৩৭ রানের উদ্বোধনী জুটিটা আশাও দেখাচ্ছিল কুমিল্লাকে। কিন্তু রাব্বিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লংঅফে ক্যাচ দেন তামিম। ২৪ বলে সমান দুটি করে চার আর ছক্কায় ২৫ রান করেন তিনি। এরপর ২৩ বলে ২৬ রান করা এনামুলকে ফেরান ডেসকাট। দলীয় ৬৭ রানে এনামুল বিদায় নেয়ার পর থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে কুমিল্লা।

শামসুর রহমানকে (১৫) ফেরান আরাফাত সানি। জিয়াউর রহমানকে (১২) নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান ডেসকাটে। তবে রানের চাকা বেশ সচল রাখছিলেন ইমরুল আর ডসন। কিন্তু কায়েস আহমেদকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হন ইমরুল (১৫)। কুমিল্লা বিপদে পড়ে থিসারা পেরেরার বিদায়ে। ইমরুলের পরের বলে একই বোলারের বলে একই ফিল্ডারের হাতে ঠিক একই জায়গায় ক্যাচ দেন লংকান অলরাউন্ডার (০)।

শেষ পাঁচ ওভারে কুমিল্লার দরকার ছিল ৬৭ রান। কায়েসের করা ১৬তম ওভারে ২২ রান নিয়ে চাপ অনেকটা কমিয়ে ফেলেন আফ্রিদি-ডসন। তবে পরের ওভারে মাত্র তিন রান দিয়ে সেটা পুষিয়ে নেন মুস্তাফিজুর রহমান। ১৮তম ওভারের প্রথম বলে আফ্রিদিকে (১৮) ফিরিয়ে ম্যাচ নিজেদের দিকে নিয়ে আসেন রাব্বি। আফ্রিদিকে ফেরানোর কৃতিত্বটা ফিল্ডার ক্রিস্টিয়ান জোঙ্কারকেই দিতে হবে বেশি। সীমানার দড়ি ঘেষে দুদার্ন্ত এক ক্যাচ নেন এই প্রোটিয়া।

চার বলের ব্যবধানে তিন ব্যাটসম্যানকে তুলে নিয়ে ম্যাচটা পুরোপুরি রাজশাহীর আয়ত্তে নিয়ে আসেন রাব্বি। আফ্রিদির পর ডসন (১৭) আর সাইফউদ্দিনকে (০) সাজঘরের পথ দেখান ডানহাতি পেসার। এরপর ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মেহেদীকে আউট করে কুমিল্লাকে ১৩৮ রানেই গুটিয়ে দেন মুস্তাফিজ। তিন ওভারে মাত্র ১০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন রাব্বি। দুটি করে উইকেট নেন কায়েস আহমেদ ও ডেসকাট।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<33313 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1