শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিশ্রæতি পূরণে ব্যথর্ আমরা: ন্যয়ার

আমরা বাদ পড়ার মতো দলই ছিলাম। আমরা কোনো ম্যাচেই নিজেদের প্রমাণ করতে পারিনি। আমি যে জামাির্নকে চিনি-জানি এটা তেমন ছিল না।
ক্রীড়া ডেস্ক
  ২৯ জুন ২০১৮, ০০:০০

বিশ্বকাপের ফাইনাল হারলেও বোধহয় এতটা কষ্ট পেতেন না জামার্ন ফুটবলাররা, যতটা এখন পাচ্ছেন তারা। নিজেদের ইতিহাসে আগে কখনো গ্রæপ পবর্ থেকে বাদ পড়েনি দলটি। কিন্তু এবার রাশিয়া এসে বরণ করে নিতে হলো সেই লজ্জা। সেটাও ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে! সত্যিই মেনে নেয়া কষ্টকর। তবে গোলরক্ষক ম্যানুয়েল ন্যয়ার জানিয়েছেন, এমন ভাগ্য বরণ করতে হতো না তাদেরকে, যদি নিজেদের দেয়া প্রতিশ্রæতি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারতেন দলের ফুটবলাররা।

আসর শুরু হওয়ার আগে জামাির্নর কোচ জোয়াকিম লো বলেছিলেন, ‘ইতিহাস গড়তে রাশিয়ায় যাচ্ছি আমরা।’ কিন্তু চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অভিশাপটা আর খÐাতে পারল না জোয়াকিম লো বাহিনী। ফ্রান্স, ইতালি আর স্পেনের পর গ্রæপ পবর্ থেকে বাদ পড়ে তারাও। তাতে ইতালি আর ব্রাজিলের পর তৃতীয় দল হিসেবে টানা দুটি বিশ্বকাপ জয়ের জামানর্ স্বপ্ন পরিণত হলো দুঃস্বপ্নে।

শুরুটাই হয়েছিল মেক্সিকোর কাছে হারে। পরের ম্যাচে সুইডেনের বিপক্ষে দারুণ জয়ে আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে রেখেছিল জামাির্ন। কিন্তু জ্বালানির অভাবে শেষতক নিভেই গেল সেটা। প্রয়োজনীয় ওই জ্বালানি সরবরাহ করতে খেলোয়াড়রা ব্যথর্ হয়েছেন। অপেক্ষাকৃত সহজ প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে পুরো ৯০ মিনিট খেলেও কোনো গোল এনে দিতে পারেনি কেউ। মুলার-রেউসরা হয়ে উঠতে পারেননি মেসি-রোহো। মাত্র একদিন আগে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে আজেির্ন্টনাকে জিতিয়েছেন এ দুজন। ওই জয় বাদ পড়ার শঙ্কায় থাকা আলবিসেলেস্তেদের পৌঁছে দিয়েছে শেষ ষোলোতে।

গ্রæপ পবের্র তিনটি ম্যাচেই কিসের যেন অভাব ছিল জামাির্নর। তাদের খেলার ধরন মনে হচ্ছিল অচেনা। অচেনা লেগেছে ন্যয়ারের কাছেও। গোলমুখের অতন্দ্র প্রহরী বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার পর অনেকটা আক্ষেপ নিয়েই বলেছেন, ‘আমরা বাদ পড়ার মতো দলই ছিলাম। আমরা কোনো ম্যাচেই নিজেদের প্রমাণ করতে পারিনি। আমি যে জামাির্নকে চিনি-জানি এটা তেমন ছিল না।’

বিশ্বকাপ শুরুর আগ মুহূতের্ ফুটবলের সবোর্চ্চ সংস্থা ফিফার প্রকাশিত র‌্যাংকিংয়ে শীষর্ দল ছিল জামাির্ন। তারাই কিনা ছিটকে গেলে সবার আগে! চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ব্যথর্তার জন্য দলের খেলোয়াড়দেরকেই দায়ী করছেন ন্যয়ার। এমনকি, এ দল নিয়ে বেশিদূর এগোনো সম্ভব হতো না বলেও মনে করছেন বায়ানর্ মিউনিখ তারকা, ‘আমাদের নিবেদনের অভাব ছিল। শেষ ষোলো কিংবা তার পরের রাউন্ডে গেলেও আমরা ঠিকই বাদ পড়তাম।’

আর নিজের বিষয়ে কী বলবেন ন্যয়ার? অতিরিক্ত সময়ে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়া জামাির্নকে সাহায্য করতে পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার গোলমুখে। তার সিদ্ধান্ত বয়ে এনেছে উল্টো ফল। ফঁাকা পোস্টে বল জড়িয়ে কোরিয়ার ঐতিহাসিক জয়টাকে আরও রাঙিয়ে তোলেন হিউং-মিন সন।

স্যোশাল মিডিয়াতে ন্যয়ারকে নিয়ে হাস্যরসে মেতেছেন অনেকে। ব্রিটিশ গণমাধ্যমসহ ইউরোপের অনেক গণমাধ্যমের তার গোলমুখ ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে নেতিবাচক হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। কিন্তু, একটু গভীরভাবে ভাবলে, অন্তদৃির্ষ্টতে ধরা দেয় অন্য কিছু। দলের প্রতি তার নিবেদনটাই বরং প্রকাশ পায়। আর ন্যয়ারের ওই ভুলটা মাজর্নীয়। কারণ, হিউং-মিন সনের গোলের পরপরই শেষ বঁাশি বাজিয়ে দিয়েছিলেন রেফারি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে