লন্ডনের এমিরেটস স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই সমানতালে লড়ে গেল উরুগুয়ে, কিন্তু পঁাচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের সঙ্গে শেষতক পেরে উঠেনি তারা। পেনাল্টি থেকে গোল করে ম্যাচে ব্যবধান গড়ে দিয়েছেন নেইমার। ব্রাজিলের ১-০ গোলের কষ্টাজির্ত জয়ের দিনে মেক্সিকোকে ২-০ গোলে হারিয়েছে লাতিন ফুটবলের আরেক পরাশক্তি আজেির্ন্টনা।
রাশিয়া বিশ্বকাপের পর থেকেই আজেির্ন্টনা দলে নেই সময়ের অন্যতম সেরা তারকা লিওনেল মেসি। মেক্সিকোর বিপক্ষেও তাকে পায়নি দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। মারিও আলবাতোর্ কেম্পেস স্টেডিয়ামে তাতে অবশ্য জয় পেতে কোনো সমস্যা হয়নি লিওনেল স্কালোনির দলের। শুরু থেকেই আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে জমে উঠা ম্যাচের প্রথমাধের্ই ডিফেন্ডার রামিরো মৌরার গোলে এগিয়ে যায় আজেির্ন্টনা। ৪৪ মিনিটে পাওলো দিবালার ফ্রিকিকে বল পেয়ে দারুণ হেডে মেক্সিকোর জাল কাপান তিনি।
ম্যাচে কোনো গোল না পেলেও দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন দিবালা। ভাগ্য সহায় হলে দ্বিতীয়াধের্র শুরুতে গোল পেয়েও যেতে পারতেন জুভেন্টাস ফরোয়াডর্। ৫০তম মিনিটে মেক্সিকোর ডিফেন্ডারকের বোকা বানিয়ে গোলরক্ষক গিলেমোর্ ওচোয়ার মাথার উপর দিয়ে চিপ করেছিলেন তিনি। বল চলে যায় ক্রসবারের সামান্য ওপর দিয়ে। এ যাত্রা মেক্সিকো রক্ষা পেলেও ৮৩ মিনিটে ঠিকই ম্যাচের দ্বিতীয় গোল আদায় করে নেয় আজেির্ন্টনা। সারাভিয়ার ক্রস বিপদমুক্ত করতে গিয়ে নিজেদের জালেই বল জড়িয়ে দেন ইসাক রিসুয়েলা (২-০)।
নিজেদের মাঠে আজেির্ন্টনা সহজ জয় পেলেও এমিরেটসে উরুগুয়েকে হারাতে রীতিমতো কালঘাম ছুটে গেছে ব্রাজিলের। ম্যাচে একাধিকবার ব্রাজিলের রক্ষণে হানা দিয়েছেন লুইস সুয়ারেজ। ব্রাজিল গোলরক্ষক অ্যালিসনের অসাধারণ কয়েকটি সেভ গোলবঞ্চিত রাখে বাসেের্লানা স্ট্রাইকারকে। দ্বিতীয়াধের্র শুরুতে অসাধারণ এক ফ্রিকিক নিয়েছিলেন সুয়ারেজ, ঝঁাপিয়ে পড়ে বল থামিয়েছেন অ্যালিসন। আসলে এদিন ভাগ্য সহায় ছিল না উরুগুয়ের। সুয়ারেজের মতে, রেফারি ভুল না করলে ৭৬ মিনিটে পেনাল্টিটিও পেত না ব্রাজিল!
বক্সে দানিলো ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টির বাশি বাজান রেফারি। তার ওই সিদ্ধান্তে কোনো ভুল ছিল না। কিন্তু ডিয়েগো লাক্সাল্ট দানিলোকে বক্সে ফাউল করার আগেই হ্যান্ডবল হয়েছিল, রেফারির চোখ এড়িয়ে যায় সেটি। এরপর স্পটকিক নিতে আসেন নেইমার। পিএসজি তারকা কোনো ভুল করেননি, বল জড়িয়ে দিয়েছেন জালে। ব্রাজিজের জাসিের্ত এটা ৬০তম গোল নেইমারের। তাতে এগিয়ে থাকা দুই পূবর্সূরি রোনালদো (৬২ গোল) আর পেলের (৭৭ গোল) সঙ্গে ব্যবধান কমিয়েও এনেছেন তিনি।
নেইমারের ওই গোলটিই ব্যবধান গড়েছে ম্যাচে। বুঝাই যাচ্ছে, কতটা প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়েছিল ব্রাজিলকে। ম্যাচটা যে কঠিন ছিল, ম্যাচ শেষে তা স্বীকার করেছেন দলটির মিডফিল্ডার উলাসে, ‘এটা কঠিন ম্যাচ ছিল। উরুগুয়ে সবসময়ই শক্তিধর এবং কঠিন প্রতিপক্ষ। আমাদের ধৈযর্ ধরতে হয়েছে সুযোগের জন্য। সুযোগটা এলো পেনাল্টির মাধ্যমে এবং গোলটা আমাদের পাওনা ছিল।’ উরুগুয়ের বিপক্ষে জয় পাওয়ায় খুশি দলপতি নেইমারও।
রাশিয়া বিশ্বকাপের কোয়াটার্র ফাইনালে বেলজিয়ামের কাছে হেরে বিদায় নেয়ার পর ব্রাজিল ছুটছে জয়রথে। টানা পঁাচ ম্যাচে জয় পেল তিতের শিষ্যরা। ষষ্ঠ জয়ের খোজে আগামী মঙ্গলবার পরবতীর্ প্রীতি ম্যাচে ক্যামেরুনের মুখোমুখি হবে তারা। একই দিনে প্যারিসে উরুগুয়ের প্রতিপক্ষ বতর্মান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স।