শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিশোধের কথা ভাবছেন না দালিচ

ক্রীড়া ডেস্ক
  ১৩ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ১৩ জুলাই ২০১৮, ১১:৫৪

শিরোপা জয়ের কতো প্রস্তুতিই না সেরে রেখেছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু বুধবার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ইংলিশদের জয়রথ থামিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে ক্রোয়েশিয়া। আর মাত্র একটি ম্যাচ জিতলে বিশ্বকাপে নতুন চ্যাম্পিয়ন হবে তারা। অথচ ২০ বছর আগে ডেভিড সুকারের নেতৃত্বে দলটি শিরোপার স্বাদ পেতে পারত। কিন্তু সেবার সেমিতে স্বাগতিক ফ্রান্সের কাছে হেরে থেমে গিয়েছিল ক্রোয়েশিয়ার জয়যাত্রা। আগামী রোববার শিরোপা লড়াইয়ে ফ্রান্সের মুখোমুখি হবে ক্রোয়েশিয়া। তাই ১৯৯৮ সালে সেমিফাইনালে হারের প্রতিশোধ নেয়ার একটা বিষয় থাকছেই শিরোপার লড়াইয়ে। ক্রোয়াট কোচ জালাতকো দালিচ অবশ্য প্রতিশোধের কথা ভাবতে নারাজ। আরেকটি সেরা ম্যাচ খেলার জন্য শিষ্যদের আরও মনোযোগী হওয়ার আহŸান জানিয়েছেন তিনি। লুজনিকি স্টেডিয়ামে বুধবার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে পিছিয়ে পড়ার পর দারুণভাবে ঘুরে দঁাড়িয়ে ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারায় ক্রোয়েশিয়া। এ মাঠেই আগামী রোববার শিরোপা লড়াইয়ে ফ্রান্সের মুখোমুখি হবে তারা। বেলজিয়ামকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে এসেছে দিদিয়ের দেশমের দল। ১৯৯৮ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিজেদের মাঠে ২-১ গোলে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল ফ্রান্স। সেবার শিরোপাও জিতেছিল স্বাগতিকরা আর তৃতীয় হয়ে শেষ করেছিল ক্রোয়েশিয়া। সেই বিশ্বকাপে দেশম ছিলেন ফ্রান্সের অধিনায়ক, এখন কোচ। যুগো¯øভিয়া ভেঙে স্বাধীন দেশ হিসেবে ২০ বছর আগে প্রথমবার বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়ে বাজিমাত করেছিল ক্রোয়েশিয়া। খেলেছিল প্রথম সেমিফাইনাল। কিন্তু স্বাগতিক ফ্রান্সের কাছে হেরে থামে তাদের অবিশ্বাস্য যাত্রা। দেশের ফুটবল ইতিহাসে প্রথমবার ফাইনালে উঠে সেই দলের মুখোমুখি হচ্ছে ক্রোয়েটরা। কিন্তু দুই দশক আগের সেই হারের প্রতিশোধ নেয়ার কোনো চিন্তা মাথায় আনছেন না দালিচ। কুড়ি বছর আগের হতাশার স্মৃতি মনে পড়ছে ক্রোয়েশিয়ার কোচেরও। তাই বলে প্রতিশোধের উত্তাপ ছড়াচ্ছেন না তিনি, ‘ক্রোয়েশিয়ার সবাই ম্যাচটার স্মৃতিচারণ করতে পারে, যখন লিলিয়াম থুরাম গোল করল এবং আমরা শেষ পযর্ন্ত ২-১ ব্যবধানে হেরে গেলাম। গত ২০ বছর ধরে এটা ছিল একটা আলোচনার বিষয়।’ যদিও সেদিনের ম্যাচে ডেভিড সুকারের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ক্রোয়েশিয়া, কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। দালিচ বললেন, ‘আমার মনে আছে যখন ডেভিড সুকার গোল করল আমরা উদযাপন করলাম কিন্তু আমরা বসতে না বসতেই ম্যাচে সমতা ফিরল। এবারে আসরে দুটি দলই তাদের মান দেখিয়েছে। তাই বলে আমরা ফাইনালে প্রতিশোধের জন্য খেলব না। এটা ফুটবল, এটা খেলা। ফাইনালে আমাদের টুনাের্মন্টের সেরা ম্যাচটি খেলার প্রস্তুতির দিকে মনোযোগ দিতে হবে আরও।’ প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালের মঞ্চে ক্রোয়েশিয়া। এ সাফল্য ক্রোয়েশিয়ার জন্য ‘ঐতিহাসিকভাবে তাৎপযর্ময়’ বলে মনে হচ্ছে ৫১ বছর বয়সী দালিচের, ‘হতে পারে ম্যাচটির ঐতিহাসিক তাৎপযর্ আছে; হতে পারে সৃষ্টিকতার্ আমাদের একটা হিসাব চুকানোর সুযোগ দিয়েছেন। আমরা ফাইনালে উঠলাম; আমরা ফাইনাল খেলতে চাই। ফ্রান্স সামলে ওঠার জন্য একটা দিন বেশি পেল, কিন্তু এটা আমাদের ভালো খেলার জন্য বড় ধরনের কোনো অজুহাত হবে না।’ রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকিট পেলেই কেবল ক্রোয়েশিয়ার কোচের দায়িত্বে থাকবেন এমন শতর্ দিয়ে অক্টোবরে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেছিলেন দালিচ। সেই তিনিই এখন দলকে ভালোভাবে একসুতোয় গেঁথে এনে দিলেন দারুণ সাফল্যে। শেষ বাধা টপকে এবার শীষর্ অজর্নটা পেতে মুখিয়ে আছেন তিনি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো খেলার জন্য শিষ্যদের কৃতিত্ব দিতেও কাপর্ণ্য করলেন না ক্রোয়েশিয়ার কোচ, ‘আজ ছেলেরা কেউ মাঠ থেকে অন্য কারও বদলি হিসেবে উঠতে চায়নি। কেউ বলেনি যে সে প্রস্তুত নয়। অতিরিক্ত সময়েও দলের কেউ মাঠ ছাড়তে চায়নি। আমরা ফাইনালে ওঠার যোগ্য। ছেলেরা আজ যা খেলেছে সেটা অকল্পনীয় ছিল; তারা ইতিহাস গড়েছে।’ দালিচ প্রত্যয়ী কণ্ঠে জানিয়েছেন, ফরাসিদের বিপক্ষে ফাইনালে লড়তে প্রস্তুত তার দল, ‘আমরা আমাদের খেলা শেষ করিনি। এখনো একটা ম্যাচ বাকি আছি। ফ্রান্সের জন্য প্রস্তুত হব। এটা আরেকটা কঠিন পরীক্ষা এবং আমরা এটার জন্য প্রস্তুত। সৃষ্টিকতার্ চান তো আমরা চ্যাম্পিয়ন হব।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে