ক্রীড়া ডেস্ক
এক যুগ পর আবারও বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে ফ্রান্স। রাশিয়া বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে মঙ্গলবার ১৯৯৮ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা হারিয়ে দিয়েছে বেলজিয়ামকে। তৃতীয়বারের মতো ফুটবলের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতার ফাইনালে খেলার টিকিট নিশ্চিত করেছে ফরাসিরা। এই নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার বড় কোনো টুনাের্মন্টের ফাইনালে খেলছে লে-বøুজরা। ইডেন হ্যাজাডর্-ডি ব্রæইন-রোমেলু লুকাকুদের বেলজিয়ামকে হারিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠার পর শিষ্যদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশম। তার মতে গ্রিজমান-এমবাপেরা তাদের দৃঢ়তা ও সঠিক মানসিকতা দেখিয়েছে। বেলজিয়াম ম্যাচ জয়ের পুরো কৃতিত্ব তিনি দিয়েছেন শিষ্যদের।
রাশিয়া বিশ্বকাপের দুদার্ন্ত এক দল হচ্ছে বেলজিয়াম। ইডেন হ্যাজাডের্র দলের বিপক্ষে দারুণ উত্তেজনা ছড়ানো সেমিফাইনালে ৫১তম মিনিটে আতোয়ান গ্রিজমানের কনাের্র লাফিয়ে উঠে হেডে গোল করে ফ্রান্সকে এগিয়ে নেন স্যামুয়েল উমতিতি। বাসেের্লানার এই ডিফেন্ডারের একমাত্র গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ১৯৯৮ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। আর তাতেই স্বস্তি ফরাসি কোচ দেশমের, ‘৪৯ দিন একসঙ্গে থাকা, এটা অনেক কিছু। বলতে পারেন কঠিন কিছু। গ্রæপ পবর্ থেকে এ পযর্ন্ত উঠে আসা সবার মেধার ফল। আর বেলজিয়ামের বিপক্ষে পাল্টা আক্রমণ থেকে আমাদের আরেকটু বেশি সুযোগ নিতে হতো। কিন্তু ছেলেদের এবং স্টাফদের অভিনন্দন। আমি আমার দল নিয়ে খুবই গবির্ত।’
বেলজিয়ামের বিপক্ষে একমাত্র গোলটি আসে উমতিতির মাথা থেকে। ১৯৯৮ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক দেশম তাই স্তুতি বাক্যে ভাসালেন শিষ্যদের, ‘ছেলেরা যা করেছে তা অসাধারণ। ওদের জন্যে আনন্দ হচ্ছে খুব। ওরা তরুণ তবে বেলজিয়ামের মতো দলের বিপক্ষে ওরা যে মানসিক স্থিতি দেখিয়েছে সেটা কঠিন ছিল। তাই জয়টা ছেলেদেরই।’
ফ্রান্স ফাইনালে ওঠায় দেশমের সামনে এখন ইতিহাস গড়ার হাতছানি। জামাির্নর কিংবদন্তি ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার ও ব্রাজিলের মারিও জাগালোর পর খেলোয়াড় এবং কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জয়ের সুযোগ এখন তার সামনে। তবে নিজের অজর্ন নয়, আপাতত শিষ্যদের কীতির্ নিয়েই সরব এই কোচ, ‘এটা অসাধারণ ছিল। আমি আমার খেলোয়াড়দের নিয়ে খুবই খুশি। আমরা দৃঢ়তা এবং সঠিক মানসিকতা দেখিয়েছিলাম। এটা আমাদের জন্য খুব কঠিন কাজ ছিল। আমরা রক্ষণে কঠিন পরিশ্রম করেছিলাম। যে কারণে বেলজিয়ামের খেলোয়াড়রা গোলের দেখা পায়নি।’
এবারের বিশ্বকাপজুড়ে বেলজিয়াম দলের সবাই যেভাবে খেলেছেন, ফাইনালে ওঠার অসাধারণ সুযোগ ছিল তাদের সামনে। কে জানে ইংল্যান্ড কিংবা ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে হয়তো শিরোপাটাও জিতে নিতে পারত বেলজিয়াম! তবে এসবের কিছুই সম্ভব হয়নি ফ্রান্সের স্যামুয়েল উমতিতি আর দেশমের কারণে! বেলজিয়াম-ফ্রান্স সেমিফাইনালে দেশম ঠাÐা মাথায় পরিকল্পনা সাজিয়েছেন। খেলোয়াড়দের দিয়ে দাবার ঘুঁটির মতো চাল দিয়েছেন। সেটা কাজেও এসেছে উমতিতির হাত ধরে। এবার ফরাসি কোচের চোখে বড় স্বপ্ন, ‘আগামী রোববার আমাদের জন্য মহাগুরুত্বপূণর্ এক ম্যাচ, আমরা চাই নিজেদের সবোর্চ্চটা দিয়ে সেরা সাফল্য নিয়ে আসতে। ছেলেরা পুরো টুনাের্মন্টে নিজেদের সেরাটা দিয়েছে। এবার সবোর্চ্চটা দিয়ে মহাগুরুত্বপূণর্ ম্যাচের ফল ঘরে আনতে চাই।’
বিশ্বকাপে তৃতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠেছে ফ্রান্স। এমন সাফল্যে রাজধানী প্যারিসে বইছে আনন্দের বান। আগামী রোববার লুঝনিকি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় ফাইনালে সমথর্কদের আরও বেশি আনন্দের উপলক্ষ এনে দিতে চান দেশম। তাদের উদ্দেশে ফরাসি কোচের বাতার্, ‘রোববারের ফাইনালে দেশের মানুষের কথা স্মরণ রেখেই খেলোয়াড়রা তাদের সবোর্চ্চটা দেবে। কারণ আমরা সবাই চাই সেমিফাইনালের আনন্দের চাইতে তারা বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দটা আরও বেশি করে উপভোগ করুক।’