শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন

শুরু যখন করেছি শেষটা দেখে নেব: কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, সামনে আর কার কার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে, প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরায় এখন তা আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে।
যাযাদি রিপোর্ট
  ০২ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০
ওবায়দুল কাদের

'দুর্নীতি-অনিয়মের' বিরুদ্ধে অভিযান যখন শুরু হয়েছে, এর শেষটাও দেখে নেয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, সামনে আর কার কার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে, প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরায় এখন তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। তিনি বলেন, "প্রধানমন্ত্রী ভোরবেলা দেশে ফিরেছেন, কুশল বিনিময় ছাড়া কোনো কথাবার্তা হয়নি। পার্টির সঙ্গে ও মন্ত্রিপরিষদের সঙ্গে যখন আলাপ-আলোচনা হবে, তখন (অভিযানের) ফরমেট নিয়ে, অ্যাকশন প্রোগ্রাম নিয়ে তিনি যদি কিছু বলেন, তখন আপনারা জানবেনই।" চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে এক দলীয় সভায় ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতাকে চাঁদাবাজির অভিযোগে সরিয়ে দেয়ার পাশাপাশি যুবলীগ নেতাদের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ঢাকায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের তত্ত্বাবধানে ক্যাসিনো চালানোর খবর সংবাদ মাধ্যমে এলে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবে ও বারে অভিযান শুরু করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এসব অভিযানে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের কয়েকজন নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। কয়েকজনের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে, বিদেশযাত্রায়ও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। অভিযানের সম্ভাব্য তালিকায় কতজন রয়েছে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, "তালিকার বিষয় নেই। সারা বাংলাদেশে যারা এ ধরনের অপরাধ অপকর্ম করবে, প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এটা তো একটা অভিযান চলছে, প্রতিদিনই কেউ না কেউ গ্রেপ্তার হচ্ছে, অনেকে নজরদারিতে রয়েছে। "তালিকার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলতে পারবে। তবে সারাদেশে এসব অপকর্মের সাথে যারা জড়িত তারা গোয়েন্দা নজরদারিতে আছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেও খোঁজ-খবর নিচ্ছেন, তিনি এখন দেশে ফিরেছেন, এ অভিযান চলবে সে আভাস তিনি দিয়েছেন। এখন কার কার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন, তদন্তে চিহ্নিত দোষী ব্যক্তিদের ব্যবস্থার বিষয়ে যখন পদক্ষেপ নেবেন তখন বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে।" আওয়ামী লীগ গত ১১ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকলেও হঠাৎ কেন অভিযানের প্রয়োজন পড়ল, এতদিন সরকার নমনীয় ছিল কিনা- এমন প্রশ্নও সাংবাদিকরা ওবায়দুল কাদেরকে করেন। জবাবে তিনি বলেন, "আমরা নজরদারিতে রেখেছি, লক্ষ্য করেছি, আমরা আরও সময় নিতে চেয়েছি। একটি অভিযোগ বাস্তবে তথ্য প্রমাণসহ যদি স্পষ্ট না হয়, তাহলে কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায় না। প্রশংসা করার লোকজনের অভাব রয়েছে, কিন্তু সরকারি দল অভিযান পরিচালনা করছে। আমরা যখন শুরু করেছি, শেষটা দেখে নেব।" কেবল আওয়ামী লীগের দুর্নীতি নয়, অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা দুর্নীতি করে কতটা সম্পদের মালিক হয়েছে- সেটাও দেখার কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, "সরকারি দল নিজেদের ঘর থেকে শুরু করেছে, যেটা অতীতে কখনো হয়নি। বিএনপি আমলে একজনকেও শাস্তি পেতে হয়নি। অতীতে কেউ ক্ষমতায় থেকে শুদ্ধি অভিযান করেনি, যেটা শেখ হাসিনা করছেন।" ঢাকার ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনার সঙ্গে যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের নাম এলেও তাকে ছাড় দেয়া হচ্ছে কিনা- সেই প্রশ্ন করেন একজন সাংবাদিক। ওবায়দুল কাদের বলেন, "কাউকে ছাড় দেব- এমন কোনো কথা তো আমরা বলিনি। যাকে আপনি গ্রেপ্তার করবেন, সেটা তদন্ত করে উপযুক্ত প্রমাণ নিয়ে গ্রেপ্তার করার মতো অবস্থা হলে অবশ্যই গ্রেপ্তার করা হবে এবং বলা আছে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।" সরকারের সেতুমন্ত্রী বলেন, এখানে ব্যক্তি কোনো বিষয় নয়, অপরাধ বা অপকর্ম করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাহলে কি সম্রাটের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি- এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, "যিনি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিনি নিজেই বলেছেন, ওয়েট অ্যান্ড সি। কাজেই একটু ওয়েট করেন, এত তাড়াহুড়ো করছেন কেন?" ভারত রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেয়ার পর দেশের বাজারে পেঁয়াজের কেজি রাতারাতি অনেক বেড়ে যাওয়া নিয়েও ওবায়দুল কাদেরকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, "বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে অচিরেই দাম কমে যাবে। আমাদের দেশে একটা প্রবণতা আছে, একটা অজুহাত পেলেই লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বেড়ে যায়। যতটা বাড়ার কথা না ততটাই বাড়ে, এক শ্রেণির ব্যবসায়ী দামটা বাড়িয়ে দেয়। এখন ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছে, একে অবলম্বন করে এখানে দামটা যে পরিমাণ বাড়ার কথা না, তার চেয়ে বেশি বেড়ে গেছে কিনা তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খতিয়ে দেখবে।"

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে