শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

'বিসিক পস্নাস্টিক শিল্প নগরী'র প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দ্বিগুণ

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০
পস্নাস্টিকের বর্জ্য

রাজধানীতে মানুষের বাসাবাড়ির আশপাশ থেকে পস্নাস্টিক শিল্প কারখানাগুলো একটি সুবিধাজনক পরিবেশবান্ধব স্থানে সরিয়ে নেওয়া, গুণগত মানসম্পন্ন পস্নাস্টিকসামগ্রী উৎপাদনে সহায়তা দেওয়া, কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন, অর্থনৈতিক উন্নতি ত্বরান্বিত করা এবং জিডিপিতে অবদান বাড়াতে দেশে গড়ে উঠছে বিসিক পস্নাস্টিক শিল্প নগরী। তবে ২০১৫ সালে নেওয়া মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। শুরুতে প্রস্তাবিত প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ঠিক করা হয়েছিল ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় দুই বছর বাড়িয়ে ২০২১ সালের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ হবে বলে সংশোধনী প্রস্তাবে উলেস্নখ করা হয়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়নে পুরান ঢাকায় অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা পস্নাস্টিক শিল্প কারখানাগুলো পাশের জেলা মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিঘানে স্থানান্তরিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) উদ্যোগে এটি স্থাপিত হচ্ছে। সময় এবং ব্যয় বাড়িয়ে ১১ ফেব্রম্নয়ারি 'বিসিক পস্নাস্টিক শিল্পনগরী (১ম সংশোধিত)' শীর্ষক প্রকল্পটির সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, 'বিসিক পস্নাস্টিক শিল্পনগরী' সিরাজদিখানে ধলেশ্বরী সেতুর পশ্চিম পাশে বড়বর্ত্তা মৌজায় ৫০ একর জমির ওপর গড়ে উঠছে। শুরুতে এজন্য ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ২১০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। নতুন প্রস্তাবনায় আরও ১৮৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকা বৃদ্ধি করে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। যার পুরোটাই সরকারি নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়ার কথা বলা হয়। এই গড়ে ওঠা পস্নাস্টিক শিল্পনগরীতে ৩৪৮টি শিল্প ইউনিট স্থাপন করা যাবে। এতে প্রায় ১৭ হাজার ৪০০ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এই উদ্যোগ দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশে পরিবেশবান্ধব পস্নাস্টিক শিল্প গড়ে তোলার অভিযাত্রাকে বেগবান করবে।

কিন্তু বেশ কিছু কারণে প্রস্তাবিত প্রকল্পটিতে সংশোধনী আনা হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান কারণ, জমির দাম বেড়ে যাওয়া। জমি অধিগ্রহণের জন্য বর্ধিত মূল্যের অর্থ সংস্থান করতেই প্রকল্পটির ব্যয় বাড়িয়ে প্রকল্পে সংশোধনী আনা হয়। এছাড়া গণপূর্ত বিভাগের রেট শিডিউল-২০১৮ অনুযায়ী পূর্ত কাজের ব্যয় প্রাক্কলন করা, অত্যাবশ্যকীয় নতুন অঙ্গ (সুপারভিশন কনসালটেন্সি ব্যয়, প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নববর্ষ ভাতা, বিমা চার্জ, আউটসোর্সিং সেবা ব্যয়) যুক্ত করা এবং প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো; এসব কারণে প্রকল্পটিতে সংশোধনী আনা জরুরি হয়ে পড়েছিল।

পরিকল্পনা কমিশনে জমা দেওয়া প্রকল্প প্রস্তাবনায় জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে ৫০ একর। ৯ লাখ ২৫ হাজার ১০৩ ঘনমিটার জমির উন্নয়ন করা হয়েছে। অফিস ভবন নির্মাণ করা হবে ৬ তলা ভিত্তির দুটি ফ্লোরে। শিল্পনগরীর সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হবে ১ হাজার ৮৬৬ মিটার। এছাড়া মেইন গেট ও অন্য গেটগুলোর নিরাপত্তা দেওয়াল, পাম্প ড্রাইভার কোয়ার্টার নির্মাণ, পানির পাইপ লাইন, রাস্তা, ড্রেন, কালভার্ট/বক্স কালভার্ট, বিদু্যৎ লাইন ও ট্রান্সফরমার, সোলার প্যানেল, ডাম্পিং ইয়ার্ডসহ যাবতীয় কাজ করা হবে।

পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে- প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রস্তাবিত শিল্পনগরীতে ৩৬০টি আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন শিল্প পস্নট স্থাপিত হবে, যার মধ্যে ১০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তার জন্য সংরক্ষণ করা হবে। ৩৬০টি শিল্প পস্নটে কমবেশি ২৫০টি পস্নাস্টিক শিল্প ইউনিট স্থাপিত হবে এবং এই শিল্প ইউনিটগুলো দারিদ্র্য হ্রাসে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন জানিয়েছেন, 'পস্নাস্টিক শিল্প একটি বিকাশমান খাত। কাঠের বিকল্প হিসেবে পস্নাস্টিক পণ্যের ব্যবহার দেশে-বিদেশে ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে। বাংলাদেশেও মানসম্মত পস্নাস্টিক পণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এ কারণেই এই খাতের শিল্প বিকাশে সরকার প্রকল্পটি বাস্তবায়নে গুরুত্ব দিয়েছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<88992 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1