শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় জনসচেতনতা বাড়ানোর তাগিদ

নতুনধারা
  ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট

বাস্তুচু্যত ও অভিবাসী জনগোষ্ঠীকে রক্ষায় গ্রামীণ উন্নয়নে মানসম্পন্ন বিনিয়োগ নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। তারা বলেন, দেশের প্রতিটি গ্রামের মানুষের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা ও উন্নত জীবনযাত্রা নিশ্চিত করতে সরকারের যে প্রতিশ্রম্নতি রয়েছে, তা বাস্তবায়নে অবশ্যই মানসম্পন্ন বিনিয়োগ প্রয়োজন। এজন্য গ্রামীণ উন্নয়নে কী পরিমাণ অর্থ যাচ্ছে, তার বিশ্লেষণ দরকার। এ ছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় জনসচেতনতা বাড়ানোর তাগিদ দেয়া হয়েছে।

রোববার দুপুরে রাজধানীর দ্য ডেইলি স্টার সেন্টারে অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত 'বাংলাদেশ জলবায়ু বাজেট ২০১৯-২০ অর্থবছর:সুশীল সমাজ সংস্থার বিশ্লেষণ ও প্রতিফলন' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে একথা বলা হয়।

বক্তারা বলেন, গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ বিষয়ে বাজেট বাড়াতে হবে। বিভিন্ন খাতে কী পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন, তার সুষ্ঠু ব্যবহারও নিশ্চিত করতে হবে।

জলবায়ু বাজেট বিষয়ে আলোচনা করেন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পরিচালক ড. ছলিমুল হক। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে সচেতনতার দিক থেকে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। অনেক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, এটা প্রশংসনীয়। জলবায়ু পরিবর্তন বললেই হয় না, এটা বুঝতে অধ্যয়ন করতে হবে।

জলবায়ু পরিবর্তন খাতে আরও বিনিয়োগ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে এ জলবায়ু বিশেষজ্ঞ বলেন, পানির পরিবর্তন মানেই জলবায়ু পরিবর্তন। জলবায়ুর পরিবর্তন হলে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন কোনটি সবাইকে বুঝতে হবে। গরম বৃষ্টি বললেই জলবায়ু পরিবর্তন বোঝায় না। এটা গবেষকদের কাছ থেকে জানতে হবে। সবার দায়িত্ব রয়েছে এটা বোঝার। এ পর্যায় থেকে উত্তরণ করতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

ড. ছলিমুল হক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আগামী ২০ বছরের মধ্যে এক কোটি মানুষ ঢাকা শহরে চলে আসবে। এজন্য ২০৩০ সালের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধে কার্যকর যুগোপযোগী উদ্যোগ নিতে হবে।

এজন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও গবেষণা। এটা মোকাবিলায় সরকারি ও বেসরকারি খাতে মনিটরিং দক্ষতা বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, প্রতিবছরই বন্যা ও খরায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এতেই বোঝা যায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব। জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে 'ক্রিটিসাইজ' করতে হলে জেনে বুঝে করতে হবে। প্রয়োজনীয় গবেষণা ছাড়া মুখস্ত সমালোচনা করবেন না।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম সচিব খালেদ মাহমুদ বলেন, প্রতি বছরই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাজেটের পরিমাণ বাড়ছে। জলবায়ু গবেষণায়ও অর্থ বরাদ্দ বাড়ছে। টাকা কোথাও কম নয়। হয়তো শতাংশ হারে বাড়ছে না। কারণ, এখন অধিকাংশ মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে বরাদ্দ বেড়েছে। ফলে দেখা গেছে, শতাংশ হারে বাড়েনি।

তিনি বলেন, এ খাতে বিনিয়োগ না বাড়ালে অবকাঠামো উন্নয়ন টেকসই হবে না। ২০১৮ সালে ১১ হাজার বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। এভাবে জলবায়ুর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য অনেক উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে।

খালেদ মাহমুদ বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পে মনিটরিং জরুরি। টেকসই উন্নয়নে মনিটরিং বাড়াতে হবে। এছাড়া, বেসরকারি খাত থেকেও বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। সবাই মিলে এ দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হবে।

স্বাগত বক্তব্যে অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে যে বাজেট রাখা হয়, সেটা সঙ্কট উত্তরণে কতটুকু ভূমিকা রাখবে, তা নিয়ে ভাবা দরকার।

জবাবদিহিতা বাড়াতে একটি যৌথ মনিটরিং টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, এ টাস্কফোর্সে সরকারি কর্মকর্তা, নাগরিক সমাজ ও বেসরকারি খাত অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এতে এ খাতের উন্নয়ন টেকসই ও অর্থের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত হবে।

শুরুতে জলবায়ু বাজেটের ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লিড অব রিসাইলিয়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট জাস্টিস প্রোগ্রামের তানজির হোসাইন ও প্রোগ্রাম অফিসার সৈয়দা লামিয়া হোসাইন। আলোচনায় অংশ নেন অ্যাকশন এইডের হাসিন জাহানসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<66003 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1