আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের বয়স প্রায় ছয় বছর। অথচ তাইজুল ইসলাম আটকে আছেন 'টেস্ট বিশেষজ্ঞ' তকমায়। এখনো থিতু হতে পারেননি ওয়ানডে ও টি২০ ক্রিকেটে। তবে দমে না গিয়ে আগামীতে সব সংস্করণে নিয়মিতভাবে খেলার লক্ষ্য স্থির করেছেন তিনি। সেজন্য বোলিং অ্যাকশনে পরিবর্তন এনেছেন বাংলাদেশের এই বাঁহাতি স্পিনার। পাশাপাশি আয়ত্ত করছেন নতুন ধরনের ডেলিভারিও।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) তত্ত্বাবধানে ক্রিকেটারদের দ্বিতীয় ধাপের একক অনুশীলন চলছে দেশজুড়ে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে স্বাস্থ্যবিধি ও নির্দিষ্ট সময়সূচি মেনে অনুশীলন করছেন তাইজুল। ২৮ বছর বয়সি তাইজুল এখন পর্যন্ত টেস্ট খেলেছেন ২৯টি। কিন্তু সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তেমন সুযোগ মেলে না তার। অর্ধযুগে সম্বল নয়টি ওয়ানডে আর দুইটি টি২০। এই পরিস্থিতির পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষায় বোলিং অ্যাকশন পাল্টে ফেলেছেন তিনি। তবে নতুন কী ধরনের ডেলিভারি নিয়ে কাজ করছেন সে বিষয়ে মুখ খোলেননি।
অনুশীলন শেষে তাইজুল বললেন, 'সব সংস্করণে খেলতে চাই বলেই নিজেকে বদলে ফেলার চেষ্টা করছি। বোলিংয়ে কিছু পরিবর্তন এনেছি। পাশাপাশি আমি নির্দিষ্ট একটি ডেলিভারি রপ্ত করার চেষ্টা করছি। আশা করি, খুব বেশি সময় লাগবে না। তবে এই মুহূর্তে বিষয়টি গোপনই থাকুক। যখন পুরোপুরি রপ্ত করতে পারব, তখন জানাব ডেলিভারিটি আসলে কী।'
তার এই নতুন কিছু করার প্রয়াসে স্পিন বোলিং কোচ ড্যানিয়েল ভেট্টরির সায়ও মিলেছে, 'আসলে নিজেই চেষ্টা করছিলাম, বোলিং অ্যাকশন পরিবর্তন এনে কিছু করা যায় কি না। দেখলাম, বল ভালোই হচ্ছে। এরপর কোচের (ভেট্টোরি) সঙ্গে বোলিং অ্যাকশনের ভিডিও নিয়ে আলাপ হয়। উনি ইতিবাচক মন্তব্য করার কারণেই এটি নিয়ে কাজ করছি।'
বাংলাদেশে খেলা হলে সাধারণত বানানো হয়ে থাকে স্পিন সহায়ক উইকেট। তাতে তাইজুলের কাজটা হয়ে যায় সহজ। কিন্তু বিদেশের মাটিতে ভিন্ন কন্ডিশনে খেলতে গেলেই পড়তে হয় বিপাকে। বোলিং ভান্ডারে পর্যাপ্ত অস্ত্র থাকার প্রয়োজনীয়তা টের পাওয়া যায় হাড়ে হাড়ে। দেশের বাইরেও সাফল্য পেতে মুখিয়ে থাকা তাইজুলের ভাবনার জগতে নাড়া দিয়েছে এই কঠিন বাস্তবতা।
তিনি বলেন, 'আমাদের মূলত সব কন্ডিশনেই খেলতে হয়। দেশের কন্ডিশন এক রকম থাকলেও বাইরের কন্ডিশন থাকে আলাদা। বোলিং অ্যাকশন পরিবর্তনের কারণে বলে প্রচুর ভেরিয়েশন পাচ্ছি। আর ভেরিয়েশন থাকলে সব কন্ডিশনেই ভালো করা সম্ভব। সবকিছু মিলিয়েই আসলে সিদ্ধান্ত নেওয়া। সত্যি কথা বলতে সব সংস্করণে, সব কন্ডিশনে যেন সাফল্য পাই, এই ভাবনাগুলো কাজ করেছে।'
নতুন অ্যাকশনে বোলিংয়ের কারণে বৈচিত্র্য বেড়েছে তার বোলিংয়ে। তার বিশ্বাস নতুন বৈচিত্র্যে সব কন্ডিশনে ভালো করা যাবে। পাশাপাশি বোলিংয়ে আরও অপশনও বাড়ছে তার। তাইজুল বলেন, 'টেস্ট খেলা এমনিতেই কঠিন। আপনার বোলিংয়ে সেই বৈচিত্র্য না থাকলে আপনি ভালো করতে পারবেন না। এজন্য নিজের বোলিং অ্যাকশন পরিবর্তন করে খানিকটা বৈচিত্র্য বাড়িয়েছি। এখন স্বস্তি পাচ্ছি।'