শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মাটিতেই পা রাখছে তিতের ব্রাজিল

ক্রীড়া ডেস্ক
  ২৯ জুন ২০১৮, ০০:০০

রাশিয়া বিশ্বকাপে গ্রæপ পবের্র প্রথম ম্যাচটা খুব একটা ভালো কাটেনি ব্রাজিলের। সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছিল তারা। দ্বিতীয় ম্যাচে কোস্টারিকার বিপক্ষে নিধাির্রত ৯০ মিনিটে গোলের দেখা পায়নি পঁাচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা, তাতে দানাবঁাধছিল বিদায়ের শঙ্কা। সেদিন ইনজুরি টাইমে কুতিনহো আর নেইমার গোল করে সেই শঙ্কা উড়িয়ে দেন। বুধবার তো সাবির্য়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে ‘ই’ গ্রæপের চ্যাম্পিয়ন হয়েই শেষ ষোলোয় নাম তুলেছে সেলেকাওরা। দিনকে দিন তিতের শিষ্যদের পারফরম্যান্সে উন্নতি দেখা যাচ্ছে। এরপরও মাটিতেই পা রাখছে ব্রাজিল।

হেক্সা মিশনে ব্রাজিল পেরিয়েছে প্রথম ধাপ। সামনে এখন নকআউটের চ্যালেঞ্জ। প্রতিটি ম্যাচই এখন ফাইনাল। সেখানে একটি করে জয় মানে লক্ষ্যপথে একধাপ করে এগিয়ে যাওয়া। এগিয়ে চলার পথে ব্রাজিলের প্রথম বাধা মেক্সিকো। ‘ই’ গ্রæপের সেরা হওয়ায় শেষ ষোলোয় তারা প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে ‘এফ’ গ্রæপের রানাসর্আপ হওয়া দলটিকে। অনেকেরই ধারণা ছিল- মেক্সিকো নয়, শেষ ষোলোয় ব্রাজিলকে লড়তে হবে জামাির্নর সঙ্গে। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে গ্রæপের শেষ ম্যাচে হেরে নকআউট পবের্ উঠতে পারেনি ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। এতে সুবিধেই হয়েছে ব্রাজিলের, মিলেছে অপেক্ষাকৃত সহজ প্রতিপক্ষ। এরপরও মাটিতেই পা রাখছে ব্রাজিল, দলীয় কোচ তিতে তো সতকর্ও করে দিয়েছেন শিষ্যদের।

লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইয়ে দাপুটে পারফরম্যান্স দেখিয়েছে ব্রাজিল। ১৮ ম্যাচের ১২টি জয় ও ৫টিতে ড্র করে শীষের্ থেকে বিশ্বকাপে নাম লেখায় তারা। দলটিতে প্রতিভার ছড়াছড়ি। প্রস্তুতি ম্যাচগুলোতে নেইমার-কুতিনহোদের পারফরম্যান্স, গ্রæপপবের্ শুরুর ধাক্কা সামলে দারুণভাবে ঘুরে দঁাড়ানো; প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিয়েছে ব্রাজিল সমথর্কদের। বিষয়টা বুঝতে পারছেন তিতে। তবে যেভাবে তার শিষ্যরা প্রত্যাশার চাপ সামাল দিচ্ছে, তাতে বেশ খুশি এই কোচ, ‘এই দলই উচ্চাকাক্সক্ষা তৈরি করেছে। কারণ, তারা বিশ্বকাপ বাছাই এবং প্রস্তুতি ম্যাচে প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু বিশ্বকাপ একটা নতুন শুরু, নতুন অধ্যায়।’

গ্রæপ পবের্ মেক্সিকোর কাছে হেরেছিল গতবারের চ্যাম্পিয়ন জামাির্ন। ২ জুলাই শেষ ষোলোর ম্যাচে সেই মেক্সিকোই এখন নেইমারদের প্রতিপক্ষ। জামাির্নর বদলে প্রতিপক্ষ হিসেবে মেক্সিকো পেয়ে ব্রাজিলের অনেক সমথর্ক এখনই প্রিয় দলকে কোয়াটার্র ফাইনাল দেখছেন। তবে উত্তর আমেরিকার দলটিকে মোটেও খাটো করে দেখছেন না ব্রাজিলের কোচ তিতে, ‘বিশ্বকাপে অংশ নেয়া দলগুলো যত সময় যাচ্ছে, ততই নিজেদের ভালোভাবে মেলে ধরছে। দলগুলো নিজেদের সামথের্্যর প্রমাণও রাখছে। তাই কোনো দলকেই ছোট করে দেখার উপায় নেই। নকআউট পবের্ আমাদেরকে আরও সতকর্ হয়ে খেলতে হবে।’

পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ঘিরে এমনিতেই প্রত্যাশার পারদ সবসময় ঊধ্বর্মুখী থাকে। তিতে তা জানেন। আর জানেন বলেই প্রথম দুই ম্যাচে তার শিষ্যরা সমথর্কদের প্রত্যাশার প্রতিদান সেভাবে মেটাতে না পারায় ‘ফেভারিট তত্ত¡’ নিয়ে কিছু বলেননি। কিন্তু সাবির্য়ার বিপক্ষে নেইমার-কুতিনহোরা সৌরভ ছড়ানোর পর ব্রাজিল কোচ মুখ খুলেছেন, ‘আমরা প্রত্যাশাকে স্বাভাবিকভাবেই নিই। তবে এই দলটা সবার প্রত্যাশাকে অনেক উঁচুতে স্থাপন করেছে। কারণ, বাছাইপবর্ ও প্রীতি ম্যাচে তারা খুব ভালো করেছে।’

তিতের সেই ‘উঁচু’ জায়গাটা যে বিশ্বকাপ ট্রফি তুলে ধরার মঞ্চ, তা না বললেও চলে। তবে শেষ ষোলোয় ওঠার পর মাটিতেই পা রাখছেন ব্রাজিলের এই কোচ, ‘আমরা প্রত্যাশা নয়, বাস্তবতাকে প্রাধান্য দিই। এই টুনাের্মন্টে দলটা মানসিকভাবে ধীরে ধীরে পরিণত হয়ে উঠছে। চাপ নিয়ে কীভাবে ভালো খেলতে হয়, সেটি তারা জানে। তবে বিকল্প পথও থাকতে হবে। যেমন ধরুন, মাসেের্লা চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ল। এজন্য আপনার শক্তিশালী স্কোয়াড থাকতে হবে। এ ছাড়া আমার এমন একটা দল প্রয়োজন যারা চাপটা মানসিকভাবে সামাল দিতে পারে, যে দলটি ভারসাম্যপূণর্ এবং গুরুত্বপূণর্ মুহূতের্র জন্য যে দলে বিকল্প খেলোয়াড় আছে। যদি আমাদের ছেলেরা যথাযথভাবে প্রস্তুত না হতো, তাহলে তারা এভাবে পারফমর্ করতে পারত না।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে