বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

গাঁজা পোড়ানোর ধোঁয়ায় অস্বস্তি আদালতপাড়ায়

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০
আদালতের বাইরে পোড়ানো হচ্ছে গাঁজা -যাযাদি

কর্মদিবসগুলোতে সরগরম থাকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতপাড়া। বাদী, বিবাদী, পুলিশ, আইনজীবীসহ লোকজনের ভিড়ের কারণে অনেক সময় পা ফেলাই মুশকিল হয়ে দাঁড়ায় আদালত চত্বর ও আশপাশের এলাকায়। এর মধ্যেই আবার সিএমএম আদালতের হাজতখানার বাইরে পোড়ানো হয় গাঁজা। মাদক পোড়ানোর ধোঁয়ায় অস্বাস্থ্যকর ও অস্বস্তিকর পরিবেশের সৃষ্টি হচ্ছে ঢাকার আদালতপাড়া ও এর আশপাশ এলাকায়। সেজন্য গাঁজা ধ্বংসে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী, পুলিশসহ সংশ্লিষ্টরা।

পুলিশ ও আদালত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা মহানগর এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে প্রতিদিন গাঁজাসহ বিপুল পরিমাণ মাদক জব্দ করে। কিছু নমুনা রেখে বাকি মাদক একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ঢাকা সিএমএম আদালতের হাজতখানার বাইরে ধ্বংস করা হয়। প্রতি সপ্তাহের রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার দুপুরের পর গাঁজা পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে এ কার্যক্রম। তখন সিএমএম আদালতের আশপাশ ধোঁয়ায় অন্ধকার হয়ে যায়। এ সময় অনেককে নাকে-মুখে হাত দিয়ে ওই এলাকা ছাড়তে দেখা যায়। অনেকের শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। আবার অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

এখানে এভাবে গাঁজা পোড়ানোর কারণ হিসেবে পর্যাপ্ত জায়গার অভাব ও ইনসিনারেটর (মাদক ধ্বংস করার মেশিন) না থাকার কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে গাঁজার ধোঁয়ার কারণে বিচারক, আইনজীবী, বিচারপ্রার্থীসহ সবার চলাফেরায় ভোগান্তির কথাও স্বীকার করেন তারা।

এ বিষয়ে আদালতে খিলগাঁও থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইউসুফ হোসেন বলেন, আদালত চত্বরে যখন গাঁজা পোড়ানো হয়, তখন এ এলাকায় থাকা কষ্টকর হয়ে পড়ে। আদালত কর্তৃপক্ষ যেন দ্রম্নত এর বিকল্প ব্যবস্থা নেন।

এ বিষয়ে আইনজীবী খাদেমুল ইসলাম বলেন, সপ্তাহে তিন দিন দুপুরের দিকে ঢাকার সিএমএম আদালত চত্বরে গাঁজা পোড়ানো হয়। তখন ধোঁয়ায় পুরো এলাকা অন্ধকার হয়ে যায়। সে কারণে ওই এলাকায় চলাফেরা করা আমাদের জন্য কষ্টকর হয়। কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি, এর যেন একটা বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়।

আরেক আইনজীবী খালেদ হোসেন বলেন, গাঁজার ধোঁয়ায় সিএমএম এলাকায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। ধোঁয়ায় অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রম্নত এর বিকল্প ব্যবস্থা করা উচিত।

সাংবাদিক তোফায়েল হোসেনও একই অভিমত দেন। তারও দাবি, আদালত কর্তৃপক্ষের উচিত, এভাবে গাঁজা পোড়ানোর বিষয়ে একটা সমাধান করা।

বিচারপ্রার্থী মজিবুর রহমান বলেন, মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে আসতে হয়। কিন্তু অনেক সময় গাঁজা পোড়ানোর ধোঁয়ায় এ এলাকায় চলাচল করা কষ্ট হয়ে যায়।

আরেক বিচারপ্রার্থী জমিলা আক্তার বলেন, একটি মামলার হাজিরা দিতে আদালতে এসেছি। কিন্তু এখানে এসে দেখি সিএমএম আদালতের হাজতখানার সামনে থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। আমি গাঁজা পোড়ানোর ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েছি। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আদালত চত্বর এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা কঠিন।

প্রয়োজন ইনসিনারেটর : গাঁজা পোড়ানোর ধোঁয়া থেকে পরিত্রাণের উপায় জানতে চাইলে ঢাকার ভারপ্রাপ্ত মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) কায়সারুল ইসলাম বলেন, আদালত চত্বরে মাদক ধ্বংস করার মতো পর্যাপ্ত জায়গা নেই। এছাড়া আমরা সরকারের কাছে ইনসিনারেটর মেশিনের জন্য আবেদন করেছি, তা প্রক্রিয়াধীন। ইনসিনারেটরের মাধ্যমে গাঁজা পোড়ালে এর ধোঁয়া অনেক উপরে উঠে যায়। তখন মানুষের আর কষ্ট হবে না।

ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান খান রুচি বলেন, আদালত চত্বর এলাকায় মাদক ধ্বংস করার মতো পর্যাপ্ত জায়গা নেই। এর বিকল্প ইনসিনারেটর মেশিন বসালে মানুষ এ ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাবে। আমরা ঢাকা বারের পক্ষ থেকে এ বিষয় সরকারের শুভদৃষ্টি কামনা করছি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<88999 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1