বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারকে জিম্মি করে বিদু্যৎকেন্দ্র করাচ্ছে ভারত-চীন: টিআইবি

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:২৪
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত প্রতিবাদর্ যালিতে শিক্ষার্থী, পরিবেশ আন্দোলনকারী ও বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান -যাযাদি

ভারত ও চীন বাংলাদেশ সরকারকে জিম্মি করে কয়লাভিত্তিক বিদু্যৎকেন্দ্র স্থাপনে বাধ্য করছে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, 'সরকার ও কয়লাভিত্তিক বিদু্যৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে বিনিয়োগকারীদের কাছে দাবি জানাব, বৈশ্বিক কয়লাভিত্তিক গ্রম্নপদের চক্রান্ত থেকে সরে যেতে হবে। বিশেষ করে ভারত ও চীন। তারা নিজেদের দেশে কয়লাভিত্তিক বিদু্যৎ উৎপাদন থেকে সরে গিয়ে আমাদের দেশে এসে আগ্রাসীর সাথে কয়লাভিত্তিক বিদু্যৎকেন্দ্র বাস্তবায়নে সরকারকে জিম্মি করে দাবি আদায় করছে।' শুক্রবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত বৈশ্বিক জলবায়ু ধর্মঘট বা গেস্নাবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইকের সঙ্গে টিআইবির সংহতি প্রকাশ ও প্রতিবাদর্ যালিতে এ মন্তব্য করেন ড. ইফতেখারুজ্জামান। এই কার্যক্রমে কয়েক শত শিক্ষার্থী, পরিবেশ আন্দোলনকারী ও বিভিন্ন সংগঠনের লোকজন অংশ নেয়। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'আমরা বৈশ্বিক শত্রুর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আমাদের ঘরের শত্রু কিন্তু আরও বেশি বিভীষণ। কারণ ঘরের শত্রু এখন বাংলাদেশকে কয়লাভিত্তিক বিদু্যৎ প্রকল্পের বৈশ্বিক হারে রূপান্তর করছে।' সারা বিশ্বই যখন কয়লাভিত্তিক বিদু্যৎ প্রকল্প থেকে সরে আসার চেষ্টা করছে, সেখানে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে জাতীয় কৌশলের অংশ হিসেবে কয়লাভিত্তিক বিদু্যৎ প্রকল্প নির্ভর হয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, 'এখন পর্যন্ত যারা কার্বন নিঃসরণকারী জ্বালানিনির্ভর বিদু্যৎকেন্দ্র করছে, পরিকল্পনা গ্রহণ করছে; তাদেরকে এই আত্মঘাতী পথ থেকে সরে আসার আহ্বান জানাই। কয়লাভিত্তিক বিদু্যৎকেন্দ্রের মাধ্যমে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনে অবদান রাখছি। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর।' ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের সব কয়লাভিত্তিক বিদু্যৎ প্রকল্প বন্ধের আহ্বান জানান টিআইবির এই নির্বাহী পরিচালক। ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'কয়লাভিত্তিক বিদু্যৎ প্রকল্প থেকে সরে এসে সৌরবিদু্যৎ ও নবায়নযোগ্য বিদু্যতে বিনিয়োগ করবে। সরকার সেখানে সহায়ক ভূমিকা পালন করুক। সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা আসুক, আমরা সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শতভাগ কয়লাভিত্তিক বিদু্যৎ প্রকল্প বাতিল করব। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, যদি সরকারের অঙ্গীকার থাকে ২০৩০ সালের মধ্যেই সেটা অর্জন করা সম্ভব।' কয়লাভিত্তিক বিদু্যৎ প্রকল্পে বিনিয়োগকারীদের এই কর্মকান্ড থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'আমাদের বিকল্প রয়েছে। বিশেষ করে গৃহস্থালিতে সৌরবিদু্যৎ চালু করার ক্ষেত্রে ইতিবাচক দৃষ্টান্ত জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি স্থাপন করেছে। এটাকে আমরা কেন আরও বৃহত্তর পরিসরে নিতে পারব না, সেই বিষয়গুলো সরকারকে ভাবতে হবে।' টিআইবির তথ্য মতে, প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে ৫ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ কমানোর প্রতিশ্রম্নতি দিলেও বন ও সংরক্ষিত এলাকায় রামপাল, মাতারবাড়ি, পায়রা, ট্যাংরাগিরির মতো বড় কয়লাভিত্তিক বিদু্যৎ উৎপাদন প্রকল্প গ্রহণ করেছে, যা চুক্তির সাথে অসমাঞ্জস্যপূর্ণ। দেশে বর্তমানে মোট বিদু্যৎ উৎপাদনের মাত্র ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদন হচ্ছে। ২০২০ সালের মধ্যে মোট চাহিদার ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য খাত থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে