শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দিনে চালক, রাতে ভয়ঙ্কর ছিনতাইকারী

নতুনধারা
  ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০৪
র্যাবের হাতে আটক তিন ছিনতাইকারী -যাযর্াদিযাবের হাতে আটক তিন ছিনতাইকারী -যাযাদি

যাযাদি রিপোর্ট তিনজনই পরিবহন শ্রমিক। আব্দুল হক রনি ওরফে বাবু (১৯) বাস চালক ও সুজন ওরফে শাহজালাল (২১) কন্ডাক্টর আর আউয়াল হাওলাদার অটোরিকশা চালক। দিনে তারা গণপরিবহনের কাজ করলেও রাত গভীর হলেই হয়ে উঠেন ভয়ঙ্কর ছিনতাইকারী। সম্প্রতি গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে ছুরিকাঘাতে আরএফএল কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম (৩৫) হত্যার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য জানিয়েছের্ যাব। সোমবার দুপুরে এ উপলক্ষে রাজধানীর কারওয়ানবাজারের্ যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। র্ যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, গত ৭ সেপ্টেম্বর ভোরে সাড়ে ৪টার দিকে টঙ্গী পূর্ব থানাধীন কলেজ গেট এলাকায় কামরুল ইসলামকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। হত্যাকান্ডের ঘটনায় ছোট ভাই আবুল কালাম মতিউর রহমান (২২) বাদী হয়ে টঙ্গী পূর্ব থানায় অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলা নং-২৪। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত কামরুল ইসলাম নাটোর জেলার সদর থানাধীন শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত আবুল কাসেমের বড় ছেলে। তিনি আরএফএল কোম্পানির সিলেট জেলার জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সাপ্তাহিক ছুটি শেষে নাটোর থেকে ঢাকায় আরএফএল কোম্পানির প্রধান অফিসে অফিসিয়াল মিটিংয়ে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে গত ৬ সেপ্টেম্বর বাড়ি থেকে রওনা দেন। গত ৭ সেপ্টেম্বর রাত ৪টায় টঙ্গী পূর্ব থানাধীন দত্তপাড়ায় নামামাত্র ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন। ধারাল অস্ত্রের আঘাতে মারাত্মকভাবে জখম করে মোবাইলফোন, ল্যাপটপ ও নগদ ৩৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান কামরুল। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের পর গোয়েন্দা তথ্য ও তদন্তের ভিত্তিতে মূলহোতা বাবু, সহযোগী সুজন ও আউয়ালকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত সুইচ গিয়ার চাকু, হত্যার সময় ব্যবহৃত অটোরিকশা এবং ভিকটিমের মোবাইলফোন উদ্ধার করা হয়। র্ যাব-১ সিও বলেন, গ্রেফতাররা দিনে যাত্রী পরিবহনের সঙ্গে জড়িত থাকলেও রাতে তারা প্রত্যেকে পেশাদার ছিনতাইকারী। বাবু বাসের চালক, আউয়াল অটোরিকশা চালক ও সুজন বাসের কন্ডাক্টর। তারা সকাল ৬টা হতে রাত ১০টা পর্যন্ত কাজ করে। এরপর রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হয়ে উঠেন ভয়ংকর ছিনতাইকারী। তারা সাধারণত রাত ১টা হতে ভোর ৫টার মধ্যে টঙ্গীর বিভিন্ন নির্জন এলাকায় ওঁৎ পেতে থাকে এবং সুযোগ বুঝে সাধারণ পথচারীদের আক্রমণ করে সবর্স্ব ছিনিয়ে নেয়। গ্রেফতার বাবু পেশায় আব্দুলস্নাহপুর-বাড্ডা রুটের একটি পাবলিক বাসের ড্রাইভার। ৭ বছর ধরে এই পেশায় নিয়োজিত। ৫ বছর ধরে মাদকাসক্ত। তার বিরুদ্ধে টঙ্গী থানায় একাধিক ছিনতাই ও মাদক মামলা রয়েছে। সুজন পেশায় আব্দুলস্নাহপুর-বাড্ডা রুটে একই পাবলিক বাসের কন্ডাক্টর। কাজের সুবিধার জন্য বাবু ও সুজন অধিকাংশ সময় একই গাড়িতে কাজ করে থাকে। ৭ বছর ধরে এই পেশার পাশাপাশি ছিনতইকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত। তার বিরুদ্ধেও একাধিক ছিনতাই ও মাদক মামলা আছে। আউয়াল হাওলাদার পেশায় অটোরিকশা চালক। সুজনের মাধ্যমে ছিনতাইচক্রে যুক্ত হয়ে অটোরিকশা চালানো শুরু করেন। দিনের বেলা মাঝে মধ্যে দিনমজুরের কাজ করলেও রাত হলেই সে অটোরিকশা নিয়ে রাস্তায় নামে। মূলত ছিনতাইকাজে সহায়তার জন্যই অটোরিকশা চালায় আউয়াল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে