শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদ ভবনের রাস্তায় প্রাণের স্পন্দন

নতুনধারা
  ০২ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ০২ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০৬
শুক্রবার সংসদ ভবনের সামনের রাস্তায় খেলাধুলা করছে শিশুরা -যাযাদি

যাযাদি রিপোর্ট জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের রাস্তা মানিক মিয়া এভিনিউ। যানবাহনের কারণে এ রাস্তার যেন ফিরে তাকানো সময় নেই। সেই রাস্তায় মাসের প্রথম শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টার চিত্র থাকে পুরোই উল্টো। গাড়ি আর ধোঁয়ার পরিবর্তে সেখানে মিলে প্রাণের স্পন্দন। এ ৩ ঘণ্টা শিশুদের চিৎকার-চেঁচামেচি, খেলাধুলা, সব বয়সীদের ব্যায়াম, প্রতিবন্ধীদের আনাগোনায় মুখর হয়ে ওঠছে। নভেম্বর মাসের প্রথম শুক্রবারে এমন চিত্রের দেখা মিলেছে। সংসদ ভবনের আশপাশের এলাকার শিশু, প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধদের নিয়ে সকাল ৮টায় এসে হাজির কয়েকশ' মানুষ। এ সময় শিশু, বয়োজ্যেষ্ঠ, শারীরিক প্রতিবন্ধীসহ সবাই আড্ডা, বই পড়া, স্কেটিং, সাইক্লিং, ঘুড়ি ওড়ানো, ছবি আঁকা, ব্যায়াম, মেডিটেশন, ইয়োগা, প্রাণায়াম, স্থাপত্য প্রদর্শনীসহ নানা আয়োজনে মেতে ওঠে। 'মুক্ত হোক শৈশব' প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ঢাকা পরিবহণ সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) উদ্যোগে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতায় প্রতি মাসের প্রথম শুক্রবার এ আয়োজন করা হচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এটা শুরু হয়েছে। শিশুদের মানসিক বিকাশ ও খেলাধুলার সুযোগ করে দেয়া, প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধদের জন্যও খোলা জায়গা-হাঁটাচলার ব্যবস্থা করতেই এ আয়োজন। আয়োজনে অংশ নেয়া সবাই সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগতম এবং এটি অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে। জোহান নামে প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিশু বলে, 'সকাল ৮টায় এসেছি। আসার পর ব্যাডমিনটন, ফুটবল, সিসো, স্কিপার খেলেছি। অনেক ভালো লাগছে।' ৭ মাস বয়সী নাবিলাকে নিয়ে পূর্ব রাজাবাজার থেকে এসেছেন সায়মা আলম দিশা। তিনি বলেন, 'এ সম্পর্কে প্রথমে আমার বোনের কাছে জানতে পারি। পরে ফেসবুক থেকে বিস্তারিত জানি। এর আগে আমার সাত বছর বয়সী সন্তান তার খালামণির সঙ্গে এসেছিল। আজ আমি আসলাম সাত বছর বয়সী বাবুকে নিয়ে।' দিশা আরও বলেন, 'বাচ্চাদের খেলার মতো জায়গা নেই। এ সুযোগটা হওয়ায় মাসে অন্তত একদিন বাচ্চাদের খেলাধুলা, ছোটাছুটির সুযোগ তৈরি হলো। এটা অব্যাহত থাকুক, এটাই চাই।' আয়োজকদের একজন মেহেদী হাসান মিলন বলেন, শহরের বাচ্চারা খেলাধুলার জায়গা পায় না। উন্মুক্ত জায়গা না পাওয়া এবং খেলাধুলা না করতে পারায় শিশুদের মানসিক বিকাশ ঠিকমতো ঘটে না। সেই সুযোগ কিছুটা হলেও তৈরি করে দিতে সংসদ ভবনের রাস্তায় এ আয়োজন করা হচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ আয়োজন চলছে। প্রতি মাসের প্রথম শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত এই রাস্তা যান চলাচলমুক্ত রাখা হয়। এ সময়ে শিশু, বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধীদের মানসিক বিকাশে খেলাধুলাসহ নানা আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান আয়োজনে রয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, সড়ক পরিবহণ কর্পোরেশন, বিআরটিএ, ঢাকা ওয়াসা, পরিবেশ অধিদফতর, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, ইউএনডিপি, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), নিরাপদ সড়ক চাই, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পস্ন্যানার্স (বিআইপি), বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউআরপি বিভাগ, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, এআরআই বিভাগ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইউ), পিউপলস ইউনিভার্সিটি, রায়েরবাজার উচ্চ বিদ্যালয়, আলী হোসেন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ধানমন্ডি কচিকণ্ঠ হাইস্কুলসহ সরকারি আরও অনেক প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল, আলিফ আইডিয়াল পাবলিক স্কুল, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিইং, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম (নাসফ), এইড ফাউন্ডেশন, গ্রিন সেভার্স, দেয়াল কোঠা, বাংলাদেশ ঘুড়ি ফেডারেশন, সাইকেলারস অফ বাংলাদেশ, ইকো সোসাইটি, পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চ, নিঃস্বার্থ মানব সেবা (নিমসেবা) ফাউন্ডেশন, স্কেটিং ৭১, বিসিএইচআরডি, প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠন, উন্নয়ন ধারা ট্রাস্ট, এইচডিডিএফ, মাস্তুল ফাউন্ডেশন, প্রভাতী সমাজ উন্নয়ন সংস্থা, সিডিপি, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদ, ডাবিস্নউজিবি এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাবিস্নউবিবি) ট্রাস্ট।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে